ওয়াশিংটন ডিসি, ১৭ ফেব্রুয়ারি- নথিভুক্ত না হওয়া অভিবাসী তিন সন্তানের মা ৩৯ বছর বয়সী রোজিনা খাতুনকে বাংলাদেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সাময়িকভাবে তাকে দুই মাসের জন্য সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম নর্থজার্সি.কম এই খবর জানিয়েছে। এর আগে গত সোমবার তার স্বামী আমিনুল হক বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। ইমিগ্রেশন ও কাস্টম ইনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভাগের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রোজিনাকে পিটার ডব্লিউ রোডিনো ফেডারেল ভবনে ডেকে পাঠান। নিজের ১৯ বছরের মেয়ে ও ১১ বছরের ছেলে এবং আইনজীবীকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন তিনি। দুই মাসের স্থগিতাদেশ পাওয়ার পর রোজিনার ১৯ বছরের মেয়ে ইভানা বলেন, বাড়ি ফেরার জন্য সময় পাওয়ায় তারা স্বস্তি বোধ করছেন। তিনি জানান, আরও বিকল্প খোঁজার চেষ্টা ছাড়াও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তার বাবার কাছে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে ভাবছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অপরাধে জড়িত অবৈধ অভিবাসীদের তালিকা ও ফেরত পাঠানোর নির্বাহী আদেশ দেন। ট্রাম্পের এই নির্দেশে অনথিভুক্ত ও অপরাধে জড়িতদের ফেরত পাঠানোর কথা বলা হলেও কোনও ধরনের অপরাধে জড়িত নয় কিংবা অভিযোগ থাকলেও সাজাপ্রাপ্ত নয় এমন অভিবাসীদেরও আটক করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এমনকি অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাতের সময়ও তাদের আটক করা হচ্ছে। রোজিনা ও তার স্বামী আমিনুলের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এ দম্পতি ২০০৪ সালে দুই সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। স্থানীয় বটসোয়ানায় একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ চালাতেন তারা। ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ পার হয়ে গেলে তারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতাকে কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানান। তাদের সেই আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। আপিল খারিজ করে দিয়ে ২০০৭ সালেই তাদের প্রত্যাবাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছর পর এই দম্পত্তির তৃতীয় সন্তান এরিকের জন্ম হয়। ১১ বছরের এই সন্তান এখন মার্কিন নাগরিক। ২০১০ সালে অভিবাসন কর্মকর্তারা আমিনুলকে আটক করেন। এলিজাবেথ কন্ট্রাক্ট ডিটেনশন সেন্টারে ১১ মাস আটক রাখা হয় তাকে। আর রোজিনার পায়ের গোড়ালিতে ট্র্যাকার ও নজরদারিতে রাখা হয়। কোনও রকম ব্যাখ্যা ছাড়াই ২০১১ সালের অক্টোবরে আমিনুলকে মুক্তি দেওয়া হয়। কয়েক মাস পর রোজিনার ট্র্যাকারও খুলে নেওয়া হয়। আরও পড়ুন: এফবিআইয়ের অভিযোগ ১৩ রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে এরপর সরকারি কর্মকর্তারা তাদের ফেরত যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকার অনুমতি দেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত অভিবাসন কর্মকর্তাদের নিয়মিত সাক্ষাতে কখনও অনুপস্থিত হননি এই দম্পতি। প্রতি ছয় মাস অন্তর তাদের অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হতো। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাদের বছরে একবার সাক্ষাৎ করার জন্য বলা হয়। কিন্তু গত বছর তাদের তিন ও ছয় মাস অন্তর সাক্ষাতের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদেরকে দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য নতুন তারিখ এবং কাজের অনুমতি নবায়ন করা হয়। ২০১৭ সালের নভেম্বরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাতে গেলে তাদের ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশে আমিনুলের পরিবার হতভম্ব হয়ে পড়েন। ১৭ জানুয়ারি অভিবাসন কর্মকর্তারা বাসা থেকে আমিনুলকে তুলে নিয়ে যান। কয়েক ঘণ্টা পর তিনি পরিবারকে ফোনে জানান তাকে আটক করা করা হয়েছে। সোমবার তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশে পৌঁছান। আইসিইর এক মুখপাত্র এমিলিও ডাবুল জানান, রোজিনার বিষয়টি মামলার সুনির্দিষ্ট অবস্থার প্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করা হবে। যেমনটা সব মামলার ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন আর/১০:১৪/১৭ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2GqEhLp
February 18, 2018 at 05:34AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন