চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের পদ্মা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৩৬টি সরকারী ও বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষামান দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে না যাওয়াসহ নানান জটিলতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সহস্রাধিক শিশুর শিক্ষাজীবন।
সরজমিনে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা, উজিরপুর, দূর্লভপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি বেশীর ভাগই নদীর তীরে অবস্থিত। এই এলাকায় ‘সবার জন্য প্রাথমিক শিা’ শুধুমাত্র ‘কাগজে-কলমে’ সীমাবদ্ধ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিকরা ঠিকমত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে মাসের শেষে একদিন গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বার করে আসেন। এলাকার কোন বেকার ও নিজের কোন আত্মীয়ের সাথে মাসিক ৪/৫ হাজার চুক্তির ভিত্তিতে কাশ করান। আর এ সমস্ত ভাড়াটিয়া শিকরা দায়িত্ব পালন করেন দায়সারাভাবে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেনা। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি দূর্গম এলাকা হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ ঠিকমত বিদ্যালয় পরিদর্শন করেননা। উপজেলা সদরে বসেই কাগজে কলমে পরির্দশনের কাজ সেরে ফেলেন।
স্থানীয়রা জানায়, শিার মান কমে যাওয়ায় পিএসসি পাস করা অনেক শিক্ষার্থী নিজের নাম ঠিকানাটাও ঠিকমত লিখতে পারেননা। আর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই অনেক শিক্ষার্থী পরিবারের অভাব অনটন দূর কতে ঝুঁকে পরেন উপার্জনের দিকে। সূত্র জানায়, চরাঞ্চলের শিশুরা শিা হতে বঞ্চিত হয়ে আসছে প্রায় ২৫/৩০ বছর থেকে।
এলাকাবাসী জানায়, সাম্প্রতিককালে এলাকায় নতুন নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠলেও বেশিভাগ বিদ্যালয়ই অস্থায়ীভাবে খড়ের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে নতুন করে তৈরী। বিদ্যালয়গুলোতে শিার ভাল কোন পরিবেশ নেই বললেই চলে। শিার্থীর সংখ্যা খুবই কম। ত্ওা আবার ঠিক মত কাশ না হওয়ায় খেলাধূলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে শিক্ষার্থীরা।
পাকা ইউনিয়নের সবচেয়ে পুরাতন ১৯৪৭ সালে স্থাপিত চরপাকা সরকারী বিদ্যালয়ে ২শ ৩৭ জন শিার্থীর জন্য শিকের পদ ৭টি থাকলেও কাগজে কলমে আছেন ৪জন। তার মধ্যে একজন ডেপুটেশনে অন্যত্রে চাকুরী করছেন। ২০১৪সালে প্রধান শিক অবসরে যাবার পর এখন পযর্ন্ত প্রধান শিক যোগদান না করায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক হিসাবে হানিফা বেগম দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় অভিভাবক জাকেরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিদ্যালয় হতে পিএসসি পাস করা শিার্থী নিজের নাম লিখতে পারে না। বাংলা উচ্চারণ করতে পারেনা’।
মোসা: শুকতারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি করার পর শুধু বিদ্য্লায়ে যায় আর আসে। কিছুই লিখতে পারে না। এখানে শিার কোন পরিবেশ নেই’। শুধু চরপাকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ই নয়, ঐ এলাকার চরপাকা কদমতুলি চরপাকা মধ্যপাড়া, চরপাকা সরদারপাড়া, কটাপাড়া, নিশিপাড়া, উজিরপুর, দনি উজিরপুর, পূর্ব পাকা, চরহাসানপুর চাঁইপাড়া ও চরপাকা লীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তিনটি ইউনিয়নের ২৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারী প্রায় ১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিা ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় শিার মান হারাচ্ছে।
স্থানীয় খাইরুর ইসলাম, মতিউর রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, এ তিন ইউনিয়নে প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিকরা বিভিন্ন অজুহাতে ঠিমমত বিদ্যালয়ে আসেন না। কেউ কেউ আসলেও দু এক ঘন্টা থেকে চলে যায়। ঠিক মত কাশ নেয় না। একজনের বদলে অন্যজনকে দিয়ে কাশ করান। পরিচালনা কমিটিগুলো প্রভাবশালীরাই দখল করে আছেন। তবে চরমধ্যপাড়া, চরপাকা সরদারপাড়া ও চরপাকা কদমতুলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক ইসমাইল, তৌহিদুর রহমান, শামসুল আলমসহ আরো কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে দূর্গম এলাকা হওয়ায় কোন কোন েেত্র কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেন।
এব্যাপারে পাকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওযামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহামন পদ্মা নদী ভাঙ্গন কবলিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির দূরাবস্থা ও শিার মান হ্রাসের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেলা প্রশাসনের হস্তেেপর মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রেস কাবের নির্বাহী সদস্য ও উপজেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি তোহিদুল আলম টিয়ার মতে ভাঙ্গন কবলিত বিদ্যালয়গুলিকে দ্রুত স্থানান্তর করে স্যোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে আকর্ষনীয় করে তোলা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে ঘনঘন নজরদারীর মাধ্যমে শিার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিা অফিসার সেরাজুল ইসলাম বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগগুলি অস্বীকার করে বলেন, দূর্গম এলাকা হওয়ায় সামান্য কিছু সমস্য রয়েছে যে গুলি সমাধানের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ১৮-০২-১৮
সরজমিনে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা, উজিরপুর, দূর্লভপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি বেশীর ভাগই নদীর তীরে অবস্থিত। এই এলাকায় ‘সবার জন্য প্রাথমিক শিা’ শুধুমাত্র ‘কাগজে-কলমে’ সীমাবদ্ধ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিকরা ঠিকমত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে মাসের শেষে একদিন গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বার করে আসেন। এলাকার কোন বেকার ও নিজের কোন আত্মীয়ের সাথে মাসিক ৪/৫ হাজার চুক্তির ভিত্তিতে কাশ করান। আর এ সমস্ত ভাড়াটিয়া শিকরা দায়িত্ব পালন করেন দায়সারাভাবে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা যথাযথভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেনা। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি দূর্গম এলাকা হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ ঠিকমত বিদ্যালয় পরিদর্শন করেননা। উপজেলা সদরে বসেই কাগজে কলমে পরির্দশনের কাজ সেরে ফেলেন।
স্থানীয়রা জানায়, শিার মান কমে যাওয়ায় পিএসসি পাস করা অনেক শিক্ষার্থী নিজের নাম ঠিকানাটাও ঠিকমত লিখতে পারেননা। আর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই অনেক শিক্ষার্থী পরিবারের অভাব অনটন দূর কতে ঝুঁকে পরেন উপার্জনের দিকে। সূত্র জানায়, চরাঞ্চলের শিশুরা শিা হতে বঞ্চিত হয়ে আসছে প্রায় ২৫/৩০ বছর থেকে।
এলাকাবাসী জানায়, সাম্প্রতিককালে এলাকায় নতুন নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠলেও বেশিভাগ বিদ্যালয়ই অস্থায়ীভাবে খড়ের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে নতুন করে তৈরী। বিদ্যালয়গুলোতে শিার ভাল কোন পরিবেশ নেই বললেই চলে। শিার্থীর সংখ্যা খুবই কম। ত্ওা আবার ঠিক মত কাশ না হওয়ায় খেলাধূলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে শিক্ষার্থীরা।
পাকা ইউনিয়নের সবচেয়ে পুরাতন ১৯৪৭ সালে স্থাপিত চরপাকা সরকারী বিদ্যালয়ে ২শ ৩৭ জন শিার্থীর জন্য শিকের পদ ৭টি থাকলেও কাগজে কলমে আছেন ৪জন। তার মধ্যে একজন ডেপুটেশনে অন্যত্রে চাকুরী করছেন। ২০১৪সালে প্রধান শিক অবসরে যাবার পর এখন পযর্ন্ত প্রধান শিক যোগদান না করায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক হিসাবে হানিফা বেগম দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় অভিভাবক জাকেরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিদ্যালয় হতে পিএসসি পাস করা শিার্থী নিজের নাম লিখতে পারে না। বাংলা উচ্চারণ করতে পারেনা’।
মোসা: শুকতারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি করার পর শুধু বিদ্য্লায়ে যায় আর আসে। কিছুই লিখতে পারে না। এখানে শিার কোন পরিবেশ নেই’। শুধু চরপাকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ই নয়, ঐ এলাকার চরপাকা কদমতুলি চরপাকা মধ্যপাড়া, চরপাকা সরদারপাড়া, কটাপাড়া, নিশিপাড়া, উজিরপুর, দনি উজিরপুর, পূর্ব পাকা, চরহাসানপুর চাঁইপাড়া ও চরপাকা লীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তিনটি ইউনিয়নের ২৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারী প্রায় ১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিা ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় শিার মান হারাচ্ছে।
স্থানীয় খাইরুর ইসলাম, মতিউর রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, এ তিন ইউনিয়নে প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিকরা বিভিন্ন অজুহাতে ঠিমমত বিদ্যালয়ে আসেন না। কেউ কেউ আসলেও দু এক ঘন্টা থেকে চলে যায়। ঠিক মত কাশ নেয় না। একজনের বদলে অন্যজনকে দিয়ে কাশ করান। পরিচালনা কমিটিগুলো প্রভাবশালীরাই দখল করে আছেন। তবে চরমধ্যপাড়া, চরপাকা সরদারপাড়া ও চরপাকা কদমতুলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক ইসমাইল, তৌহিদুর রহমান, শামসুল আলমসহ আরো কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে দূর্গম এলাকা হওয়ায় কোন কোন েেত্র কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেন।
এব্যাপারে পাকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওযামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহামন পদ্মা নদী ভাঙ্গন কবলিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির দূরাবস্থা ও শিার মান হ্রাসের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেলা প্রশাসনের হস্তেেপর মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রেস কাবের নির্বাহী সদস্য ও উপজেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি তোহিদুল আলম টিয়ার মতে ভাঙ্গন কবলিত বিদ্যালয়গুলিকে দ্রুত স্থানান্তর করে স্যোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে আকর্ষনীয় করে তোলা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে ঘনঘন নজরদারীর মাধ্যমে শিার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসতে পারে।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিা অফিসার সেরাজুল ইসলাম বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগগুলি অস্বীকার করে বলেন, দূর্গম এলাকা হওয়ায় সামান্য কিছু সমস্য রয়েছে যে গুলি সমাধানের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ১৮-০২-১৮
from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2sDvgMJ
February 18, 2018 at 09:49PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন