সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের -বার্ষিক নির্বাচন


সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ :: নেতৃত্ব সংকটে দিন অতিবাহিত করছে সিলেটের বাস পরিবহনের হাজারো শ্রমিক। তাদের ভোটে নির্বাচিত নেতারা জয়ী হওয়ার পর ভূলে যান শ্রমিকদেরকে। রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান নেতারা। পরিবহন মালিক পক্ষের সাথে আতাত করে গাড়ি বাড়ি ও ব্যবসার পাহাড় তৈরী করেন তারা। একাধিক গাড়ি নিয়ে ঘুরেন শ্রমিক নেতারা। কথায় কথায় পরিবহন ধর্মঘট ডাকেন। তৈরী করেন নিজের একটি বাহিনী। তাদের খুশি করে, টাকা আর টাকা গুনেন তারা। পাত্তাই দেননা হাজারো শ্রমিকের কষ্ঠ। মালিকের স্বার্থ দেখে বিচার করেন শ্রমিকের। মনে করেন শ্রমিকের স্বার্থ দেখে লাভ নেই, নির্বাচন আসলে টাকা দিয়ে ভোট কিনে আবার জয়ী হবেন।

তাই দিন দিন দীর্ঘশ্বাস বাড়ছে পরিবহন শ্রমিকদের। কোনো শ্রমিক প্রতিবাদ করলে, কেড়ে নেন তাদের কার্ড। বেকায়দায় ফেলে দিনের পর দিন লাইন আউট করে রাখেন শ্রমিকদের। অথচ ভোট আসলে এই শ্রমিকদের পিঠ ভুলিয়ে খুশি করে, আবার ভোট নেওয়ার চেষ্টা করেন। ভোট আসলেই কদর বেড়ে যায় শ্রমিকের। অন্যবারের মতো জেলা সড়ক ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন আসন্ন।

আবার প্রার্থী হতে যাচ্ছেন, সেলিম আহমদ ফলিক। কিন্তু গত বার নির্বাচনে দাড়িয়ে বলেছিলেন আমাকে ভোট দিন, এবার আমার শেষ নির্বাচন। হাতে-পায়ে-মুখে ধরে ওয়াদা করেছিলেন শেষ বারের মতো নির্বাচনে দাড়িয়েছেন তিনি। তাকে যেন বিজয়ী করা হয়। শ্রমিকরা তার ওয়াদা মূল্যায়ন করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাকে নির্বাচিত করেছিল। বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে, খুব দ্রুত ভূলে যান শ্রমিকদের ফলিক। তার বির্তকিত কর্মকান্ডে লজ্জায় পড়েন সাধারন শ্রমিকরা। কথিত এক মালিকের স্বার্থ আদায় তার নিকট বড় হয়ে উঠে।

কারন এই পরিবহন নেতার বদৌলতে তিনি শ্রমিক নেতা থেকে ব্যবসায়ী হয়ে যান ফলিক। ইজারা নেন বাস টার্মিনালের। প্রায় ৯১ লাখ টাকায় কিভাবে নিলেন তার ইজারা। তাহলে কত টাকার মালিক তিনি ? যে শ্রমিকদের ভোটে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। সেই শ্রমিকরা অভাব অনটনে দিনপার করে কেন ? যদি তিনি শ্রমিক প্রিয় হতেন, তাহলে শ্রমিকদের পেঠ-পিঠ রক্ষার জন্য প্রকল্প হাতে নিতেন। তাদের ঐক্যবদ্ধ করে, তাদের টাকায় বাস টার্মিনাল ইজারা নিয়ে, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারতেন।

অথচ ২০১৩ ইং পূর্ব পর্যন্ত ফলিক এর ধন সম্পদ ছিল জিরো। এখন মাত্র হাতে গোনা কয়েক বছরে বিলাসি জীবন পার করছেন ফলিক। যেন তিনি এক ডন। শ্রমিকরা যেই সেই। মালিকের সাথে সর্ম্পক রাখবেন সাংগঠনিক প্রয়োজনে। মালিকের দালাল হয়ে মলিকের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার হবেননা। এটাই ছিল শ্রমিকদের প্রত্যাশা, কিন্তু শ্রমিক নেতা শ্রমিকদে প্রত্যাশা জ্বলাঞ্জলি দিয়ে সিএনজি শ্রমিক নেতার সাথে ভাগবাটোওয়ারা নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় শ্রমিকরা নেতার প্রতি ক্ষুব্ধ। শ্রমিক নেতা হয়ে মালিক সমিতির কমিঠিতে হস্তক্ষেপ করায় সাধারন শ্রমিকরা ভালোনজরে দেখছেনা।

তিনি শ্রমিকদের স্বার্থ না দেখে এক মালিকের স্বার্থ রক্ষায় বারবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহর সাথে লবিং করেন। তার মুখে শুধু কালাম ভাই কালাম ভাই। শ্রমিকরা যেন তার কেউ নয়। এখন সময়ের পালা। এই পালায় পরিবর্তন চায় শ্রমিকরা।

তাই শ্রমিকরা নতুন নেতৃত্ব চায়, যেই নেতা তাদের অধিকার রক্ষায় কথা বলবেন। শ্রমিকের স্বার্থে অনড় থাকবেন। তাই শ্রমিক শ্রমিকের জন্য নেতা বানাতে চায় তারা। মালিকের দালালদের প্রতিহত করে, পরাজিত করতে ঐক্যবদ্ধ এখন সকল শ্রমিক। তারা অবাক হয়ে জানতে চায়, এমন কোন মোহে আবার নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান সেলিম আহমদ ফলিক। তিনি কি আত্নসমালোচনা করে দেখেন না, তিনি তো শ্রমিকের পক্ষে কোন কাজ আজ অবধি করেননি। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন, সিএনজির অটোরিক্সা অবৈধ চলাচল বন্ধ না করলে, বাস-মিনিবাস-লাইটেস এর হাজার হাজার শ্রমিক অনাহারে অর্ধহারে মরে যাবে।

এখন তিনি ঘুরেন, ডানে বামে রাখেন সেই সিএনজির নেতাদের। তাহলে সিএনজি অটোরিক্সার বিরুদ্ধে কেন স্মারকলিপি শ্রমিকদের নাম ভাংগিয়ে দিলেন তিনি। বাজারে কথা রয়েছে সিএনজি অটোরিক্সার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে, সিএনজি শ্রমিক নেতাদের চাপে ফেলে মাসোহারা নেন তারা। এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছে সাধারন শ্রমিকরা। টার্মিনালে শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, তারা এমন সভাপতি বানাতে চায়, যিনি পরীক্ষিত ও শ্রমিক সংগঠনের জন্য ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন। সেকারনে নতুন নেতার খুজে হাজারো সাধারন শ্রমিক।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2DyWC8B

January 16, 2018 at 02:22PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top