নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম, এসআই সফিক উদ্দিন ও এসআই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান কর হয়েছে। বুধবার বিকেলে দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবরে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের দ্বীপবন্ধ (বিলপার) গ্রামের ৪৪ জন ব্যক্তি স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামের অসহায় দিনমজুর মনফর আলী (মনাই), তার পুত্র জুয়েল আহমদ (২৫) ও কন্যা সুমিনা বেগমের (২০) উপর থানা পুলিশের শেল্টারে পাশের বাড়ির সেবুল, জয়নাল, ইসহাক, ইসলাম, নাছির উদ্দিন’সহ ক্ষতিপয় বখাটেরা নানা অত্যাচার, নির্যাতন করে আসছে। অভিযুক্তরা (আসামী) প্রতিনিয়ত থানায় যাওয়া-আসা করে, কিন্তু পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে না। বরং অভিযুক্তরা ওসি-দারোগার সঙ্গে মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরামর্শ করে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, মনাই গরীব হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে প্রতিপক্ষের আব্দুল কাদির সাজানো একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ১৫ তারিখ ২৫/১০/১৭ইং)।
স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম্য মুরব্বীগণ সালিশে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিলেও পুলিশের পরামর্শে বখাটেরা তা প্রত্যাখ্যান করে। ২০১৭ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর মনাইর স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদের জন্য ধারলো অস্ত্র দিয়ে মনাই, মনাইর স্ত্রী মনাইর ছেলে রুহেল, জুয়েল ও মেয়ে সুমিনাকে কুপিয়ে জখম করে ওই বখাটেরা। ঘটনার পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর রুহেল বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৩। সুমিনাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাঁধ দেয় এবং এরপর টাকার বিনিময়ে বিনাচিকিৎসায় সুমিনাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে সুমিনাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে মাথার জখমের কারণে যেকোন সময় মৃত্যু হতে পারে।
চলতি বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারী বখাটে সেবুল, জয়নাল ও ইছাক ফের মনাইর ছোট ছেলে জুয়েলের মাথায় কুপিয়ে ও ডান হাতের ৩টি আঙ্গুলও কেটে ফেলার চেষ্টা করে। এ ঘটনার পরও রুহেল একইভাবে ২৪শে ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু থানা পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি, পরবর্তিতে আদালতের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলা নং বিশ্বনাথ জিআর ৪৯/১৮ইং। এছাড়া মনাইর ছোট মেয়ে রুবিনা বেগমকে অশালীন বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা ও ইশারা ইঙ্গিত করে এবং কিছু দিন পূর্বে ঘরে ঢুকে অপমান করার চেষ্ঠা করে। ঘটনাটি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হলেও পুলিশ সব সহায়তা করে অভিযুক্তদের।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ইতিপূর্বে গ্রামের শান্তি-শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বনাথ থানার ওসি মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম বরাবরেও স্মারকলিপি দিয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থই অনর্থের মুল। টাকা না থাকায় স্মারকরিপির কোন গুরত্ব পায়নি থানা পুলিশের কাছে। সিলেট ওসমানীনগর সার্কেলের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছিলেন। কিন্তু মনাইর প্রতিপক্ষ বিত্তশালী আসামিগণ থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রামে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে, কিন্তু পুলিশ নির্বিকার। যে কোন সময় মনাইর পরিবারের উপর অভিযুক্তরা বড় ধরনের আক্রমন করতে পারে বলে আশংকা রয়েছে।
এব্যাপারে সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, থানা পুলিশ কোন অপরাধী বা বিশেষ কাউকে শেল্টার দিচ্ছে না। যে কোন মামলায় প্রকৃত অভিযুক্তদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, কারও কথায় নিরীহ কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে হয়রাণী করা আমার কিংবা পুলিশের কাজ হয়। সাংবাদিকরা এলাকায় গিয়ে অনুসন্ধান করলেই আসল তথ্য পাবেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস https://ift.tt/2GRf0Oj
April 05, 2018 at 02:20AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন