খেলনা দেখিয়ে কোটিপতি!


সময় এখন ইউটিউবের। আর এ সময়ের একজন ইউটিউব স্টার রায়ান। তার বয়স ছয় বছর। ইউটিউবে তার চ্যানেলটির নাম রায়ান টয়’স রিভিউ। তার কাজ নতুন নতুন খেলনার মোড়ক খোলার ভিডিও করে তা ইউটিউবে পোস্ট করা। কেবল এ কাজ করেই গত বছর সে আয় করেছে এক কোটি ১০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি টাকারও বেশি। নিত্যনতুন খেলনার মোড়ক খোলার পর রায়ান সেসব নিয়ে খেলছে এরকম ভিডিওই সেখানে দেখানো হয়। বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’-এর হিসাবে রায়ান হচ্ছে সবচেয়ে বেশি আয় করা ইউটিউব স্টারদের একজন। তার অবস্থান এখন আট নম্বরে।

২০১৫ সালে প্রথম ইউটিউবে রায়ানের ভিডিও আপলোড করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ইউটিউবে তার ভিডিওগুলো দেখা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ কোটিবার। ইউটিউবে খেলনা দেখিয়ে রায়ান যতটা মজা করতে পারে তা কেউ পারে না। কখনো সে স্টার ওয়ার্সের হিরো আবার কখনো সে হয়ে যায় স্পাইডারম্যানের সঙ্গী। ভয়ঙ্কর সব বিপদ থেকে উদ্ধার করে স্পাইডারম্যানকে। এমনকি ব্যাটম্যানের গাড়ি করেও ভিডিওতে ঘুরতে দেখা যায় রায়ানকে। আর এসব ভিডিওতে সঙ্গে থাকেন রায়ানের মা-বাবা। তারাও নানারকম মজাদার পোশাক পরে রায়ানের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করেন। আর বাচ্চারাও এই রায়ানের খেলা দেখে দারুণ মজা পায়। ফলে দিন দিন রায়ানের জনপ্রিয়তা বেড়েই যাচ্ছে। তার ভক্ত সংখ্যা সারা বিশ্বে কোটি কোটি। আর রায়ানের ব্যাংক ব্যালান্স দেখে ঈর্ষান্বিত হবে যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। ছয় বছরের রায়ান ছাড়িয়ে গেছে বিশ্বের বড় বড় সব তারকাকেও। একজন ইউটিউব স্টার। কেবল এই কাজ করেই গেল বছর রায়ান আয় করেছে এক কোটি ১০ লাখ ডলার।

ইউটিউবে রায়ানের চ্যানেল ‘রায়ান টয়’স রিভিউ’ এখন বিখ্যাত চ্যানেল। নিত্যনতুন খেলনার মোড়ক খোলার পর রায়ান সেসব নিয়ে খেলছে এরকম ভিডিওই সেখানে দেখানো হয়। কিন্তু রায়ানের ভিডিও আর তার খেলনা নিয়ে কেন বিশ্বজুড়ে বাচ্চাদের এত আগ্রহ তা বুঝতে হলে আপনাকে শিশুর মতো করেই চিন্তা করতে হবে। রায়ান যখন তার খেলনাগুলো নিয়ে খেলতে বসে শিশুরাও তার মতো করে কল্পনার ডালি খুলে বসে। মিশে যায় রায়ানের খেলার সঙ্গে ভাবনার ছলে। আর এই ফাঁকে শিশুদের মা-বাবারা শিশুকে রায়ানের ভিডিও দেখিয়ে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে রাখে। এদিকে রায়ান রহস্য বালক হিসেবেই রয়েছে সবার কাছে। ইন্টারনেটে খুবই পরিচিত মুখগুলোর একটি হওয়া সত্ত্বেও তার পরিচয় নিয়ে রয়েছে ব্যাপক রহস্য। তার নামের শেষাংশ কি, কোথায় থাকে, কেউ জানে না। ইউটিউবে ২০১৫ সালে রায়ানের প্রথম পোস্ট করা ভিডিওটি ছিল প্লাস্টিকের ডিম ভেঙে সেখান থেকে খেলনা বের করা। কল্পনা করুন তো কতবার এটি বিশ্বজুড়ে শিশুরা দেখেছে। একবার-দুইবার নয়, এক লাখ-দুই লাখবারও নয়, এমনকি এক কোটিবারও নয়। এটি দেখা হয়েছে আশি কোটিবার। হ্যাঁ ইউটিউব পরিসংখ্যান তাই বলছে।

রায়ানের অন্য ভিডিওগুলোও দেখা হয়েছে এরকমভাবেই। তার ভিডিও চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার এক কোটির বেশি। তবে সমালোচকরা বলছেন, রায়ানের চতুর বাবা-মা আসলে শিশুপুত্রকে ব্যবহার করে একটি সফল ব্যবসা চালাচ্ছেন। এটা শিশু নির্যাতনের শামিল। কিন্তু তার মা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমরা তো তার স্কুল রুটিনে কোনো ব্যাঘাত ঘটাচ্ছি না। ছুটির দিনেই এসব ভিডিও রেকর্ড করি। রায়ানের বাবা-মা মাত্র কয়েকবার গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে রায়ানের মা দাবি করেছেন, যখন তার ছেলের বয়স মাত্র তিন বছর, তখন এই ইউটিউব চ্যানেল করার আইডিয়া রায়ানই দিয়েছিল। তবে রায়ানের মা নিজেও তার নিজের পরিচয় প্রকাশ করেননি। ইউটিউবে রায়ানের একটি ভিডিও হলো খেলনা রেলগাড়ি দিয়ে খেলা। এরকম নিত্যনতুন খেলনা নিয়ে সে খেলে, যা ভিডিও করে আপলোড করা হয়। একটি ভিডিওর রিভিউতে বলা হচ্ছে, ‘রায়ান যেভাবে তার খেলনার প্যাকেট খোলে, তখন সেটি একটি নাটকীয় পরিবেশ তৈরি করে। রায়ানের এসব ভিডিও দেখে খেলনার বিক্রিও বহুগুণ বেড়ে গেছে।’



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2nxKs9s

February 03, 2018 at 02:54PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top