নিজস্ব প্রতিবেদক:: একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেয়া খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরজাহান বেগম ওরফে কাকন বিবি আর নেই। ইন্নালিল্লাহী…রাজিউন। সিলেট এম.এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত সোমবার থেকে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত বুধবার রাত ১১.৩০ মিনিটের সময় এই বীর প্রতীকের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন এম.এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম মাহবুবুল হক। তিনি বলেন শ্বাসকষ্ঠ নিয়ে গত সোমবার এই হাসপাতালে শেষবারের মতো ভর্তি হয়েছিলেন শতবর্ষী কাকন বিবি। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে পরবর্তীতে ডিসেম্বরে দুদফায় ভর্তি হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেন তিনি।
কাকন বিবির জন্ম ১৯৯৫ সালে বলে জানিয়েছেন তার ভাগ্নে ইনছান আলী। মেঘালয়ের নেত্রাই হাসিয়া পল্লীতে তিনি জন্মেছিলেন বলে সুনামগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ স্বীকার করেন। কাকন বিবির স্বামী সাঈদ আলীও প্রয়াত হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ী সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার থানার জিরারগাঁও গ্রামে। ১৯৭১ সালে ৩ দিনের নবজাতক কন্যাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান কাকন বিবি। ১৯৭১ সালের জুন মাসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। কাকন বিবিকে পাকিস্তানী ক্যাম্পে আটক করে দিনের পর দিন তাকে পাশবিক নির্যাতন করে পাকবাহিনী। ছাড়া পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর কাছে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন কাকন বিবি। রহমত আলীর দলে সদস্য হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করেন তিনি। একইসঙ্গে চালিয়ে চান গুপ্তচর বৃত্তির কাজ। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ৫নং সেক্টরের সেলা সাবসেক্টরের অধীনস্থ টেংরাঠিলার সম্মুখ যুদ্ধে কয়েকটি গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়।
পরে আমবাড়ী, বাংলাবাজার, টেবলাই, বালিউড়া, মহব্বতপুর, বেতুরা দুর্বণটিলা ও ছাতক পেপার মিলের যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে তাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। বৃহস্পতিবার বাদ আছর নামাজে জানাযা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এই মহিয়সী নারীকে দাফন করা হয়।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2pCGb5J
March 23, 2018 at 04:00AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন