সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, তাঁর কোনো অপরাধ নেই, গায়ের জোরে বিচার করছে সরকার। বিএনপিকে হামলা করে মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের সম্পর্ক মাটি ও মানুষের সঙ্গে। জোর জবরদস্তি করে স্বার্থ আদায় হবে, কিন্তু ভোট পাওয়া যাবে না। জিয়া অরফানেস ট্রাস্ট মামলায় ‘অপরাধই নেই, তাহলে বিচারটা করবে কিসের? তাঁরা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসতে চায়।’
তিনি বলেন, দেশে আজ বিচার কোথায়? পিপি সাহেবকে দিয়ে এমনভাবে কথা বলতে বাধ্য করা হয়, যাতে তার স্বর শুনলে বোঝা যায়, শক্তিটা আসছে কোথা থেকে!
শনিবার দুপুরে লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় সভাপতিত্বের বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় দেবেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালত।
এ রায়কে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই আজ বেলা ১১টা ১০ মিনিটে লা মেরিডিয়ান হোটেলের ১৪ তলার গ্র্যান্ড বল রুমে বিএনপির নির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা শুরু হয়।
সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সব জেলার সভাপতি ও নির্বাহী কমিটির ৫০২ জন সদস্যসহ অন্তত সাতশ নেতা উপস্থিত আছেন।
সভাপতির বক্তব্যে খালেদা জিয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলাসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমি কোর্টে যেতাম। তারা আমার সঙ্গে যেত। তারা জ্বালাও-পোড়াও ভাঙচুর করেনি। তবু তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। ঘরে ঘরে গিয়ে আটক করা হচ্ছে। অথচ তারা দেশে গণতন্ত্রের কথা বলেন। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দিচ্ছে। তারা আমাদের মহিলা নেত্রীদেরও ছাড় দিচ্ছেন না। বর্তমানে আমাদের বহু নেত্রী জেলে রয়েছেন। সেখানে তাদের থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই।
‘সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারকরা এখন স্বাধীনভাবে রায় দিতে পারছেন না। ক্ষমতাসীন দল সংবিধানকে নিজেদের মতো করে সংশোধন করে নিয়েছে। সংবিধানে গণতন্ত্রের কিছু রাখা হয়নি। এখন ভোটের অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।’
পুলিশ জনগণের অধিকার রক্ষা করতে চায় উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশকে এমনভাবে নির্দেশ দেয়া হয়, ব্যবহার করা হয়, ভয় দেখানো হয়; তারা নির্দেশ মানতে বাধ্য হয়। তা না হলে তারা চাকরি হারাবেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে দুর্বল করতে পারলেই আওয়ামী লীগের সুবিধা। এজন্যই প্রশাসনকে ঢালাওভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এই প্রশাসনকে সুযোগ দিলে তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে। কারণ তারা এদেশের মানুষ। তারা গণতন্ত্র চায়।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে যারা গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় আসার দাবি করছে, অস্ত্রের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় এসেছে। তত্ত্বাবধায়কের দাবি আওয়ামী লীগের ছিল। এ দাবির জন্য তারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছে, জ্বালাও-পোড়াও করেছে। এখন তারা সব মুছে দিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করছে জনগণকে ভয় পায় বলে।’
খালেদা জিয়া বলেন, গুম খুন আগের মতো বেড়ে গেছে। তাই বিদেশীরা এখানে বিনিয়োগ করতে আসছেন না। দেশে যারা আছেন তারাও বিনিয়োগ করছে না যদি টাকাগুলো লস হয়।
তিনি বলেন, সারাদেশে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে। এতে আসামী করা হয়েছে সাড়ে ১৮ লাক মানুষকে। এমনো নেতাকর্মী আছে যাদের নামে শতাধিক মামলা রয়েছে। আজ আমাদের মহিলা নেতাকর্মীদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডেও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা য়খন ক্ষমতায় ছিলাম তকন তাদের মহিলারা রাস্তায় এসে আন্দোলন করেছে। সেখানে রান্নাবান্না করেছে। পুলিশ ধরতে আসলে হাতে কামড় দিয়েছে।
দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলছে অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে নাকি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ভালো থাকবে। কিন্তু এখন তাদের ওপর বেশি নির্যাতন চলছে। হিন্দুদের বাড়িঘর-দোকানপাট দখল করে নিচ্ছে। আসলে আওয়ামী লীগ কোনো ধর্মে বিশ্বাস করে না। তাদের অত্যাচারের শিকার হয়ে সংখ্যালঘুরা আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। তারা বলছেন আমরা নৌকার কাছে আর যাব না, আওয়ামী লীগ আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, নৌকা এতটাই ডুবেছে যে নির্বাচনের এক বছর আগে থেকে ভোট চাওয়া শুরু করেছে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2s4TIqc
February 03, 2018 at 03:06PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন