নিখোঁজের একদিন পর ছাতকের সেলিমের লাশ উদ্ধার


সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃঃ ওল্ডহ্যামের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা কোল্ডহার্ষ্টের একটি রাস্তার (আলি ওয়ে) সরু গলি থেকে ৪৪ বৎসর বয়স্ক এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা কোল্ডহার্ষ্টের সেন্ট-হিলডাজ স্কুলের পাশে সেন্ট-হিলডাজ স্ট্রীট এবং মিচেল স্ট্রীটের মধ্যখানের সরু গলি থেকে মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায় সোমবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন সেলিম। সেলিমের বড় ভাই আযাদ মিয়া এই প্রতিবেদক‘কে জানান, সেলিম যেখানেই থাকেন না কেন প্রতিদিন নিয়ম করে রাত দশটায় বাসায় ফিরেন । সেলিম যথাসময়ে বাসায় না ফেরাতে পরিবারের সবাই অনেক খোঁজা-খোঁজির পর তাঁর কোন সন্ধান না পেলে পরে পুলিশে খবর দেন তাঁরা।
কোল্ডহার্ষ্টের স্থানীয় বাসিন্দা সালেহ উদ্দীন তালুকদার সুমন বলেন; তাঁর এক আত্নিয় তাঁকে ফোন করে জানান যে তাদের আলি ওয়েতে কার একটি মরদেহ পরে আছে, এসময় মরদেহের পাশে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন তাঁরা। ‘সুমন‘ তখন গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশকে খবর দেন ।
পুলিশ এসে মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়। গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে ‘এই মুহুর্তে কোন কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি তাঁরা।
তবে সেলিমের পারিবারিক সুত্রে পাওয়া পুলিশের ভাষ্যমতে ‘মরদেহে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
সেলিম আত্মহত্যা করেছেন, না-কি তাকে হত্যা করা হয়েছে,না-কি স্বাভাবিক মৃত্যু তা নিশ্চিত হতে পোস্ট মর্টামের রির্পোট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
স্থানীয় অনেকের সাথে আলাপকালে জানা যায়; মুকিত মিয়া ওরফে সেলিম মানসিক বিকারগ্রস্থ ছিলেন। দীর্ঘ দিন থেকে মানসিক রোগে ভুগছিলেন তিনি। এমনকি অনুমানিক বিশ বছর পুর্বে ছুরি দিয়ে নিজের পেট কেটে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি।

মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও রাস্তায় চলাফেরার সময় কারো সাথে দুর্ব্যবহার বা চড়াও হতে শুনা যায়নি তাঁকে। সারাদিন আপন মনে ঘুরে বেড়াতেন সেলিম , মাঝে মধ্যে কারো সাথে দেখা হলে সিগারেট চেয়ে নিতেন ।
সোমবার বিকেলে অনেকেই ওল্ডহ্যামের বিভিন্ন যায়গায় ঘুরাফেরা করতে দেখেছেন সেলিম‘কে।
এদিকে মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাঁর বড় ভাই আযাদ মিয়ার বাসায় স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা জড়ো হলে ;ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে কোন কথা বলতে রাজি হননি তাঁরা।
মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের মৃত্যু নিয়ে আলাপের এক পর্যায়ে সেলিমের বড় ভাই আযাদ মিয়ার ছেলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সাংবাদিকদের উপর। পরে অবশ্য তাঁর এধরনের আচরণের জন্য ক্ষমা চান সাংবাদিকদের কাছে।
মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের ভাতিজা ক্ষিপ্ত হওয়ার পেছনে যে কারণ সেই বিষয়টি অনুসন্ধানে চলে আসুক সেটা বোধকরি তিনি চাচ্ছিলেন-না। সে কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান তিনি।
ওল্ডহ্যামের ক্যার্কবাম স্ট্রীটের বাসিন্দা মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের দেশের বাড়ি ছাতক উপজেলার দোলার বাজার ইউনিয়নের বাঘইন গ্রামে। দু সন্তানের জনক ছিলেন তিনি।
যে আলি ওয়েতে মুকিত মিয়া ওরফে সেলিমের মরদেহ পাওয়া যায় সে আলি ওয়ের প্রবেশ পথে মুলত: লোহার গেট দেয়া আছে। ওল্ডহ্যাম কাউন্সিল স্থানীয়দের সুরক্ষায় সেখানে তালাবদ্ধ লোহার গেট নির্মাণ করে দিয়েছিল এবং প্রয়োজনে গেট খোলার জন্য প্রত্যেক হাউজ হোল্ডারকে চাবি প্রদানও করেছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য গেট-টি সবসময় খোলাই থাকে। গেট-টি তালাবদ্ধ তাকলে সেলিম সেখানে ঢুকতে পারতেননা। তাঁর পরিনতিও হয়ত অন্যরকম হতে পারত।
এব্যাপারে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলার ওল্ডহ্যাম বারা কাউন্সিলের ডেপুটি লিডার আব্দুল জব্বার বলেন: আমরা সবসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের গেট বন্ধ রাখতে বলি , কিন্তু কেউ কথা না শুনলে আমরা কি করব। সেলিমের মৃত্যুতে কাউন্সিলার জব্বার দু:খ প্রকাশ করে তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2Bv9wFW

February 14, 2018 at 01:47PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top