????????????????????????????????????
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে ৫ শিক্ষার্থীসহ ৬জন নিহত হওয়ার পরও প্রশাসনের বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে অবৈধ পন্থায় পাথর উত্তোলনের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা কোয়ারীর ইজারাদার ও সাতবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করার জন্য এ টাকা দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।
তবে পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ইজারাদার মস্তাক আহমদ পলাশ টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সাধারণ শ্রমিকের স্বার্থে বৈধ উপায়ে পাথর উত্তোলনের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখানে কোন ধরণের লেনদেন হয়নি বলে দাবী করেন তিনি।
সরেজমিনের এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে টিলা কেঁটে পাথর উত্তোলনের সময় ৫ শিক্ষার্থী সহ ৬জন নিহত হন। এ ঘটনার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। অবৈধ উপায়ে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলে বেকায়দায় পড়েন পাথর খেকোচক্র। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোয়ারীর মূল অংশ থেকে পরিবেশের ক্ষতিকর যেকোন প্রকারের ইঞ্জিন ছাড়া বৈধ উপায়ে পাথর উত্তোলনের অনুমতি থাকলে এই সুযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নদীর জলসীমা থেকে সেইভ মেশিনের সাহায্যে বারকি নৌকা দিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে। আর এজন্য প্রতি সেইভ মেশিনে প্রতিদিন ১/২ হাজার টাকা করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিককে বখরা দিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা। তবে টাকার বিষয়টি পুলিশ, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী মহল অস্বীকার করেছেন।
প্রতিবছর লোভা কোয়ারীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে শেলো মেশিনের সাহায্যে নদীর তীরে ফসলী জমি ও টিলা কেটে ৪০-৫০ ফুট গভীর করে পুকুরের ন্যায় গর্ত করে পাথর উত্তোলন করা হত। কিন্তু এ বছর প্রশাসনের বিরোধীতায় অবৈধ উপায়ে পাথর উত্তোলনে ব্যর্থ হয়ে কয়েক দফা বৈঠকে বসেন স্থানীয় লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। বৈঠক সূত্রে জানা যায় প্রশাসনের লোকজনকে ম্যানেজ করার জন্য কোয়ারীতে প্রতিটি গর্তে এক লক্ষ টাকা করে একেক জন ব্যবসায়ীকে দিতে হয়েছে। লোভা কোয়ারীতে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন বলে জানা যায়।
এছাড়া নদী ভাঙ্গন প্রবল আকার ধারণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বসতবাড়ি ও ফসলী জমি হুমকির সম্মুখীন রয়েছে। গত এক যুগে মূলাগুল বাজারের অর্ধেক জায়গা, নয়াবাজার জামে মসজিদ, নয়াবাজার ও তীরবর্তী শত শত ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালানো হলেও প্রভাবশালী মহলের তৎপরতায় কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, অবৈধ উপায়ে পাথর উত্তোলনের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোনো ধরণের টাকা উত্তোলন করা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে যেটুকু কথা-বার্তা হয়েছে তা কোয়ারীর ও ব্যবসায়ীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নিয়ে। সাধারণ শ্রমিকের স্বার্থে পাথর কোয়ারী খোলার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর ইজারাদার মস্তাক আহমদ পলাশ বলেন, ইজারার শর্ত মেনেই পাথর উত্তোলনের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে এখানে কোন প্রকার টাকা-পয়সার লেনদেন হয়নি। ইজারার শর্ত অমান্য করে পরিবেশ বিধ্বংশী পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা বলেন, পরিবেশ ধ্বংসকারী কোন ধরণের মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা যাবে না। এ ব্যাপারে হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। মানুষ মরবে, জনবসতি ধ্বংস হবে, এমন প্রক্রিয়ায় পাথর তো দূরের কথা, হীরাও উত্তোলন করতে পারবে না।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2q7YguV
January 02, 2018 at 01:36AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.