সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ ১৫ মিনিট বন্ধ থাকার পর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আবারও শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২ টা ১০ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
এর আগে বেলা ১১ টা ৫৫ মিনিটে সরকারি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী বাহাসে ছড়িয়ে পড়লে ওই আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এজলাস কক্ষ ত্যাগ করে খান কামরায় চলে যান।
আদালত কক্ষে ফিরে এসে বিচারক আখতারুজ্জান বলেন, আইনজীবীদের মধ্যে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু এসময় পাশ থেকে জুনিয়ররা হট্টগোল করবেন কেন?
তিনি বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামনে এভাবে হট্টগোল করা ঠিক? এটা উনার জন্য মানসম্মানের ব্যাপার।
বিচারক বলেন, আমিনুল ইসলাম ভালো আইনজীবী। বলুক না। অপ্রাসঙ্গিক হলে আমি নিজেই থামিয়ে দেবো।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম দুঃখ প্রকাশ করে ফের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।
এর আগে বেলা ১১ টা ১৮ মিনিটে আদালতে আসামিপক্ষের যু্ক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। মামলার আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন তার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।
এক পর্যায়ে তিনি সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, একজন ভোট চাচ্ছেন আরেকজন আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।
এসময় সরকারিপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বাধা দিলে দু’আইনজীবী বাহাসে ছড়িয়ে পড়েন।
তখন জুনিয়ররাও চিৎকার করতে থাকেন।
তখন আদালতের বিচারক তাদেরকে শান্ত হতে বলেন। কিন্তু তাতে বাহাস না থামলে তিনি এজলাস কক্ষ ছেড়ে খাস খামরায় চলে যান।
ওই মামলার হাজিরা দিতে বেলা পৌনে ১১ টায় গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা হন বিএনপি প্রধান। বেলা সাড়ে ১১ টায় তিনি আদালতে পৌঁছান।
খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে।
গত ২৫ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় যুক্ততর্কের জন্য দিন ধার্য করেন।
ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন— মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। ওই জনসভা থেকে তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন।
ওইদিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে আসেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2ntHQsh
January 31, 2018 at 02:00PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন