ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি- দুদিন ধরেই ভাবছিলাম তাঁর সম্পর্কে কিছু লিখব। মনের অখণ্ড অনুভূতিগুলো জড়ো করব; কিন্তু পারলাম না। সকাল থেকেই বারবার কি-প্যাডের ওপর অত্যাচার চলছে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল, এখনো গুছিয়ে লেখার সাহস করতে পারলাম না। শুধু বারবার মনে হচ্ছে, হুমায়ুন ফরীদি ছয় বছর ধরে আমাদের সঙ্গে নেই? জ্ঞানের ভান্ডার নিয়ে যিনি বিরাজ করতেন আমাদের চারপাশে, তার জ্ঞান ছয় বছর ধরে আমরা স্পর্শ করছি না? প্রকৃতির নিয়মে মানুষ চলে যায়। চলে যাবেই। কিন্তু অমরত্ব পান কজন? আমার মনে হয়, হুমায়ুন ফরীদি সেই গুটিকয়েক ক্ষণজন্মা মানুষের একজন। তাঁর দেহাবসান হলেও জীবনাবসান হয়নি। তাঁর জিয়নকাঠি তত দিন জ্বলবে, যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, যত দিন বাংলাদেশে মঞ্চ থাকবে, নাটক থাকবে, চলচ্চিত্র থাকবে। একজন অভিনয়শিল্পী সব মাধ্যমে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করতে পারেন না। সবার সে ক্ষমতা নেই। সীমাবদ্ধতা থাকাটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে হুমায়ুন ফরীদি পেরেছিলেন। কী মঞ্চে, কী টিভি নাটকে, কী চলচ্চিত্রেএকটা সময় ছিল, তাঁর নামে নাটক চলত, চলচ্চিত্র চলত। এ কারণেই আমরা যারা অভিনয় করি, তাদের আমি দুটি ভাগে ভাগ করতে চাইসৌভাগ্যবান আর দুর্ভাগা। আমার মনে হয়, যাঁরা হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা সবচেয়ে সৌভাগ্যবান অভিনয়শিল্পী। আমি সেই ভাগ্যবানদের একজন। এমন মহিরুহ যখন পাশে থাকতেন, নিজেকে তুচ্ছ মনে হতো। প্রতি মুহূর্তে ভাবতাম, আহা, কত কিছুই জানি না। পারি না। মানি না। বড় শিল্পী হতে হলে যে বড় মানুষ হতে হয়, হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে যত জেনেছি, তত বেশি অনুধাবন করেছি। একটি গল্প শুনেছিলাম। শীতকালে ফরীদি ভাই অনেক রাতে নিজের গাড়ি করে ফিরছিলেন। হঠাৎ বিজয় সরণি মোড়ে তিনি গাড়ি থামালেন। দেখলেন, একজন অশীতিপর বৃদ্ধ ঠান্ডায় কাঁপছে। পরনে তাঁর লুঙ্গি ছাড়া কিছুই নেই। ফরীদি ভাই সে সময় নিজের কোট আর শার্ট খুলে ওই বৃদ্ধকে পরিয়ে দিয়ে আসলেন। ফরীদি ভাই বাড়ি ফিরলেন খালি গায়ে। এ রকম আরও অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। স্মৃতিকথা আছে, যা এখন আমরা সবাই বলছি। আরও পড়ুন: অপুকে ডিভোর্স দেওয়ার কারণ জানালেন শাকিব ফরীদি ভাই, আপনি কখনো নায়ক হতে চাননি। হতে চেয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু দেখুন, আজ এত দিন পরও আপনি আমাদের কাছে, সাধারণ মানুষের কাছে নায়ক হয়েই আছেন। এমন নায়ক কজন হতে পারে? অনেক অনেক ভালোবাসা, দোয়া আপনার জন্য। ওপারে নিশ্চয়ই ভালো আছেন। আমি অন্তত আপনার সেই ট্রেডমার্ক হাসির শব্দ শুনছি! এভাবেই ভালো থাকবেন, সব সময়। (জয়া আহসানের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত) সূত্র: প্রথম আলো আর/০৭:১৪/১৪ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2CkHjy2
February 14, 2018 at 01:45PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top