আঙ্কারা, ২৫ ফেব্রুয়ারি- বর্ণিল ও বহুমাত্রিক আবহের মধ্য দিয়ে তুরস্কের আঙ্কারায় পালন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস। ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণের মধ্যে দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর দূতাবাসের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, শহীদ দিবস ও ভাষা শহীদদের নিয়ে স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। বিকেলে আঙ্কারায় তুরস্কের জাতীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে (মিল্লিক কুতুফানে) দিবসটি পালন উপলক্ষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তুরস্কের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ আঙ্কারা ইউনিভার্সিটির এশিয়া-প্যাসিফিক রিসার্চ সেন্টারের (আপাম) পরিচালক প্রফেসর ড. ম্যারথান ডুনদার। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আঙ্কারায় নিয়োজিত ২১টি দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, সামরিক উপদেষ্টা, তুরস্কের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজ, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। বাংলাদেশ ও তুরস্কের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু এবং ভাষা আন্দোলনের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আঙ্কারার বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে প্রেরিত প্রতিনিধিরা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশ, কানাডা, কলম্বিয়া, কঙ্গো, ভারত, জাপান, মালয়েশিয়া, রাশিয়া ও সুদানসহ আঙ্কারার State Classical Turkish Music Choir তাঁদের নিজ নিজ ভাষায় অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের ওপর দূতাবাস অনুষ্ঠানস্থলে একটি চিত্র প্রদর্শনেরও আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্বে তুরস্কে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সকল ভাষাশহীদদের এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদানের জন্য শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে দিবসটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ২১ ফেব্রুয়ারির চেতনা বিশ্ব সংস্কৃতির গতিধারা উন্নয়নের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ, যা বিশ্বের লুপ্তপ্রায় হাজারো ভাষাসমূহের সুরক্ষায় ভূমিকা রেখে চলেছে। ইউনেসকো কর্তৃক ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানকেও তিনি তাঁর বক্তব্যে বিশেষভাবে স্মরণ করেন। আরও পড়ুন: ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে টরন্টোর শহিদ মিনারে মানুষের ঢল বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. ম্যারথান ডুনদার তাঁর বক্তব্যে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ভাষাশহীদদের, যারা মাতৃভাষা বাংলার রক্ষার্থে জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ ছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা রাজনৈতিক নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বিশ্বের ভাষা বৈচিত্র্য রক্ষা করে সকলে নিজ দেশের টেকসই উন্নয়নে মাতৃভাষার জ্ঞানকে ব্যবহার করবেন। বাংলাদেশের চিরাচরিত খাবার পরিবেশনার ভেতর দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়। তথ্যসূত্র: প্রথম আলো এআর/১০:৪২/২৫ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sUQqq1
February 25, 2018 at 04:41PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন