এবার কড়া সতর্কতা দিয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা)। তারা বলেছে, রাষ্ট্রীয় মদতে চালানো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে লড়াইয়ের আর কোনো বিকল্প নেই। রোববার টুইটারে প্রকাশিত এক টুইটে এ কথা জানানো হয়েছে। ওদিকে শুক্রবর সেনা সদস্যদের বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিরা। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সেনা সদস্য। হামলার দায় স্বীকার করেছে আরসা।
২৫ শে আগস্ট আরসা রাখাইনে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ৩০টি শিবিরে হামলা চালায়। এতে সেনা সদস্য সহ ১১ জন নিহত হন। এরপরই সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর নেমে আসে সেনাবাহিনীর নৃশংস নির্যাতন। তার ফলে জীবন বাঁচাতে কমপক্ষে ৬ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদেরকে ফেরত পাঠানো নিয়ে গত ২৩ শে নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, এ মাস শেষ হওয়ার আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই আরসার পক্ষ থেকে এমন ঘোষণায় উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক মহল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে অনলাইন আরব নিউজ লিখেছে, সবাইকে সতর্ক করে রোববার আরসার টুইটার একাউন্ডে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে স্বাক্ষর রয়েছে আরসা নেতা আতাউল্লাহর। তিনি এতে লিখেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বার্মার রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করতে লড়াই করার ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই আরসার হাতে। যেসব ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের মানবিক বাহিদা ও রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব পড়বে তেমন সব সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে হবে। আরসা নেতা আতাউল্লাহ কোথায় আছেন তা জানা যায় নি। তবে মিয়ানমার সন্দেহ করে তিনি পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন এবং পরে মিয়ানমারে ফিরে গেছেন হামলা চালাতে। উল্লেখ্য, শুক্রবারে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানোর দায় স্বীকার করেছে তারা। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় নি। তবে আরসার সর্বশেষ বিবৃতির বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের একটি মুখপাত্রের কাছ থেকে মন্তব্য চাওয়া হলে তিনি তাৎক্ষণিক কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এক সেনা মুখপাত্র। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে। এই এলাকাটিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এর আগে কর্তৃপক্ষ বলেছিল, বিদ্রোহী বা উগ্রপন্থিদের হামলার জবাব দেয়া হবে শক্তি প্রয়োগ করে। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতার কথা প্রত্যাখ্যান করে তারা। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই। তারা মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারেন ন। তাদের নেই কোন মৌলিক অধিকার। পায় না স্বাস্থ্য সেবা। মিয়ানমার তাদেরকে অবৈধ বাঙালি হিসেবে দেখে। তাদের দাবি, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে রাখাইনে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছে। এর আগে ২০১২ সালে রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধদের মধ্যে ভয়াবহ সহিংসতা সৃষ্টি হয়। তখন বিপুল পরিমাণ মানুষ নিহত হন। বাস্তুচ্যুত হন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। তবে সর্বশেষ ২৫ শে আগস্ট সৃষ্ট সহিংসতায় কমপক্ষে ৬ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শরণার্থী সঙ্কট সৃষ্টি হয় বাংলাদেশে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠনগুলো জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2COnJic
January 07, 2018 at 12:41PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন