ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি- জিৎ। টালিউডের তারকা একজন বিখ্যাত অভিনেতা। সকাল ১১ টায় বুধবার ঢাকায় এসেছেন, তারপর উঠেছেন রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে। উদ্দেশ্য, তার অভিনীত ইনস্পেক্টর নটি কে ছবি বাংলাদেশে ২৬ জানুয়ারি মুক্তি পেতে যাচ্ছে; সেটির প্রচারণায় অংশ নেয়া। ইনস্পেক্টর নটি কে ছবিতে জিৎ শুধুই অভিনয় করেননি, তিনি এ ছবির প্রযোজকও। বুধবার সকালে ঢাকায় এসে হোটেল সোনারগাঁওয়ের লবিতে বসে জিৎ কথা বললেন প্রতিবেদক নাহিয়ান ইমন এর সঙ্গে বস এবার হতে যাচ্ছে ইনস্পেক্টর। বাড়তি চাপ কিংবা টেনশন হচ্ছে? চাপ, টেনশন ও উত্তেজনা সবকিছুই কাজ করছে, তবে কম। পুরো কাজটা এনজয় করেছি, অ্যাফোর্ড দিয়ে করেছি। আমি পরীক্ষা দিলাম দেখা যাক বাংলাদেশের দর্শকরা কেমন নম্বর দেন। সত্যি কথা বলতে, এবার খুব বেশি চাপ মনে হচ্ছে না। একটা কথা মনে পড়ে গেল, আমার বস ছবি আর শাহরুখ খানের চেন্নাই এক্সপ্রেস একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছিল একইসাথে। সেবার খুব টেনশনে ছিলাম। পশ্চিমবঙ্গে ১৯ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে ইনস্পেক্টর নটি কে। স্থানীয় আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, ছবিটি ভালো চলছে না। কি বলবেন? পশ্চিমবঙ্গের প্রায় দেড়শর বেশি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ইনস্পেক্টর নটি কে। একটা-দুইটা হলে ছবি খারাপ চলতেই পারে! হলের পরিবেশ খারাপ হওয়ায় দর্শকরা অনেকসময় মনোযোগ দিতে পারে না। তবে ওভারঅল ছবি ভালো চলছে। আর এদেশে দর্শকরা শুক্রবার থেকে ছবিটি দেখতে পাবেন, তারপর তারাই বিচার করবেন। নুসরাত ফারিয়ার সঙ্গে তৃতীয়বার কাজ করলেন, কেমন লেগেছে? ভেরি গুড। খুব প্রমিজিং এবং কমিটেড একটা মেয়ে ফারিয়া। ওর ক্যারিয়ার অল্পদিনের কাজ দেখে তা মনে হয়নি। খুব পরিশ্রম করতে পারে ফারিয়া। কাজের প্রতি তার যে সিনসিয়ারিটি ও কমিটমেন্ট, একদিন তাকে বড় শিল্পী করে তুলবে। আগের ছবির চেয়ে এবার ফারিয়া আরো ভালো করেছে। আগে যারা ফারিয়াকে দশের মধ্যে চার-পাঁচ দিয়েছে, এবার তারা ফারিয়াকে আট দেবে বলে আমি মনে করি। আপনার বেশিরভাগ ছবি অ্যাকশন কিংবা রোমান্টিকধর্মী। কিন্তু ইনস্পেক্টর নটি কের প্রমো দেখে মনে হলো পুরো কমেডি গল্পের ছবি এটি। হঠাৎ কমেডি কেন? অনেকদিন ধরে এমন একটা গল্প খুঁজছিলাম যেটা দিয়ে মানুষকে হাসানো যাবে। তারপর নটি কের গল্পকে বেঁছে নিলাম। আমি মনে করি মানুষ হাসানো ভীষণ কঠিন। আর সিনেমার ব্যবসায় ভেরিয়েশন থাকা প্রয়োজন। দর্শকদের নতুনত্ব দিতে হবে, তারা যে চাওয়া নিয়ে সিনেমা হলে আসে, হল থেকে বের হওয়ার সময় সেই চাওয়া পূরণ করতে হবে। সবদিক বিবেচনা করে কমেডি গল্পকে চুজ করা হয়েছে। সিনেমার গল্পে নয়, বাস্তব জীবনে আপনি কতটা নটি? একটা সময় প্রচুর দুষ্টুমি করেছি। কিন্তু এখন আর ওগুলো করিনা। বয়সের একটা ব্যাপার থাকে। আমার মেয়ে আমার সঙ্গে এখন দুষ্টুমি করে। ওর বয়স পাঁচ বছর, নার্সারিতে পড়ছে। তাছাড়া আমার স্ত্রী মাঝেমধ্যে বলে আমার মাথায় নাকি দুষ্টুমি বুদ্ধি ভরা। সেজন্য নায়ক না হয়ে আমি উকিল হলেই পারতাম! একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। এই তো কদিন আগে কলকাতার শীর্ষ স্থানীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্কটেশ ফিল্মস ২৫ টি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে কলকাতার প্রায় নায়কদের দেখা গেলেও, আপনাকে দেখা যায়নি কেন? আমাকে আমন্ত্রণ জানালে আমি যেতাম। আমাকে যেহেতু ডাকা হয়নি, তাই আমি এ নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। আর আমার জানাও নেই। কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে এতগুলো ছবি নির্মাণের উদ্যোগ ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুব ভালো। অল দ্য বেস্ট ফর দেম। শোনা যায়, কলকাতার গণমাধ্যম-মিডিয়া থেকে আপনি ছবি মুক্তি ছাড়া অন্যান্য সময় দূরে থাকেন? কখনো মনে করিনা, মিডিয়ার কাছে আমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কাজের বাইরে কোনো সময় কোথাও তেমন যাই না। পরিবার-বন্ধুবান্ধব নিয়েই থাকি। আপনি এত অল্প ছবিতে কাজ করেন কেন? এটা আমাকে অনেকে বলেন কেন এত অল্প কাজ করি? তাই সিদ্ধান্ত বদলেছি। এখন থেকে বেশি বেশি ছবিতে কাজ করব। প্রতিবছর ৪-৫ করে ছবি মুক্তি পাবে তেমনভাবে কাজ করব। দেখি কি হয়। সেটা এ বছর থেকেই হতে পারে। বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ দু-দেশের সিনেমার আদানপ্রদান হচ্ছে। বিষয়টি আপনার দৃষ্টিতে কেমন বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আছেন। তারা আমাদের কলকাতার ছবিগুলো দেখুক। আবার বাংলাদেশের ভালো ছবিগুলো আমাদের ওপারে যাক। আমি মনে করি, যেসব বাধ্যবাধকতা রয়েছে সবকিছু তুলে দেয়া উচিত। দু-দেশে ফ্রি তে সিনেমা আদান-প্রদান হওয়া উচিত। দু-দেশের সিনেমার মার্কেট ওপেন করে দেয়া উচিত। তখন বলতে পারবো দুই বাংলার প্রায় ২৭ কোটি মানুষের সিনেমা বাংলা সিনেমা। আপনার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্ট থেকে যেসব ছবি বানানো হয় সেখানে আপনি অভিনয় করেন। অন্য নায়ক দিয়ে কাজ করানোর ইচ্ছে আছে? হুম। এ বছর এই চিন্তাটা মাথায় আছে। দুটো ছেলে দেখেছি, ভালো লেগেছে। তাদের দিয়েই হয়তো কাজ করব। তবে এটা কনফার্ম যে, এখন থেকে আমার প্রডাকশন হাউজ থেকে অন্য নায়করাও কাজ করবে। তাদের দিয়ে দুটি-তিনটি করে ছবি বানাবো। কলকাতার বাংলা ছবিতে আপনার দেখা ব্যবসা সফল ছবি কোনগুলো? ২০০২ সালে ১৪ জুন আমার অভিনীত সাথী ছবি মুক্তি পায়। প্রায় ১০ কোটি টাকা সেই সময়ে ব্যবসা করে ছবিটি। এরপর সাথীর মতো হাইপ তুলেছিল চিরদিনই তুমি যে আমার, ওয়ান্টেড, চাঁদের পাহাড়, পাগলু, আওয়ারা, বস। আরও পড়ুন: শুভশ্রী-মিমির দ্বন্দ্ব কী মিটে গেছে ! আপনার সমসাময়িক অনেকেই রাজনীতিতে জড়াচ্ছেন। আপনাকে কি রাজনীতিতে দেখা যাবে? না, আমি ওসব কিছুই বুঝিনা। কখনো কোনো পলিটিকাল অনুষ্ঠানে যাইনি। আমাকে কেউ রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোর জন্য চাপ দেয়নি। তাই পলিটিক্সে যাওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই। আমি যে পেশায় আছি এটা নিয়ে থাকতে চাই। গড হ্যাজ বিন কাইন্ড অলওয়েজ উইথ মি। আপনি নিজেই একজন সফল নায়ক। এই সফলতার মূলমন্ত্র কী? দর্শকরা আমাকে গ্রহণ করেছেন, নির্মাতারা আমাকে দিয়ে ভালো কাজগুলো করিয়েছেন; সেজন্য আমি সাফল্য পেয়েছি। এটা কমন উত্তর। তবে আমি মন থেকেই বলছি, আমার বাবা-মায়ের আশির্বাদ সবসময় আমার সাথে আছে। জীবনে তাদের উইশ আছে বলেই হয়ত আজ এই অবস্থান পেয়েছি। আমাকে সবাই সুপারস্টার বলে, ভালো লাগে। কিন্তু আমি বলছি, বাবা-মায়ের আশির্বাদে আজ আমি সুপারস্টার হয়েছি। সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2FcyfNB
January 25, 2018 at 04:52AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top