কলম্বো, ১৮ মার্চ- সাব্বির রহমান আর মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে বাংলোদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৬৬। মূলত পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশকে টেনেছেন সাব্বির রহমান। ৫০ বলে খেলেছেন ৭৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। রান আউট হয়ে ফিরেন দুই ব্যাটিং ভরসা মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসান। শেষে ঝড় তোলা মেহেদী হাসান মিরাজ ৭ বলে অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে। স্পিনে রান নিতে সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চেহেল ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। তিন পেসারের ১২ ওভার থেকে থেকে আসে ১২৬ রান। বাংলাদেশের স্কোর: ২০ ওভারে ১৬৬/৮ (তামিম ১৫, লিটন ১১, সাব্বির ৭৭, সৌম্য ১, মুশফিক ৯, মাহমুদউল্লাহ ২১, সাকিব ৭, মিরাজ ১৯*, রুবেল ০, মুস্তাফিজ ০*; উনাদকাট ২/৩৩, সুন্দর ১/২০, চেহেল ৩/১৮, ঠাকুর ০/৪৫, শঙ্কর ০/৪৮) উনাদকাটের দ্বিতীয় শিকার রুবেল গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পেলেন রুবেল হোসেন। তাকে বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় উইকেট নিলেন জয়দেব উনাদকাট। স্লোয়ার বল একেবারেই বুঝতে পারেননি রুবেল। সজোরে হাঁকাতে চেয়েছিলেন। অনেক আগে শট খেলে হয়ে যান বোল্ড। তার বিদায়ের সময় ১৮.৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১৪৮/৮। ৭৭ করে ফিরলেন সাব্বির দারুণ এক ইনিংস খেলে ফিরলেন সাব্বির রহমান। দ্রুত রান তোলা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দিয়েছেন জয়দেব উনাদকাট। স্লোয়ার বল বুঝতে পারেননি সাব্বির। উড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আগেভাগেই শট খেলে হয়ে যান বোল্ড। ৫০ বলে সাত চার ও চার ছক্কায় ৭৭ রান করে ফিরেন সাব্বির। তার বিদায়ের সময় ১৮.২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১৪৭/৬। সাকিবও রান আউট সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর পর রান আউট হয়ে গেলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। ষষ্ঠ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। বিজয় শঙ্করের বল কাভারে পাঠিয়েই ছুটেছিলেন সাকিব। রান পূর্ণ করতে পারেননি। দারুণ থ্রোয়ে ফিরে যান রান আউট হয়ে। ৭ বলে ৭ রান করেন সাকিব। ১৬.৫ ওভারে তার বিদায়ে সময় বাংলাদেশের স্কোর ১৩৩/৬। সাব্বিরের ফিফটি ওয়াশিংটন সুন্দরকে ছক্কা হাঁকানো পর নিলেন এক রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের চতুর্থ ফিফটি পেয়ে গেলেন সাব্বির রহমান। ৩৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সাব্বির। এই সময়ে ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হাঁকান পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কা। ১৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১২০/৫। ক্রিজে সাব্বিরের সঙ্গে সাকিব আল হাসান। রান আউট মাহমুদউল্লাহ জমে উঠেছিল সাব্বির রহমান-মাহমুদউল্লাহর জুটি। দ্রুত রান তোলা জুটি ভাঙল মাহমুদউল্লাহর রান আউটে। বিজয় শঙ্করের স্লোয়ার বল ব্যাটে খেলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। তিনি তাকিয়ে ছিলেন পিছন দিকে। যতক্ষণে দেখেন ততক্ষণে রান নিতে সাব্বির রহমান চলে আসেন তার প্রান্তে। উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিক বল ছুড়েন বোলার শঙ্করের দিকে। তিনি প্রথমে ঠিক মতো ধরতে পারেননি। খানিক দ্বিধার পর রান নিতে ছুটেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ততক্ষণে বল কুড়িয়ে দৌড়ে গিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন শঙ্কর। ১৬ বলে ২১ রান করে ফিরেন মাহমুদউল্লাহ। ১৪.১ ওভারে তার বিদায়ের সময় বাংলাদেশের স্কোর ১০৪/৫। মাহমুদউল্লাহর এক হাজার তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের পর বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার রান করলেন মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের রান চার অঙ্কে নিয়ে যেতে লাগল ৬০ ইনিংস। ৯৯৬ রান নিয়ে ফাইনাল শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। চার বল খেলেই ছুঁয়ে ফেলেন মাইলফলক। চেহেলের তৃতীয় শিকার মুশফিক নিজের শেষ ওভারে ফিরে আঘাত হানলেন যুজবেন্দ্র চেহেল। ফিরিয়ে দিলেন মুশফিকুর রহিমকে। লেগ স্পিনারের ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন মুশফিক। ডানহাতি ব্যাটসম্যান বেছে নিয়েছিলেন ভুল বল। গুগলি উড়াতে গিয়ে দেন ক্যাচ। ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন বিজয় শঙ্কর। ১২ বলে ৯ রান করেন মুশফিক। তার বিদায়ের সময় ১০.১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬৮/৪। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ৩ উইকেট পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। ফিরে গেছেন লিটন দাস, তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪০/৩। আঁটসাঁট প্রথম ওভারের পর দ্বিতীয় ওভারে লিটনকে বিদায় করেন অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর। নিজের প্রথম ওভারে তামিম ও সৌম্যর উইকেট তুলে নেন লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চেহেল। এলেন আর গেলেন সৌম্য তামিম ইকবালের পর সৌম্য সরকারেকও ফিরিয়ে দিলেন যুজবেন্দ্র চেহেল। লেগ স্পিনার এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে বিপদে ফেললেন বাংলাদেশকে। স্কয়ার লেগ ফিল্ডার বরবর সুইপ করেন সৌম্য। শিখর ধাওয়ান দুই হাতে জমান বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ক্যাচ। ২ বলে ১ রান করে ফিরে যান সৌম্য। সৌম্য ফেরার সময় ৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩৩/৩। তামিমকে ফেরালেন চেহেল নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানলেন যুজবেন্দ্র চেহেল। ফিরিয়ে দিলেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবালকে। লং অন দিয়ে লেগ স্পিনারকে উড়াতে চেয়েছিলেন তামিম। দুই হাত ওপরে তুলে সীমানায় দারুণ এক ক্যাচ নেন শার্দুল ঠাকুর। সীমানা দড়ির খুব কাছে থাকা ফিল্ডার দারুণ দক্ষতায় ভারসাম্য রক্ষা করে নিশ্চিত করেন তামিমের বিদায়। ১৩ বলে ১৫ রান করে ফিরেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তামিম ফেরার সময় ৪.২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৭/২। সুন্দরকে উড়াতে গিয়ে আউট লিটন প্রথম ওভারে আঁটসাঁট বোলিং করা ওয়াশিংটন সুন্দর আঘাত হানলেন দ্বিতীয় ওভারে। তরুণ অফ স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন লিটন দাসকে। অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্লগ সুইপ করে উড়াতে চেয়েছিলেন লিটন। ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যাওয়া সহজ ক্যাচ তালুতে জমান সুরেশ রায়না। ৯ বলে এক ছক্কায় ১১ রান করে ফিরেন লিটন। ৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৭/১। ভারত দলে সিরাজের জায়গায় উনাদকাট বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে খেলা ভারত দলে এসেছে একটি পরিবর্তন। সেই ম্যাচে খেলা মোহাম্মদ সিরাজ বাদ পড়েছেন। দলে ফিরেছেন আরেক পেসার জয়দেব উনাদকাট। ভারত দল: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, সুরেশ রায়না, মনিশ পান্ডে, দিনেশ কার্তিক, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চেহেল, বিজয় শঙ্কর, শার্দুল ঠাকুর, জয়দেব উনাদকাট। অপরিবর্তিত বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে খেলা দলটির ওপর আস্থা রেখেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে খেলছে একই একাদশ নিয়ে। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে স্পিন আক্রমণে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল ইসলাম অপু। পেস আক্রমণে রুবেল হোসেনের সঙ্গী মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, মেহেদী হাসান মিরাজ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ টানা তিন ম্যাচে টস জেতার পর এবার টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। ফাইনালে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি মনে করছেন সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হবে উইকেট। শুরুতে ব্যাটিং করা নিয়ে আপত্তি নেই সাকিব আল হাসানের। তিনি মনে করছেন, দুই ইনিংসেই উইকেট প্রায় একই রকম থাকবে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বড় স্কোর চাইলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পঞ্চম সুযোগে বাংলাদেশের প্রথম? পঞ্চমবারের মতো কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলছে বাংলাদেশ। আগের চারবারই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে হারা দলটি উন্মুখ প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে নিতে। দুইবার শ্রীলঙ্কার কাছে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে হারের তেতো স্মৃতি আছে বাংলাদেশের। পাকিস্তানের কাছে একবার হেরেছে এশিয়া কাপের ফাইনালে। ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে দেশের মাটিতে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির সেই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে হেরেছিল তারা। এবারের টুর্নামেন্টের দুই ম্যাচসহ ভারতের বিপক্ষে খেলা সাত টি-টোয়েন্টি খেলে সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এক সঙ্গে দুই লক্ষ্য পূরণের হাতছানি সাকিব আল হাসানদের সামনে। প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে জয়, সঙ্গে প্রথম শিরোপা। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। এমএ/ ০৮:২৮/ ১৮ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tYZlXV
March 19, 2018 at 03:30AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন