ঢাকা, ০৮ ফেব্রুয়ারি- দীর্ঘ ৪ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে আব্দুর রাজ্জাকের প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে রাজকীয়। মাঠে নামার শুরুর দিকেই দিমুথ করনারত্নেকে ফিরিয়ে চমক দেখান তিনি। এরপর লঙ্কান শিবিরে জোড়া আঘাত হেনে তা অব্যাহত রাখলেন এ অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। নিজের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম দুই বলে ফিরিয়ে দেন দানুষ্কা গুনাথিলাকা ও অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকে। হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি। এদিকে, তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দিয়েছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দুজনের স্পিন বিষে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে কাঁপছে শ্রীলঙ্কা। সফরকারীরা ৫৭.১ ওভারে ২০৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে। ৪ উইকেট শিকার করে প্রত্যাবর্তন রাঙিয়েছেন রাজ্জাক। আর ৪ উইকেট ঝুলিতে ভরে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন তাইজুলও। কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানও পেয়েছেন ২ উইকেট। তিনি আকেলা ধনাঞ্জয়া ও হেরাথকে তুলে নেন। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ার) মিরপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। দলীয় ১৪ রানে লিটন দাসের স্ট্যাম্পিং বানিয়ে দিমুথ করনারত্নেকে ফিরিয়ে চমক দেখান অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। এরপর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে এগিয়ে যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। ধীরে ধীরে জমাট বেঁধে উঠছিল তাদের জুটি। বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিলেন তারা। এ পরিস্থিতিতে ডি সিলভাকে (১৯) ফিরিয়ে কার্যকরী ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ৬২ রানে গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করাব্যাটসম্যানকে স্লিপে সাব্বির রহমানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। এতে ভাঙে ৪৭ রানের জুটি। পরে দানুষ্কা গুনাথিলাকাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস। তবে তাদের বেশি দূর এগোতে দেননি রাজ্জাক। দলীয় ৯৬ রানে লঙ্কান শিবিরে জোড়া আঘাত হেনে চমক অব্যাহত রাখেন তিনি। পর পর দুই বলে ফিরিয়ে দেন গুনাথিলাকা ও অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকে। এতে বিপর্যয়ে থেকে লাঞ্চ বিরতিতে যায় অতিথিরা। লাঞ্চ থেকে ফিরলেও শনির দশা কাটেনি শ্রীলঙ্কার। একের পর এক টপ অর্ডারব্যাটসম্যান ফিরলেও ভরসা হয়ে টিকেছিলেন মেন্ডিস। অবেশেষে দলীয় ১০৯ রানে বোল্ড করেতাকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা সরান সেই রাজ্জাক। ফলে লংকানদের ওপর নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ফেরার আগে ৯৮ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮ রানের বীরোচিত ইনিংস খেলেন মেন্ডিস। আরও খবর: আবারও কোহলির সেঞ্চুরি : রানের পাহাড়ে ভারত এ বিপর্যয়ের মধ্যে নিরোশান ডিকভেলাকে বোল্ড করে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার টুঁটি চেপে ধরেন তাইজুল। এ অবস্থায় দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রোশেন সিলভা। তারা এগুচ্ছিলেনও বেশ। দলীয় ১৬২ রানে পেরেরাকে (৩১) ফিরিয়ে সেই প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেন এ বাঁহাতি স্পিনার। এদিকে, মোস্তাফিজুর রহমান ভালো বোলিং করেও পাচ্ছিলেন না উইকেট। একবার সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সাব্বির স্লিপে ক্যাচ ছাড়ায় উইকেটের স্বাদ পাওয়া হয়নি মোস্তাফিজের। অবশেষে নবম ওভারের প্রথম বলে মোস্তাফিজুর রহমান পেলেন কাঙ্খিত উইকেট। আকেলা ধনাঞ্জয়া মুস্তাফিজের স্লোয়ারে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে। সহজ ক্যাচ একটু কঠিন করে তালুবন্দি করেন মুশফিক। ২০ রান করেন আকেলা ধনাঞ্জয়া। এরপর হেরাথ কে সাজঘরের পথ দেখান মোস্তাফিজ। ঠিক একই রকম বল, ঠিক একই ধরণের আউট। তবে বলটি বাউন্স পেল আগেরটির থেকে বেশি। চা-বিরতির আগে আকেলা ধনাঞ্জয়কে মোস্তাফিজ যেভাবে আউট করেছিলেন ঠিক একইভাবে আউট করেন রঙ্গনা হেরাথকে। কভারে দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরেন সেই মুশফিক। ২ রান আসে হেরাথের ব্যাট থেকে। তার আউটের সময় শ্রীলঙ্কার রান ২০৭। শ্রীলঙ্কার শেষ আঘাতটি আনেন সেই তাইজুল দলীয় ২২২ রানে অল আউট শ্রীলঙ্কা। এটি তাইজুলের ৪ শিকার। স্কোর: শ্রীলঙ্কা: ২২২/১০ (৬৫.৩ ওভারে), সুরঙ্গা লাকমাল (৪)। আউট: দিমুথ করুনারত্নে (৩), ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (১৯), দানুশকা গুনাথিলাকা (৮), দিনেশ চান্দিমাল (০), কুশল মেন্ডিস (৬৮), নিরোশান ডিকাভেলা (১), দিলরুয়ান পেরেরা (৩১), আকেলা ধনাঞ্জয়া (২০), রঙ্গনা হেরাথ (২), রোশন সিলভা (৫৬) । বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাশ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, মুস্তাফিজুর রহমান। শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ করুনারত্নে, কুশল মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, রোশন সিলভা, দিনেশ চান্দিমাল, নিরোশান ডিকাভেলা, দানুশকা গুনাথিলাকা, দিলরুয়ান পেরেরা, আকেলা ধনাঞ্জয়া, রঙ্গনা হেরাথ, সুরঙ্গা লাকমাল। আর/১৭:১৪/০৮ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2Eue7da
February 08, 2018 at 11:09PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন