প্রশ্নবিদ্ধ বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ভূমিকা

খুন-শিশু নির্যাতন মামলার আসামিরা অধরা

500x3501519476396_SSSবিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলায় উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে অপরাধের মাত্রা। একের পর এক খুন ও শিশু নির্যাতন যেন নিত্যনৈমিত্তিক রুটিনে পরিণত হয়েছে। তার উপর ঘনঘন আত্মহননের ঘটনা এবং এসব ঘটনায় প্ররোচনাকারীদের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে এ ধরণের বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক কর্মকান্ডে প্রবাসী অধ্যুষিত জনপদ বিশ্বনাথে রীতিমত তোলপাড় সৃষ্টি হলেও থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা জনমনে তৈরী করেছে নানা প্রশ্নের। খুন ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি কেউ আবার পুলিশের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বলছেন, ‘দায়িত্ব ভুলে বিশ্বনাথ থানার ওসি মহাব্যস্ত প্রধান অতিথি-বিশেষ অতিথি হতে’।

জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বনাথ উপজেলায় বেশকয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ২৫ জানুয়ারী বৃহষ্পতিবার বিকেলে স্ত্রী লুবনা বেগমকে গলাকেটে হত্যা করেন উপজেলার জানাইয়া গ্রামের মৃত জহুর আলীর ছেলে হেলাল মিয়া।

৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার লামাকাজী ইউনিয়নের কোনাউরা নোয়াগাঁও গ্রামের কবির মিয়ার স্ত্রী রনি বেগমের বিরুদ্ধে পানিভর্তি বালতিতে চুবিয়ে তার দুই শিশু সন্তান নাহিদ ও ওয়াহিদকে হত্যা করার অভিযোগ উঠে।

১৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার দশঘর ইউনিয়নের বাইশঘর গ্রামের পাঁচ বছরের কন্যাশিশু চান্দভরাং গ্রামের ছুরুক আলীর ছেলে মিজানের হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে থানায় মামলা দেন তার পিতা।

১৯ ফেব্রুয়ারী সোমবার সকালে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে বুধবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খাজাঞ্চি ইউনিয়নের গোমরাগুল গ্রামের মৃত রশিদ মিয়ার ছেলে আবদুর রব। কাকতালীয়ভাবে দিনদুপুরে ঘটা প্রত্যেকটি ঘটনার পরপরই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গা ঢাকা দেয় অভিযুক্তরা। এরমধ্যে চাঞ্চল্যকর লুবনা হত্যার একমাস পূর্ণ হতে চললেও এখন পর্যন্ত তাকে ধরতে পারেনি পুলিশ। নানা যুক্তি আর অজুহাত দেখিয়ে তারা যেন শুধুই কালক্ষেপন করছে। দুই শিশুসন্তান হত্যায় অভিযুক্ত রনি বেগম মানসিক হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অপর দুই ঘটনার অভিযুক্তদেরও এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ!

এদিকে, এ কয়দিনে বিশ্বনাথ উপজেলায় কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

১ ফেব্রুয়ারী বৃহষ্পতিবার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে সীমা বেগম (১৬) গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস নেয়।

৭ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকালে স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী রহিমা (৩৮) তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস নেয়।

১৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাতে লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা, বখাটে সুমনের উত্যক্ততা সইতে না পেরে কেশবপুর গ্রামের ডা. শাহনুর হোসাইনের মেয়ে কলেজছাত্রী তাসলিমা খানম রীমা (১৬) ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস নেয়। শেষের দুই আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে রহিমাকে অত্যাচারকারী স্বামী আমির ও কলেজছাত্রী রীমাকে উত্যক্তকারী সুমন তার পরিবারসহ পালিয়ে যায়। এরমধ্যে রীমার আত্মহত্যার ঘটনায় বখাটে সুমনসহ পরিবারের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাদের কাউকেই এখন পর্যন্ত ধরতে পারেনি পুলিশ।

একইভাবে গত ৪ ফেব্রুয়ারী থেকে ৪ বছরের কন্যাসন্তানসহ লামাকাজী ইউনিয়নের বশিরপুর পাঠানগাঁও গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী সোনারা বেগম নিখোঁজ থাকলেও এখনও তাদের সন্ধান দিতে পারেনি থানা পুলিশ। অথচ, নিখোঁজের একদিন পরেই থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন আবুল কালাম।

বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম সাংবাদিকদের বলেন, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে যাই। এ থানা এলাকায় যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই পারিবারিক। এসব ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অত্যধিক তৎপর রয়েছে পুলিশ।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2F121bJ

February 24, 2018 at 08:59PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top