মাস্কাট, ১৬ মার্চ- আইএফআইসি ব্যাংকের মালিকানাধীন ওমানের প্রবাসী আয় প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান ওমান এক্সচেঞ্জের একটি শাখায় ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬১৫ ওমানি রিয়াল জালিয়াতি হয়েছে। এ অর্থ প্রায় ১০ কোটি টাকার সমান। প্রতিষ্ঠানটির একটি শাখার ব্যবস্থাপক প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তা জমা না দিয়ে হাতিয়ে নেন। এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে ওমানের উত্তরাঞ্চলের উপকূলবর্তী শহর সুহারে ওমান এক্সচেঞ্জের শাখায়। দায়ী শাখাটির ব্যবস্থাপক আমির হোসেন। বিশ্বখ্যাত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে জালিয়াতির ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে। এরপর ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর আমির হোসেনকে আটক করে ওমানের পুলিশ। একই ঘটনায় ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে আটক হন সুহার শাখার গ্রাহক ও ভারতীয় নাগরিক মুলিনকুটেল নারায়ণ পাচুর্জ। গত বছর ওমানের আদালত দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের কারাদণ্ড দেন। ওমান এক্সচেঞ্জ ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরু করে। এতে আইএফআইসি ব্যাংকের মালিকানা ২৫ শতাংশ। বাকিটা ওমানের কয়েকজন বিনিয়োগকারীর। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ২ লাখ ২৭ হাজার ডলার বিনিয়োগ করে আইএফআইসি ব্যাংক। এ বিনিয়োগে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুনাফা আসে ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা প্রায় ১৯ কোটি টাকার সমান। জালিয়াতির ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে। এ সময় ওমানের এক্সচেঞ্জের সুহার শাখায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা অর্থ জমা করলেও তা ব্যাংকের হিসাবে জমা দেখাননি শাখার ব্যবস্থাপক আমির হোসেন। তবে বাংলাদেশি সুবিধাভোগীরা ঠিকই অর্থ পেয়েছেন। ওই দুই মাসের জমা হওয়া অর্থের পাশাপাশি ভল্টে থাকা আগের অর্থও সরিয়ে ফেলেন শাখা ব্যবস্থাপক। ওই সময়ে শাখার গ্রাহক নারায়ণ পাচুর্জ কোনো টাকা জমা না দিলেও তাঁর নামে ভারতে অর্থ স্থানান্তর হয়। এভাবে প্রায় ১০ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলেন শাখা ব্যবস্থাপক আমির ও নারায়ণ। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে আসার পর ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর নিকটস্থ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ওমান এক্সচেঞ্জ। এক সপ্তাহের মধ্যে দুজনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির আদালতের রায় ঘোষণা হয়। রায়ে আমির হোসেনকে দেড় বছর ও নারায়ণকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুরো টাকা ফেরত দিলে ৫০০ ওমান রিয়াল জরিমানা দেওয়া সাপেক্ষে মুক্তির আদেশ দেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত তাঁরা টাকা ফেরত দেননি, ফলে মুক্তিও মেলেনি। সূত্র জানায়, আমির হোসেন ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর আইএফআইসি ব্যাংকে শিক্ষানবিশ ব্যবস্থাপনা কর্মী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুন তাঁকে প্রেষণে ওমানে পাঠানো হয়। আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ওমান এক্সচেঞ্জে রিয়েল টাইম সফটওয়্যার না থাকায় টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন আমির হোসেন। এ ঘটনার পর ওমান এক্সচেঞ্জে ক্যাশ ম্যাক্স নামে বিশেষ সফটওয়্যার স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এ ঘটনার পর ওমান এক্সচেঞ্জে মূলধন জোগানের কাজ শুরু করেছে উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে লোকসানি টাকার ৭৫ শতাংশ দেবে কুয়েতের উদ্যোক্তারা এবং ২৫ শতাংশ দেবে আইএফআইসি ব্যাংক। এ জন্য ২ লাখ ৩৫ হাজার ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) ওমানে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছে আইএফআইসি ব্যাংক। জানতে চাইলে আইএফআইসি ব্যাংকের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের প্রধান আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, দেশটি থেকে প্রবাসী আয়ের বড় অংশই আসে ওমান এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে। একটা ঘটনায় ক্ষতি হয়ে গেছে, তবে এক্সচেঞ্জ হাউসটি কার্যক্রম চালু রাখতে নতুন করে মূলধন পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেলেই মূলধন পাঠানো হবে। সূত্র: প্রথম আলো আর/১৭:১৪/১৬ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2HEKqnT
March 16, 2018 at 10:56PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন