ছাতক প্রতিনিধি :: পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) নিয়মানুযায়ী গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ছাতকের ৯টি পিআইসির মধ্যে এখনো কাজ শুরু করেনি ৫টি পিআইসি।
পাউবো’র দেয়া সময়সীমা পারে হতে আর মাত্র ১২ দিন বাকি থাকায় এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলে স্থানীয়দের ধারনা। তাই অকাল বন্যা বা পাহাড়ি ঢলের হাত থেকে হাওরের প্রধান ফসল বোরো ধান রক্ষার বিষয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এখানকার কৃষকেরা।
এতে উপজেলা পিআইসি কমিটির গাফিলতিকে দায়ী করছেন তারা।
জানা যায়, উপজেলার সর্ববৃহৎ নাইন্দার হাওরে গত (১৫ফেব্রুয়ারি) নির্বাহী অফিসার সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এখানে ৫নং পিআইসি ছাড়া এখনো বাকি পিআইসির কাজ শুরু হয়নি। ফলে আগাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এ হাওরের ফসলহানির আশংকা রয়েছে।
নোয়ারাই ইউপির নাইন্দার হাওরে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে ৫টি, জাউয়া ও চরমহলা ইউপির ডেকার হাওরে আরো ২টিসহ ৭টি পিআইসি গঠন করা হয়। এছাড়া সিংচাপইড় ইউপির চাউলীর হাওরের বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য গঠন করা হয় আরও ২টি পিআইসি।
পাউবো সুত্রে জানা যায়, গত (২৮ নভেম্বর) উপজেলা পিআইসি মনিটরিং কমিটি কর্তৃক প্রেরিত ৩১টি স্কিমের মধ্যে ৭ জানুয়ারি জেলা কমিটির সভায় অনুমোদিত হয় ৭টি কমিটি। উপজেলা কমিটিকৃত অনুমোদিত ৩১টি স্কিমের মধ্যে ২৪টি বাতিল ও ৭টি স্কিম বোর্ডের আলোকে রাখা হয়।
নাইন্দার হাওরের ৫৩.৮৮৫ কি.মি দৈর্ঘ্যের বাঁধের মধ্যে ১৫.৭৯০ কি.মি. দৈর্ঘের বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য এডিপি থেকে ৫১.৯৪ লক্ষ এবং এনডিআর থেকে ২০ লক্ষ টাকা, ডেকার হাওরের জন্য এডিপি থেকে ১.৫৯ লক্ষ টাকা এনডিআর থেকে ২৪.৮৫ লক্ষ টাকা এবং চাউলীর হাওরের জন্য এনডিআর থেকে ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে নাইন্দার হাওরের ৩টি ও চাউলীর হাওরের ২টি পিআইসি কমিটি এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি।
এদিকে চাউলীর হাওরে এনডিআর থেকে বরাদ্দকৃত ৫৭ লক্ষ টাকার মধ্যে মাত্র সাড়ে সাত লক্ষ টাকা স্থানীয় পিআইসি কমিটিকে বরাদ্দ দেওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি, ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছির উল্লাহ খানের উপর। একপর্যায়ে গত (১৩ ফেব্রুয়ারি) সোমবার বাঁধ এলাকায় বসবাসরত কৃষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে সেবা চত্বরে। এ খবর পেয়ে পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর ছিদ্দিক ভূইয়া তৎক্ষনাৎ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে রাত অনুমান দেড়টায় বিক্ষোভকারীদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। এবং দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার আশ্বাস দেন।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর ছিদ্দিক ভূইয়া জানান, বাঁধের স্কীম তৈরিতে এবং পিআইসি গঠনে বিলম্ব হওয়ার কারণে কাজের প্রক্ষালন দিতে দেরি হচ্ছে। তবে খুব শিগ্রই এসব কাজ শুরু হবে বলে জানান। চাউলীর হাওরের বরাদ্দের ব্যাপার কৃষকদের বিক্ষোভের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দের জন্য যে স্কীম প্রয়োজন সেটা উপজেলা পিআইসি মনিটরিং কমিটি জেলা কমিটিতে পেশ করেননি তাই পুরো টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কে নিয়ে শীগ্রই বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে নতুন করে প্রয়োজনীয় স্কীম তৈরি করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2EyzEy8
February 18, 2018 at 01:11PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন