দশ দিনে শেষ হল খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন


সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে মঙ্গলবার প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন বিএনপি নেতা মওদুদ।

তিনি বলেন, ‘আইনের অপব্যাবহার করে’ দুদকের দায়ের করা এ মামলা শুরুতেই খারিজ করে দেওয়া উচিত ছিল। তবে এরকম মামলার কারণে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা ‘বাড়বে’ এবং তিনিই ‘হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ‘নিঃশর্ত ও সম্মানজনক খালাস’ চান ব্যারিস্টার মওদুদ।

খালেদার পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে এ মামলার অপর আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন তাদের আইনজীবীরা। তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য বুধ ও বৃহস্পতিবারও সময় আছে।

যুক্তিতর্ক শুনানির প্রথম দিন ২০ ডিসেম্বর এ মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন। এরপর দশ কার্যদিবস খালেদার আইনজীবীদের যুক্তি উপস্থাপন চলে।

আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলেই দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নয় বছর আগে দুদকের দায়ের করা এ মামলা রায়ের পর্যায়ে আসবে।

বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের এই আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলারও বিচার চলছে। ওই মামলাও এখন আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার বকশিবাজারে বিশেষ জজ আদালতে হাজির হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার বকশিবাজারে বিশেষ জজ আদালতে হাজির হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার খালেদার পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে দুই মামলায় তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীর। বুধবার ও বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে আসতে পারবেন না বলেও তারা আদালতকে জানান। তবে আদালত তাদের সে আবেদন নাকচ করে দেয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় উচ্চ আদালতের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নজির হিসেবে উপস্থাপন করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সংশ্লিষ্ট ছিলেন- ১৯৬৪ সালের এমন একটি মামলার উদাহরণ টেনে বিএনপি নেতা মওদুদ বলেন, “সেই সিদ্ধান্তটি ছিল- বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। ওই মামলার ঘটনার মত এই মামলার কারণেও খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়বে এবং তিনিই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।”

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আদালতে দাবি করেন, “এই মামলার ঘটনার সঙ্গে আমাদের যদি কোনো অনিয়মও থাকে, তাহলেও এ মামলা হয় না, কারণ আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।”

এ মামলাকে ফখরুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন ‘অবৈধ সরকারের’ আমলের মামলা আখ্যায়িত করে খালেদার আইনজীবী বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অপব্যবহার করে এটি দায়ের করে।”

ফখরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপের বরাতে মওদদু বলেন, “আমি তখন জেলে ছিলাম। ক্ষমতা দখল করতে হলে কী করা যায়, সে বিষয়ে তারা কথা বলেছিল। প্রথমে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা তারা নিয়েছিল। পরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৩টি এবং আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে। এই মামলা তার একটি।”

তিনি বলেন, “এই মামলায় প্রাইমারি এভিডেন্সও নাই, সেকেন্ডারি এভিডেন্সও নাই। এটা একটি অবরুদ্ধ আদালত। এক-এগারোর সময়ে এ ধরনের আদালতে বিচার হত। এটা কোনো উন্মুক্ত আদালত না।”

এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় থেকেও বিভিন্ন অংশ আদালতে পড়ে শোনান বিএনপি নেতা মওদুদ।

তার বক্তব্যের পর ১০দিন ধরে চলা এই শুনানির জন্য বিচারক, আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান খালেদার আরেক আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2r7O0DC

January 16, 2018 at 05:38PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top