বেইজিং, ২১ এপ্রিল- হাজার মাইল দূরে থেকেও বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কোনো কিছুরই যেন কমতি নেই। কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনে হয়েছে আমরা যেন বাংলাদেশেই আছি। হাংচুতে (চীনে) এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অ্যান্ড স্কলার অ্যাসোসিয়েশনের কারণে। এ সংগঠনের আছে সুসংগঠিত একটি কমিটি এবং তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই সম্ভব হয়েছে দূর প্রবাসে শুভ নববর্ষ ১৪২৫ পালন। চীনের চেচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি ক্যাম্পাসের মধ্যে মূলত তিনটি ক্যাম্পাসের ( জিজিংগাং, ইউচুয়ান এবং হুয়াজিয়াচি ক্যাম্পাস) স্কলারদের নিয়েই এই সংগঠন। এই মুহূর্তে প্রায় ৩৫ জন বাংলাদেশি স্কলার রয়েছে। এর মধ্যে কেউ আছেন পোস্ট ডক্টরাল, ডক্টরাল, মাস্টার্স এবং মেডিকেলের স্কলার। এদের মধ্যে কয়েকজন বাদে প্রায় সবাই পরিবার এবং ছেলেমেয়ে নিয়ে আছেন। সব মিলেয়ে আছেন ৫৫ জন বাংলাদেশি। তারা বলেন, আমরা সবাই যখন একত্র হই, মনে হয় আমরা সবাই বাংলাদেশেই কোনো একটা প্রোগ্রামে পরিবার-পরিজন নিয়ে একত্রে মিলে মজা করছি। এখানে সবাই আমাদের খুব আপন, আসলে আমরা সবাই একসঙ্গে হলেই মন খুলে একটু বাংলায় কথা বলতে পারি, নিজেদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা শেয়ার করতে পারি। সর্বোপরি মন খুলে একটু হাসতে পারি। তারা আরও বলেন, এখানে প্রতিনিয়ত সবাই খুব ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে সময় পার করে থাকেন। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা যেন হাসতেই ভুলেই গেছি, আমাদের অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে, দিন দিন কেমন যেন যন্ত্রের মতো হয়ে যাচ্ছি। সব ব্যস্ততাকে তাকে ছুটি দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। এ বছর একটু ব্যতিক্রম ঘটে অনুষ্ঠান পালনের দিন টাকে নিয়ে, প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল পালন করে থাকলে এবার বৃষ্টির কারণে ১৫ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়েছে। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটি ছিল চারটি পর্বে, প্রথমে নববর্ষের র্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। র্যালিতে সবাই বৈশাখী সাজে উপস্থিত হয়। অনেকেই পাঞ্জাবি, শাড়ি এবং রঙিন পোশাক পরে র্যালিতে অংশগ্রহণ করে। র্যালি শেষে আমরা সবাই আমাদের ক্যাম্পাসের অতিপরিচিত বাংলাদ্বীপে (নামকরণটা আমাদের নিজস্ব) একত্র হই। সেখানে চলে প্রোগ্রামের বাকি পর্ব এবং খাওয়াদাওয়া। বাংলাদ্বীপে পৌঁছেই শুরু হয় খাওয়ার পর্ব শুরু করি। বৈশাখের পান্তা ইলিশের ব্যবস্থা হয়নি। তবে দুপুরের খাবারের মধ্যে ছিল, সাদাভাত, সর্ষে ইলিশ, আলুভর্তা, শুঁটকিভর্তা, মটরশূটিভর্তা, বেগুনভর্তা, বাদামভর্তা, ঘনডাল, মুরগির মাংশ, পায়েস এবং হাতে তৈরি খুরমা। আমাদের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল ছেলে, মেয়ে এবং বাচ্চাদের খেলাধুলা। প্রথমে শুরু হয় মিউজিকের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের বালিশ খেলা। তারপর শুরু হয় ছেলেদের বল থ্রোয়িং। এরপর ছিল বাচ্চাদের ২০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতা, কার বাচ্চা আগে যাবে এ যেন বাবা- মায়েদেরই দৌড় প্রতিযোগিতা। বাচ্চাদের খেলা শেষে মেয়েদের বল থ্রোয়িং এবং ছেলেদের চোখ বাধা অবস্থায় হাঁড়ি ভাঙার মধ্য দিয়ে খেলার পর্ব শেষ হয়। খেলার মাঝে মাঝে চলে বৈশাখী র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমে লটারির মাধ্যমে গান, কবিতা, নাচ, অভিনয়সহ বিভিন্ন উপস্থাপনা। তারপর শিল্পীদের মনোরম গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। সর্বশেষ সংগঠনের সবার উপস্থিতিতে র্যাফেল ড্রয়ের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এর মাধ্যমে চীনে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সূত্র: যুগান্তর আর/০৭:১৪/২১ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2vztwWk
April 21, 2018 at 02:14PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন