সুরমা টাইমস ডেস্ক:: প্রথম দিনের প্রথম শো-তেই ‘পদ্মাবত’ দেখেন তিনি। তারপরই পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালিকে বিস্ফোরক খোলা চিঠি লিখলেন বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর। ছবিটা শেষ পর্যন্ত দেখার পর তাঁর নিজেকে শুধুমাত্র যৌনাঙ্গ ছাড়া কিছু মনে হচ্ছিল না বলে জানিয়েছেন স্বরা। নারীদের এই সমাজে আদৌ বাঁচার অধিকার রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন এই ছবিতে তোলা হয়েছে বলে মনে করেছেন স্বরা।
তাঁর খোলা চিঠিতে স্বারা ভাস্কর সতী ও জওহর প্রথাকে মহান করে তোলার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, রানী পদ্মিনীর ঘটনা যে সময়ের, সেই ১৩ শতাব্দীতে এই প্রথাকে মহান মনে করা হলেও, কেন ২১ শতকে তৈরি একটি ছবিতে এই জওহর-কে মহিমান্বিত করা হবে?
তিনি লেখেন, ‘আপনার সিনেমা অবশ্যই শক্তিশালী বার্তা বহন করে এবং মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে সাহায্য করে। দর্শকদের আবেগের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আপনার ছবি। চিন্তা-ভাবনায় আপনার ছবির প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই আপনি সিনেমায় যা করছেন বা যা বলছেন তার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।’
স্বরা ভাস্কর আরও লিখেছেন, ‘এতদিন নারীমুক্তির আন্দোলন করে আমরা মেয়েদের ভোটাধিকার, সম্পত্তির অধিকার, শিক্ষার অধিকার, কর্মক্ষেত্রে সম-বেতনের অধিকারের মতো যা কিছু অর্জন করেছি, সবই এখন ভিত্তিহীন বলে মনে হচ্ছে। আমরা সেই মূল প্রশ্নেই আবার ফিরে এসেছি। মেয়েদের কি আদৌ বাঁচার অধিকার রয়েছে। একটি মেয়ে, সে বিধবা হোক, ধর্ষিতা হোক, তরুণী হোক, বৃদ্ধা হোক, গর্ভবতী হোক বা ঋতুমতী না হোক- তার কি বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে?’
‘ধর্ষিতা হলেও মেয়েদের বাঁচার অধিকার রয়েছে। মেয়েরা শুধুমাত্র হাঁটা-চলা করতে সক্ষম, কথা বলা যৌনাঙ্গ নয়। মেয়েদের ভ্যাজাইনা রয়েছে, কিন্তু তা তার শরীরেরই একটা অংশ, তার সমগ্র সত্ত্বা নয়। যৌনাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা, রক্ষা করা, এর শুদ্ধতা বজায় রাখাই মেয়েদের একমাত্র কাজ নয়। ২১ শতাব্দীতেও কেন আমরা এই ধারণা ছাড়তে পারব না?’
‘একে গৌরবান্বিত করার অভ্যাস এবার ছাড়া দরকার। যৌনাঙ্গকে সম্মান জানানো অবশ্যই ভালো, কিন্তু কোনো দুর্ভাগ্যজনিত ঘটনার জেরে যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলেও সেই মেয়েটির বাঁচার অধিকার রয়েছে। তার নিজেকে শাস্তি দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ভ্যাজাইনা ছাড়াও জীবন আছে, ধর্ষণের পরেও জীবন আছে।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2EiQfH0
January 28, 2018 at 10:14PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন