আলোচিত বিউটি হত্যা মামলার প্রতিবেদন শিঘ্রই: হত্যায় দায়ী বাবাসহ ৩ জন, ধর্ষণে বাবুল!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::    সিলেটের হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে আলোচিত বিউটি আক্তার হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার প্রতিবেদন শিগগিরই দাখিল করা হচ্ছে। বিউটির বাবা সায়েদ আলী, গ্রাম সম্পর্কের চাচা ময়না মিয়া ও ভাড়াটে খুনি কামাল মিয়াকে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে বাবুল মিয়াকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি জানা গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মানিকুল ইসলাম জানান, যেহেতু বিউটি হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে সেক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে নতুনভাবে একটি মামলা দায়ের করেছে। শিগগিরই মামলার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। তিনি বলেন, ‘এখনও তদন্ত কাজ চলছে। ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।’

বিউটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘বিউটি হতাকাণ্ডের বাদী সায়েদ আলী এখন মূল আসামি। সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষের পুলিশ বাদী হয়ে নতুন করে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুরাতন মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। নতুন মামলায় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে পুলিশ এটাই নিয়ম।’

এদিকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত ময়না মিয়া ওরফে মনাই, বিউটির বাবা সায়েদ আলী ও বাবুল মিয়া তিন জনই এখন জেল হাজতে রয়েছেন। পাশাপাশি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার আসামি বাবুল মিয়ার মা ইউপি সদস্য কলম চান বিবিও জেল হাজতে রয়েছেন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামিদের জামিনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৮ মে।

প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়াসহ তার লোকজন। তাকে অপহরণ করে বিভিন্ন স্থানে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বাবুলের বিরুদ্ধে। প্রায় এক মাস পর বাবুল মিয়া বিউটিকে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ১ মার্চ বিউটি আক্তারের বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। গত ১৬ মার্চ বিউটি নানির বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। পরদিন ১৭ মার্চ বিউটি আক্তারের লাশ স্থানীয় হাওর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে, বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে পরদিন তার বাবা বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার কারণে ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা ইউপি সদস্য কলম চান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইল নামের একজনকে আটক করে।

এই ঘটনার পর ২৯ মার্চ হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। এরপর ৩১ মার্চ সিলেট থেকে বাবুলকে আটক করে র‌্যাব। পরদিন বাবুল মিয়াকে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ নিশ্চিত হয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল মিয়া জড়িত নয়। এরপর থেকেই পুলিশ লাখই উপজেলার বিউটির নানি বাড়ি গুনিপুর গ্রামে গিয়ে জানতে পারে হত্যাকাণ্ডের আগেন দিন রাতে বিউটিকে তার বাবা সায়েদ আলী ও চাচা ময়না মিয়া নিয়ে আসে। এরপর থেকে পুলিশ ৪ মার্চ ময়না মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। পরদিন ৬ মার্চ রাতে তাকে আদালতে হাজির করলে সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরদিন বিউটির বাবা সায়েদ আলীও এই হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা রয়েছে জানিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস https://ift.tt/2vJg1Uk

April 26, 2018 at 02:56AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top