কলম্বো, ০৮ মার্চ- যে সময়টিতে শ্রীলঙ্কার মাটিতে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে গেছে বাংলাদেশ ও ভারত, সেই মুহূর্হেই জাতিগত বিদ্বেষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দেশটির জনগনের মাঝে। যদিও শ্রীলঙ্কায় জাতিগত বিরোধ বহু পুরনো। তামিল বিচ্ছিন্নবাদীদের দমনে ২৬ বছর ধরে লড়তে হয়েছে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীকে। তামিলরা শিকার হয়েছে ব্যাপক নৃশংসতার। এবার ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ তুলে মুসলিমদের সঙ্গে হানাহানিতে জড়িয়েছে বৌদ্ধরা। জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। এমন সময়ে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন লঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা। শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলের পর্যটন নগরী ক্যান্ডিতে গত রবিবার হঠাৎ করেই মুসলিম-বৌদ্ধ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে দেশব্যাপী ১০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছে সরকার। এই সংঘর্ষের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শান্তির বার্তা দিয়ে বলেছেন, আমরা সবাই কি মানসিকভাবে এতটাই দৈন্য যে আমরা বুঝতে পারছি না বিবেকহীন ও নির্বোধ কাণ্ডকীর্তি আমাদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করছে! আমরা কি মৌলিক মানবিক গুণাবলি হারিয়ে ফেলছি? এক ভিডিওবার্তায় তিনি আরও বলেন, আমি যখন আমাদের শ্রীলঙ্কান ভাইবোনদের চোখের দিকে তাকাই, আমি কিন্তু কোনো পার্থক্য দেখি না। সিংহলিজ, তামিল, মুসলিম-সবার মাঝেই আমি নিজেকে খুঁজে পাই। সবাই আমার আপনজন। আমি তাদের চোখে একই ধরনের প্রত্যাশা ও স্বপ্ন দেখতে পাই। আমি সবার চোখেই দেশের জন্য একই ধরনের ভালোবাসা দেখি। একে অন্যের প্রতিও ভালোবাসা দেখি। আসুন, আমরা নিশ্চিত করি, এই চোখগুলোয় অজ্ঞানতার কারণে যেন কোনো ধরনের অন্ধতা ভর না করে। কোনো ভয় ও সংশয়ও যেন না থাকে। আরও পড়ুন: টসে হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ উল্লেখ্য, আশির দশক থেকে সিংহলিজদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলে আসছিল তামিল টাইগারদের। দীর্ঘ ২৬ বছর পর ২০০৪ সালে রক্তক্ষয়ী সেনা অভিযানে তামিল বিদ্রোহের অবসান হয়। সেসময় বিদ্রোহী এবং তাদের পরিবারের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। নারীদের ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই ইতিহাস সবাইকে স্মরণ করার আহ্বান জানিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বলেছেন, আমরা কি অতীত থেকে কোনো শিক্ষাই নিইনি? আমরা প্রত্যেকের জন্য আমাদের হৃদয় ও মনকে খোলা রাখব। সবাই মিলে আমরা এই জাতিগত বিদ্বেষ ও দাঙ্গার পাগলামি বন্ধ করতে চাই। দৃঢ়তার সঙ্গে সাঙ্গা উচ্চারণ করেছেন, অপরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব। প্রতিবেশীর ভালো-মন্দ দেখাও আমাদের দায়িত্ব। আমরা আমাদের বোনের রক্ষাকবচ, ভাইয়ের রক্ষাকবচ। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে প্রত্যেক শ্রীলঙ্কান নিরাপদ। সূত্র: কালের কন্ঠ আর/১০:১৪/০৮ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2FEJLp2
March 09, 2018 at 04:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন