ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি- প্রথমে পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তারপরে ৫৬ হাজার টাকায় কেনেন ক্যামেরা। কোনো নতুন সিনেমা হলে মুক্তি পেলেই সেই ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করতেন। এরপর যোগাযোগ করতেন প্রযোজকের সঙ্গে। টাকা পেলে সিনেমা ছাড়তেন না, না পেলে ছেড়ে দিতেন ইন্টারনেটে। এভাবে শাকিব খানের নবাবসহ বহু সিনেমা পাইরেসি করেছেন। সিনেমা পাইরেসির এই গুরুর নাম ওয়াসিম খান ওরফে নান্টু। তেজগাঁও থানার এক মামলায় গ্রেপ্তার ৩৩ বছরের নান্টু গতকাল শনিবার ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সিনেমা পাইরেসি করার কথা স্বীকার করেছেন। একই মামলায় গ্রেপ্তার আটজন আসামি পুলিশ হেফাজতে আছেন। শনিবার ঢাকার একটি আদালত প্রত্যেকের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত বছর জাজ মাল্টি মিডিয়ার নবাব ও বস-২ সিনেমা মুক্তি পায়। পরে হল থেকে সিনেমা দুটি ভিডিও করে জাজের এক কর্মকর্তার কাছে মোবাইলে চাঁদা দাবি করেন নতুবা ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওয়াসিম খানসহ অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে গত ২০ জানুয়ারি জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মহিউদ্দিন হাওলাদার মামলা করেন। এ মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওয়াসিম খান নান্টুসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করে। পাইরেসি চক্রের প্রধান নান্টুর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। রাজধানীর কলাবাগানের একটি মেসে থাকতেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আহম্মেদ বলেন, নান্টু আদালতে স্বীকার করেছেন, তিনি কয়েক বছর ধরে সিনেমা পাইরেসি করে আসছেন। হলে সিনেমা আসার পর নান্টুর লোকজন তা ভিডিও করতেন। পরে নান্টু প্রযোজকদের মোবাইলে হুমকি দিতেন যে, টাকা না দিলে ইন্টারনেটে সিনেমা ছেড়ে দেবেন। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। সিনেমা পাইরেসির কাজে ব্যবহার করা নান্টুর লোকজনের কাছ থেকে ১০টি কম্পিউটার, ৫৬টি কার্ড রিডার, একটি সনির হাইব্রিড ক্যামেরা, পুরাতন ১৫টি সিমকার্ড, ১৬টি হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর তালিকা আদালতে দেওয়া হয়েছে। নান্টুর সহযোগীরা হলেন বগুড়ার মেহেদী হাসান সোহেল (২২), সনি মিয়া (২৮) ও সোহেল রানা (২৫), রাজশাহীর মতিন (২১) ও হারুনুর রশিদ (২০), রংপুরের আশিকুর রহমান আশিক (২৪) এবং নাটোরের উৎপল (২৩) ও মোস্তফা (২৬)। আরও পড়ুন: সিট খালি থাকে বিমানের অথচ টিকেট পাওয়া যায় না জাজ মাল্টিমিডিয়ার করা মামলায় অভিযোগ, নান্টুর লোকজন তাঁদের বস-২ ও নবাব হল থেকে ভিডিও করে তা ছেড়ে দিয়েছে ইন্টারনেটে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইটে প্রকাশ করে আসামিরা অন্তত দুই কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করেছেন বলেও দাবি জাজের। জাজসহ বহু প্রযোজককে ভিডিও করা সিনেমা বাজারে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন নান্টু। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, সিনেমা মুক্তি পেলেই নান্টু তা ভিডিও করে বিভিন্নভাবে টাকা আয় করেছেন। প্রযোজকের কাছ থেকে টাকা আদায় করার পাশাপাশি এসব সিনেমা সিডি করে বিক্রি করতেন। সিনেমা পাইরেসির জন্য নান্টুর নাম বারবারই উচ্চারিত হচ্ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে জাজ মাল্টিমিডিয়া আগে মামলা করলেও তখন তিনি গ্রেপ্তার হননি। বরাবরই ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। জানতে চাইলে বাদী ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন হাওলাদার বলেন, বস-২ ও নবাব সিনেমা হল থেকে ভিডিও করে নান্টু তাঁর কাছে চাঁদা চান। টাকা না দেওয়ায় সিনেমা দুটি ফেসবুক, ইউটিউবে ছেড়ে দেয়। জাজের এই কর্মকর্তা আরও বললেন, নান্টুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আর কেউ সিনেমা পাইরেসি করার সাহস পাবে না। সূত্র: প্রথম আলো আর/০৭:১৪/২৯ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2rQuMCM
January 29, 2018 at 01:55PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন