নিউইয়র্ক, ১৮ জানুয়ারি- বহুদিনের একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটলো প্রবাসে সন্দ্বীপবাসীর। নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনে বাংলাদেশি অধ্যুষিত চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকায় গত শনিবার সন্ধ্যায় উৎসবমুখর পরিবেশে সন্দ্বীপ ভবনর উদ্বোধন করা হয়। এজন্য উপস্থিত সকলে ধন্যবাদ জানান সন্দ্বীপ সোসাইটির সভাপতি আলহাজ্ব মাহফুজুল মাওলা নান্নুকে। কারণ, ৪ বছর আগে তার অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল সন্দ্বীপ ভবনর। দুমেয়াদে ৪ বছর অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের সময়েই সন্দ্বীপ ভবনের প্রত্যাশা পূরণে সহকর্মী সকলকে নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন মৃদুভাষী নান্নু। দুতলা এই ভবনটি কয়েক বছর আগে খুবই সস্তায় ক্রয় করেন তিনি। সে সময় সোসাইটির তহবিলে প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় দলিল করেন নিজের নামে। এ নিয়ে নানা রটনার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু দমেননি নান্নু এবং তার মেয়াদের সেক্রেটারি এম এ হান্নান পান্না। তারা সবকিছু দূরে ঠেলে ভবনের তহবিল সংগ্রহে মনোনিবেশ করায় বিত্তশালীরাও পাশে দাঁড়ান। এক পর্যায়ে তহবিল বাড়ে এবং গত বছরের ২৯ এপ্রিল ভবনের দলিল করা হয় সন্দ্বীপ সোসাইটির নামে। এ প্রসঙ্গে বিদায়ী সভাপতি মাহফুজুল মাওলা নান্নু বলেন, ভবনটির বর্তমান মূল্য ১২ লাখ ডলার। কিন্তু নিজের অঙ্গীকারের প্রতি শতভাগ আস্থা থাকায় ৪ লাখ ৮০ হাজার ডলারের ভবনটি একই মূল্যে সোসাইটির কাছে হস্তান্তর করেছি। এই ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ভাড়া আসছে মাসে ৬ হাজার ডলার করে। বেসমেন্টে সোসাইটির স্থায়ী অফিস। অর্থাৎ এই সোসাইটির কার্যক্রমে আর কোন সমস্যা থাকবে না। এর চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কি হতে পারে। নান্নু অবশ্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কার্যকরী কমিটির সকল সহকর্মী এবং সন্দ্বীপবাসীর প্রতি। তারা আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বলেই সুদমুক্ত এই ভবন পেল সন্দ্বীপ সোসাইটি। উল্লেখ্য, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত সন্দ্বীপ সোসাইটির দায়িত্ব পালনকারি অপর কর্মকর্তারাও অঙ্গীকার করেছিলেন নিজস্ব ভবনের। কিন্তু কেউই তা করতে সক্ষম হননি। নান্নু-পান্না প্যানেলের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হওয়ায় দুবছর পর পুনরায় তাদেরকেই দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়া হয়। সবশেষ নির্বাচনেও নান্নু-পান্না প্যানেলের সিংহভাগ লোকই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আগের সেক্রেটারি পান্না হয়েছেন সভাপতি এবং আগের যুগ্ম সম্পাদক মাকসুদুর রহমান হয়েছেন। সন্দ্বীপ সোসাইটির অন্যতম উপদেষ্টা এবং বিএনপি নেতা অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, নিউইয়র্ক অঞ্চলে সন্দ্বীপের অধিবাসী রয়েছেন এক লাখের বেশী। তাদের সামগ্রিক কল্যাণ ছাড়াও কেউ মারা গেলে তার লাশ দাফন-কাফনের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে এই সোসাইটি। কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে তার পরিবারের পাশেও দাঁড়ায় এই সোসাইটি। এভাবেই উত্তর আমেরিকায় সন্দ্বীপ সোসাইটি অন্যতম একটি সেবামূলক সামাজিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বাংলাদেশিদের পিঠা উৎসব দোয়া-মাহফিলের পর কেক কেটে ভবনের উদ্বোধন শেষে সকলে সাধারণ সভায় মিলিত হন। হাড় কাঁপানো শীত সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক সদস্যের উপস্থিতিতে এ সভা হয় রাধুনি রেস্টুরেন্টে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি নান্নু। এ সময় সোসাইটির সাধারণ সদস্য ছাড়াও ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য-কর্মকর্তারা। সকলেই অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান সোসাইটির স্থায়ী ভবন পাওয়ায়। ২০১৮-২০১৮ মেয়াদের কার্যকরী কমিটি এ সময় শপথ নেন। এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সন্দ্বীপ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনার এম রহমান সুজন। উল্লেখ্য, নান্নুকে সন্দ্বীপ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, লুৎফুল করিম, আব্বাসউদ্দিন দুলাল, আলহাজ্ব বাবরউদ্দিন, মোদাচ্ছের মিয়া, হেলালউদ্দিন, আলহাজ্ব আবু তাহের, ফিরোজ আহমেদ, ওমর ফারুক প্রমুখ। নিউইয়র্কে দেড় শতাধিক আঞ্চলিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী সংগঠন রয়েছে। তবে নিজস্ব ভবন রয়েছে হাতে গোনা কটি সংগঠনের। এগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্ক, চট্টগ্রাম সমিতি, নোয়াখালী সোসাইটি এবং বিয়ানিবাজার সমিতি। জালালাবাদ সমিতিরও একটি ভবন রয়েছে। তবে সেটি নিউইয়র্ক সিটিতে নয়, দেড় শতাধিক মাইল দূরে ফিলাডেলফিয়ায়। সেটিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সূত্র: এনআরবি নিউজ আর/১০:১৪/১৮ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2EV555s
January 19, 2018 at 04:47AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top