ফুটবলে কোনো জাত-পাত নেই, ধর্ম-বর্ণ নেই। সারাবিশ্বের সব বর্ণের, সব ধর্মের মানুষ পছন্দ করে ফুটবল খেলাটিকে। যে কারণে ধারণা করা হচ্ছে লক্ষাধিক মুসলিম ভক্ত-সমর্থক রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা দেখতে যাবেন। বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ৩২টি দেশের মধ্যে সাতটিই রয়েছে মুসলিম প্রধান দেশ। যে কারণে, সেখানে খেলা দেখতে যাওয়া, ঘুরতে যাওয়াদের অর্ধেকই হবে হয়তো মুসলিম। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই রাশিয়া বিশ্বকাপ আয়োজক কর্তৃপক্ষ এবং ফিফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুসলিম বান্ধব ট্রাভেল গাইড প্রকাশ করার। যাতে মুসলিম পর্যটক, ভক্ত-সমর্থকদের রাশিয়ায় থাকা মসজিদ, হালাল রেস্টুরেন্ট কিংবা নামাজের জায়গা এমনকি নামাজের সঠিক সময়ও যেন খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। একই সঙ্গে পবিত্র রমজানের সব সময়সূচিও দেয়া থাকবে সেই ট্রাভেল গাইডে। ৩২টি দেশের মধ্যে যে সাতটি মুসলিম দেশ রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব, ইরান, মিশর, মরক্কো, তিউনিসিয়া, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়া। সৌদি আরবকে দিয়েই শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২১তম আসর। ১৪ জুন ব্শ্বিকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মস্কোর লুজনিকি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি হবে সৌদি আরব। কাকতালীয়ভাবে দিনটি হবে মুসলিমদের সবচেয়ে পবত্রি মাস রমজানের শেষ দিন কিংবা মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতরের দিন। রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নেয়া মুসলিম দেশ মিশর তাদের টিম বেজ ক্যাম্পের জন্য বেছে নিয়েছে চেচনিয়াকে। যে এলাকাটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। এছাড়া ২০ জুন ইরান স্পেনের মুখোমুখি হবে কাজানে। তাতারস্থানের সবচেয়ে মুসলিম প্রধান এলাকা হচ্ছে কাজান। যে শহরে ৫০টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে। ফিফার জেনারেল সেক্রেটারি ফাতমা সামউরাও একজন সেনেগালিজ মুসলিম। আরব নিউজকে তিনি জানিয়েছেন, ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি চায় বিশ্বকাপে যেন মুসলিম পর্যটক, ভক্ত-দর্শকরা অনায়াসে রাশিয়ায় যেতে পারেন, খেলা দেখতে পারেন এবং একই সঙ্গে নিজেদের বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধর্মীয় বিধি-বিধান পালন করতে পারেন। বিশেষ করে রমজান এবং ঈদ উদযাপন করতে পারেন। এছাড়া যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে, তাদের জন্য নামাজের স্থান, মসজিদের তথ্যও যাতে তাদের জানিয়ে দেয়া যায় সহজে, তারও ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আমার জীবনেরই অংশ। সুতরাং, যারা আমাকে চেনেন, তারা এটাও জানেন যে, আমি একজন মুসলিম এবং মুসলিম হিসেবেই আমি জীবন ধারণ করতে পছন্দ করি। সামউরা আরও বলেন, এবারের বিশ্বকাপে খেলছে সাতটি মুসলিম দেশ। যে দেশগুলোর অধিকাংশ খেলোয়াড়ই হচ্ছে মুসলিম। শুধু তাই নয়, রাশিয়া বিশ্বকাপ দেখতে আসা অধিকাংশ মুসলিম সমর্থকই হয়তো তখন পবিত্র রমজানের রোজা পালন করবেন। যা শেষ হতে পারে উদ্বোধনী ম্যাচের আগেরদিন কিংবা উদ্বোধনের দিন। আরও পড়ুন: রোনালদোকে বোতল ছুঁড়ে মারলেন পিএসজি সমর্থক! মুসলিমদের জন্য ফিফার চিন্তা শেয়ার করতে গিয়ে ফাতমা সামউরা বলেন, ফিফার পক্ষ থেকে আমরা মুসলিমদের জন্য এটুকু নিশ্চিত করতে চাই যে, তিনি হোন খেলোয়াড়, কর্মকর্তা কিংবা সমর্থক- তাদের সবার জন্যই প্রয়োজনীয় সব তথ্য সরবরাহ করা হবে। কোথায় হালাল খাবার পাওয়া যাবে, কোথায় সালাত আদায় করা যাবে- সব তথ্য। গত ডিসেম্বরেই মিশর ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান হানি আবু রিদা গলা উচ্চকিত করেছিলেন, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে রমজানের ক্ষতি হতে পারে তাদের। এমনকি রাশিয়ায় গিয়েও রোজা পালনে বাধার সম্মুখিন হতে পারেন তারা। তিনি বলেছিলেন, যদি তারা (ফুটবলাররা) খাওয়া থেকে বিরত থাকে, তাহলে বিশ্বকাপের ম্যাচে আমাদের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়তেই থাকবে। আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে, রমজানের সময় পুরো লাইফস্টাইল পরিবর্তন হয়ে যায়। তারা রাতে ঘুমায় কম। অনেক সময় ঘুমায় না। দিনে আহার করে না। তাহলে, বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতিটা কীভাবে নেবে তারা? এটা কি আদর্শ প্রস্তুতি হতে পারে? সূত্র : জাগোনিউজ২৪ আর/১৭:১৪/০৮ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2HdFzJZ
March 08, 2018 at 11:52PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন