কলম্বো, ১১ মার্চ- দুই বছর আগে এই মার্চ মাসে (২০১৬ সালের ২৩ মার্চ) ব্যাঙ্গালুরুতে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে বিশ্ব টি-টোয়েন্টি আসরের বড় মঞ্চে নায়ক হওয়ার সুযোগ এসেছিল। শেষ ওভারে ১১ রান দরকার থাকা অবস্থায় পরপর দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়েও জয়ের দোরগোড়ায় গিয়ে নিজের ভুলে হতে গিয়ে খলনায়ক বনে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার আর ভুল করেননি মুশফিক। একা লড়াই করেদলকে অবিস্মরণীয়, ঐতিহাসিক এক জয় উপহার দিয়ে মহানায়ক হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহীম। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শেষ ওভারে চার উইকেট হাতে থাকা অবস্থায় টাইগারদের দরকার ছিল ১১ রানের। ক্রিজে ছিলেন দুই ভায়রা মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোলার ছিলেন ভারতের ফাস্ট মিডিয়াম হার্দিক পান্ডিয়া । প্রথম বলে সিঙ্গেলস নিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। স্ট্রাইক পেয়ে হিসেব একদম সহজ করে ফেললেন মুশফিক। পাঁচ বলে ১০ রান প্রয়োজন থাকা অবস্থায় পরপর দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান মুশফিকুর রহীম। দ্বিতীয় বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারি মুশফিকের। তৃতীয় বলে তিনি স্কুপ করে ভারতীয় অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির পাশ দিয়ে সীমানার ওপারে বল পাঠিয়ে দেন। একদম জয়ের দোরগোড়ায় বাংলাদেশ। লক্ষ্যে পৌঁছাতে তিন বলে দরকার ২ রান; কিন্তু হায়! এমন সাজানো-গোছানো মঞ্চই কি না হঠাৎ ভেঙ্গে গেল! শেষ তিন বলে ওই দুটি মাত্র রান করা হয়নি। চতুর্থ বলটি স্লোয়ার ছুড়লেন হার্দিক পান্ডিয়া। শর্ট অফ লেন্থের ডেলিভারি গতি না ঠাউরে পুল করতে গেলেন মুশফিক। বল আকাশে ভেসে চলে গেল ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা রবীন্দ্র জাদেজার হাতে। তারপরের বলে ভুল পথে হাঁটলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। পঞ্চম বলটি ছিল ফুল টস। ফিল্ডিং লং অফ ও লং অন সীমানার ধারে। অনায়াসে সোজা ব্যাটে খেলে সিঙ্গেলস নিতে পারতেন। তাতে ম্যাচ টাই হয়ে যেত; কিন্তু তা না করে ফুলটস ডেলিভারিকে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে উল্টো ক্যাচ আউট হলেন রিয়াদ। আরও পড়ুন: বাংলাদেশি সমর্থকদের ওপর শ্রীলঙ্কানদের হামলা! শেষ বলে ২ রান দরকার থাকা অবস্থায় শুভাগত হোম ব্যাটে বলে করতে পারেননি। অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজ দৌড়ে আসার আগেই ধোনি বেলস তুলে নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠলেন। ভারতের মাটিতে তাদেরই হারানোর সুবর্ণ সুযোগ হয়েছিল হাতছাড়া। নায়ক হতে হতে খলনায়ক বনে গিয়েছিলেন মুশফিক আর রিয়াদ। দুই বছর পর এবার সত্যি সত্যিই নায়ক মুশফিক। লিটন দাস আর তামিম ইকবাল দারুণ শুরু করে দিলেও মাঝে বাংলাদেশ স্টাইলেই ছন্দপতন। ইনিংসের মাঝামাঝি হঠাৎ ছন্দপতন শুরু হয়। রানের গতি একটু কমে যেতে শুরু করে। উইকেটের পতনও ঘটতে শুরু করে। এরকম অবস্থায় চার নম্বরে নেমে অসীম সাহস, অবিচল আস্থা আর জয়ের অদম্য বাসনায় একা লড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দিলেন মুশফিক। থিসারা পেরেরার করা ইনিংসের শেষ ওভারে ৯ রান প্রয়োজন থাকা অবস্থায় মুশফিক চার বলেই ম্যাচ শেষ করে দিলেন। প্রথম বল এক্সট্রা কভারে ড্রাইভ করে ডাবলস। পরের বলে পয়েন্টে ফ্ল্যাশ করে বাউন্ডারি। তিন নম্বর বলে লং অনে ঠেলে ডাবলস আর চার নম্বর ডেলিভারিকে মিড উইকেটে পাঠিয়েই ঠিক জয়ের লক্ষ্যে পৌছে দিলেন দলকে। সত্যিই এক ঐতিহাসিক জয়। অবিস্মরনীয় জয়। ৩৫ বলে ৭২ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস উপহার দিয়ে দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় জয়ের নায়ক মুশফিক। আগে কখনো ১৬৬ রানের বেশী রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিলনা যে দলের, সে ই বাংলাদেশ আজ কলম্বোর প্রেমাদাস স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার ২১৪ রানের হিমালয় সমান তাড়া করে জিতলো। জয়তু মুশফিক। জয়তু বাংলাদেশ। অভিনন্দন টাইগারদের। সূত্র: জাগোনিউজ২৪



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2IhJQ0j
March 11, 2018 at 01:38PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top