পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার)বসানোর কাজ চলছে


সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ৭বি খুঁটিতে উঠানো শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানান, শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকেই স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর আগে কয়েকদফা এটি বসানোর কথা থাকলেও বসানো সম্ভব হয়নি।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে প্রকৌশলীরা জানান, দ্বিতীয় স্প্যানটি বসছে ৩৮ নম্বর এবং ৩৯ নম্বর খুঁটিতে। এটি ৩৮ নম্বর খুঁটিরর প্রথম স্প্যানের সঙ্গে স্থায়ীভাবে ওয়েল্ডিং করে দেয়া হবে। কিন্তু এ ওয়েল্ডিংয়ের আগে এর লোড বহনের জন্য লিফটিং ফ্রেম তৈরি করা হয়েছে। যা ১৮শ’ টন ওজন বহন করবে। কিন্তু এটি এ ওজন বহনে সক্ষম কিনা তা পরীক্ষার টেস্ট পাইল স্থাপন করা হয়।

শুক্রবার অপসারণ সম্পন্ন হয়ে নৌপথটি চলাচলযোগ্য হয়। তাই শনিবার সকালেই স্প্যানবাহী জাহাজটি যথাযথ স্থান অর্থ্যাৎ ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটির মাঝামাঝি নিয়ে যাওয়া হয়।

শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় এক প্রকৌশলী জানান, স্প্যানটি ক্রেন নিচু করে ধরে রেখেছিল। এখন উঁচু করে রাখা হয়েছে। এরপর ৩৬শ’ টন ধারন ক্ষমতার এ ভাসমান ক্রেনের জাহাজ ‘তিয়ান ই’ স্প্যানটি পাজা করে নিয়ে বসিয়ে দিবে খুঁটি দু’টির ওপর।

এদিকে পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের তিন দিনব্যাপী সরেজমিন সভা শানিবার (২৭ জানুয়ারি) শেষ হচ্ছে। এ সভায় পাঁচ বিদেশি বিশেষজ্ঞসহ ১১জন বিশেষজ্ঞ অংশ নিচ্ছেন। সেতুটির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে বিশেজ্ঞরা সভা শেষ করবেন। তাই এ সভার শেষ দিনটিও বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ।

পদ্মায় এখন আলোর ঝিলিক দুর্নীতির ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতার পর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এ সাহসী সিদ্ধান্ত দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়িত করে। পদ্মায় এখন আলোর ঝিলিক।

শুরুতে যে পরিকল্পনা নেয়া হয়, তাতে চার বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালের মধ্যে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে পিছিয়ে থাকার কথা বলা হয়েছে।

গত ২০ নভেম্বর সেতু বিভাগে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা আছে, পদ্মা সেতু নির্মাণের নির্ধারিত সময় শেষ হতে বাকি আর মাত্র ১৪ মাস। ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার মধ্যে গত অক্টোবর পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আট মাস পিছিয়ে আছে নির্মাণ কাজ।

তবে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে- নদীর তলদেশের মাটির স্তরে নানা সমস্যাসহ বৈচিত্রময় পদ্মা সেতুতে এ অগ্রগতিও অনেক অর্জন। তবে এসব চ্যালেঞ্জ না থাকলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতু জনগণের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হতো। কারণ এত গভীরতায় পাইল করে প্রায় ১০০ বছরের স্থয়িত্বে এ সেতু তৈরি করা হচ্ছে। যা বাঙালি বীরত্বগাথাঁয় রূপান্তর হয়েছে।

পদ্মা পাড়ের প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের ব্যস্ততা সবচেয়ে এখন অবিরাম। “পদ্মা সেতু” নামের একটি স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে তাদের এ ব্যস্ততা। তাদের ঘাম-ঝরানো শ্রমে গড়ে উঠছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু।

এরই মধ্যে একটি স্প্যানের পর বসতে যাচ্ছে দ্বিতীয় স্প্যান। চোখের সামনে ফুটতে শুরু করেছে পদ্মা সেতু। পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সময় অনেকে হয়তো মনে মনে পুরো সেতুটির একটি কল্পচিত্র এঁকে ফেলেছেন। তাদের মধ্যে কেউ ভাবছেন পদ্মা সেতুর পথ হবে একেবারে লম্বা। কেউ ভাবছেন বাঁকা।

তবে কল্পদৃশ্যে কোনোটিই ঠিক নাও হতে পারে। কারণ, পদ্মা সেতুর রূপ হবে ইংরেজি “এস” বর্ণের মতো। এমনটিই জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান “এস”বর্ণের আদলেই গড়ে তোলা হচ্ছে পদ্মা সেতু। এ বর্ণের মতো করেই একের পর এক স্প্যান বসানো হবে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2DSaIoa

January 27, 2018 at 01:23PM
27 Jan 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top