কলকাতা, ১৯ ফেব্রুয়ারি- পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে প্রেমিকাকে খুন করেন রাজীব কুমার নামের এক ব্যাংকার। আর খুনের পর স্বামীকে বাঁচাতে লাশ গুম করতে সহায়তা করেছেন রাজিবের স্ত্রী মনীষা। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ওই রাজ্যের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দুটি শাখার ম্যানেজার রাজীব ও মনীষা দম্পত্তি। একই ব্যাংকের রিলেশনশিপ কর্মকতা শিল্পা। স্ত্রী মনীষার অনুপস্থিতিতে শিল্পা আগরওয়ালকে বাসায় নিয়ে যান রাজীব। সেখানে তারা রাতযাপন করেন। মদসহ ককটেল ডিনার খান। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াও বাধে। এসময় শিল্পা রাজিবকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু এর জেরেই ভোররাতে বালিশ চাপা দিয়ে শিল্পাকে হত্যা করেন রাজীব। দুদিন পর বাসায় ফিরে স্বামীর কাছ থেকে এই খুনের কথা জানেন স্ত্রী মনীষা। সব শুনে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে স্বামীকে বাঁচাতে সহায়তা করেন মনীষা। প্রথমে হত্যাকে আত্মহত্যা প্রমাণের চেষ্টা, ফ্রিজে লাশ ঢুকিয়ে রাখার পর ট্রলি ব্যাগে করে লাশ ফেলে রাখায় পাশে থাকেন তিনি। অজ্ঞাত অবস্থায় পুলিশ শিল্পার লাশ পাওয়ার পর তদন্তের একপর্যায়ে রাজীব-মনীষাকে গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে শিল্পাকে খুনের বিস্তারিত তুলে ধরেন রাজীব। তিনি জানান, স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিল্পাকে দুর্গাপুরের ফ্ল্যাটে ডাকেন। সেখান রাতযাপনের পর পরদিন সকালে রাজীবকে ব্রেকফাস্ট করেও খাওয়ান শিল্পা। এর পর বিয়ে করার জন্য চাপাচাপি করে দিন কাটে তাদের। পরে রাতে বাইরে থেকে ভারী খাবার এনে খান রাজীব। সঙ্গে ছিল বিভিন্ন মদের ককটেল। একসময়ে উভয়েই ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু ভোররাতে শিল্পাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে বসেন রাজীব। খুনের সময় রাজীবের স্ত্রী মনীষা ফ্ল্যাটে ছিলেন না। ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি ফ্ল্যাটে ফিরলে রাজীব তার কাছে সব স্বীকার করে। একে পারিবারিক সংকট মনে করে রাজীবের পাশে দাঁড়ান মনীষা। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ফন্দি করেন গলায় শিল্পার মৃত্যুকে তারা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেবেন। এ জন্য শিল্পার লাশ ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেন। তারপর দেহ নামিয়ে শিল্পাকে নগ্ন করে প্লাস্টিকে মুড়ে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন রাজীব-মনীষা। দুদিন পর ফ্রিজ থেকে লাশ বের করে ট্রলিব্যাগে ভরে বেনাচিতি আবাসনের স্টোররুমের সামনে রেখে দেন তারা। পুলিশ জানায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে একটি ট্রলিব্যাগ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘ সময় ধরে সেটি একই অবস্থায় পড়েছিল। এতে সন্দেহ তৈরি হলে তারা পুলিশকে খবর দেন। আরও পড়ুন: বেলঘরিয়ায় পথ দুর্ঘটনায় নিহত ২ এর পর পুলিশ এলে ট্রলিব্যাগের ভেতর প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, তারা শিল্পাকে ব্যাংকার দম্পতির ফ্ল্যাটে আসতে দেখেছিলেন। পুলিশ জানায়, ৯ ফেব্রুয়ারি আসানসোলে মাসির বাড়ি যাওয়ার জন্য বাঁকুড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন শিল্পা। সেখান থেকেই বাড়ির সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। এর পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ শিল্পার মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ধরে তদন্ত শুরু করে। এতে দেখা যায়, তার শেষ মোবাইল লোকেশন ছিল দুর্গাপুরের নইমনগর। সেখানেই রাজীবের ফ্ল্যাট। তাদের অ্যাপার্টমেন্টের স্টোররুমের সামনে থেকেই শিল্পার লাশ পাওয়া যায়। প্রথমে শিল্পার পরিবার জানিয়েছিল, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য শিল্পার কাছ থেকে রাজীব এক লাখ রুপি ধার নিয়েছিলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের তদন্তে জানা গেল পরকীয়ার বলি হয়েছেন শিল্পা। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন আর/১০:১৪/১৯ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2EEUNLd
February 20, 2018 at 04:38AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top