ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি- ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দুই-তিন ম্যাচে যেন উড়ছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় (১৬৩ রানে) ব্যবধানে। জিম্বাবুয়েকে দুবার পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফিটা যেন হেসে-খেলেই ঘরে তুলে নিচ্ছে টিম বাংলাদেশ- এমনটাই ধারণা ছিল সবার; কিন্তু হায়, কোথা থেকে কী হয়ে গেলো! বাংলাদেশ অলআউট মাত্র ৮২ রানে। হেসে-খেলে শ্রীলঙ্কাই জিতলো ১০ রানে। লঙ্কানদের কামব্যাক শুরু ওই ম্যাচ থেকেই। এরপর ফাইনালেও বাংলাদেশ হারলো ৭৯ রানের ব্যবধানে। ২২২ রানও করতে পারলো না নিজেদের ইতিহাসে প্রথম ট্রফিটি জেতার জন্য। টেস্ট সিরিজেও পড়লো ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষের অংশের পারফরম্যাচের প্রভাব। চট্টগ্রাম টেস্টে নিশ্চিত হারতে বসেছিল। লঙ্কানদের পরিকল্পনামতই যেন সব কিছু এগুচ্ছিল; কিন্তু মুমিনুল আর লিটন দাস অসাধারণ ব্যাটিং করে লঙ্কানদের আর জিততে দিলো না। পরিবর্তিত শ্রীলঙ্কাকে পূর্ণরূপে ঢাকায় এসে দেখলো টিম বাংলাদেশ। মাত্র আড়াই দিনেই ২১৫ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় ঘটলো বাংলাদেশের। টেস্ট সিরিজে এমন ভরাডুবির পর একটা প্রশ্নই বড় করে দেখা দিয়েছে, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে যদি বাংলাদেশের কোচ থাকতেন তাহলে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের ফল কী হতে পারতো? এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের বিদগ্ধ ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরাও দুভাগ হয়ে গেছেন। যদিও অধিকাংশেরই বক্তব্য হলো, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কৌশলের কাছেই মার খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরুর আগে থেকেই এ আওয়াজ খুব জোরালোভাবে শোনা গিয়েছিল। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, বর্তমান বোর্ড পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান পর্যন্ত মুখফুটে বলেছিলেন, হাথুরু না আবার ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়! অনেকেই তখন বলেছিলেন, হাথুরু যেহেতু সদ্য বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছেড়েছেন। এখানকার আবহাওয়া, পরিবেশ, ক্রিকেটারদের ভেতরের খবর- সবই তার জানা। সুতরাং, বাংলাদেশের বিপক্ষে তার কৌশলও হবে তেমন। ক্রিকেটারদের দুর্বলতাগুলো সহজেই তিনি খুঁজে পাবেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। সুতরাং, ত্রিদেশীয় এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষের নাম হাথুরুসিংহে। তবে ক্রিকেটাররা এটা মানতে রাজি ছিলেন না। মানছিলেন না টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সমর্থক-অনুরাগীদের কেউ কেউ। বারবার হাথুরুর কৌশলের কাছে মার খাওয়ার পরও এই অংশের চোখ খুলছে না। জাতীয় দলের বর্তমান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন পর্যন্ত তার সঙ্গে হাথুরুর পার্থক্যের কথা জানাতে গিয়ে বলেছেন, এক্সিকিউশনই (কার্যকরভাবে প্রয়োগ) মূল পার্থক্য। ক্রিকেটাররা তো বলেই দিয়েছেন, হাথুরুর বিষয় নিয়ে আমরা এখন আর কিছুই ভাবতে রাজি নই। নিজেদের খেলার দিকেই মনযোগ দিতে চাই। ভারপ্রাপ্ত কোচ রিচার্ড হ্যালসল বলেছিলেন, হাথুরু তো আর মাঠে এসে বল করে দিয়ে যাবেন না কিংবা ব্যাটিং করে দেবেন না। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ প্রায় শেষ হওয়ার মুহূর্তে দাঁড়িয়ে অধিকাংশই স্বীকার করছেন, হাথুরুর কৌশলের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ। এবার খোদ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজেই জানালেন, বাংলাদেশে অর্জিত অভিজ্ঞতাই তিনি কাজে লাগাচ্ছেন তিনি এখানকার দলটিকে পরাজিত করার জন্য। এ ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন বলেই তিনি মনে করেন এবং এজন্য তিনি খুশি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ এতটা খারাপ খেলেছে বলেও অবাক হচ্ছেন তিনি। সিলেটে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে আসলে হাথুরুসিংহেকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতাই কী তবে মূল পার্থক্য তৈরি করে দিচ্ছে? জবাবে হাথুরু স্বীকারই করলেন বিষয়টা। বাংলাদেশে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই তিনি সফল। নিজের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে এভাবে সফল হলে কে না খুশি থাকে! হাথুরুও বেশ খুশি। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি, অবশ্যই হ্যাঁ। সত্যি কথা বলতে (আমার অভিজ্ঞতা থাকার কারণে) খেলোয়াড়দের ধরে ধরে আমি কৌশল সাজাতে পেরেছি। আমি তো জানি, চাপে পড়লে তারা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, কীভাবে খেলে। প্রথম দুই ম্যাচে আমাদের জন্য তারা খুবই কঠিন ছিল। এবং এটা আমি প্রত্যাশাও করেছিলাম। যদি এমনটা না হতো, তাহলে আমি নিজেই সবচেয়ে বেশি হতাশ হতাম। কারণ, আমি পেছনে কিছু ফেলে আসি না। এ কারণে, আমি এসব নিয়ে ছিলাম খুশি। এবং দেখুন, এরপর যেভাবে আমার দল কামব্যাক করেছে- তাতেও আমি খুশি। সবচেয়ে বড় কথা, ব্যক্তিগত পয়েন্ট থেকে আমি বলব, এটা ছিল আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সফল একটি সফর। এ কারণে আমি খুশি। তবে বাংলাদেশের এতটা খারাপ পারফরম্যান্সেও খুব অবাক হয়েছেন হাথুরু। এতটা ভেঙে পড়বে বাংলাদেশ দল- এটা কল্পনাই করতে পারেননি তিনি। হাথুরু পরক্ষণেই বলেন, আবারও বলি, আমি চলে যাওয়ার পরও চেয়েছিলাম বাংলাদেশ অনেক ভালো করবে। কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবে। আমি আসলে তাদের ওপর খুব নজর রাখছিলাম যে, তারা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যায়, সেটা দেখার জন্য। সূত্র: জাগোনিউজ২৪ আর/১৭:১৪/১৭ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2Gnaovq
February 17, 2018 at 11:55PM
17 Feb 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top