সুরমা টাইমস ডেস্কঃঃ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে বহুল আলোচিত কিশোরী বিউটি হত্যা মামলার বাদী ও বিউটির বাবা ছায়েদ আলী নিজ মেয়ে হত্যায় জড়িত ছিলেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (০৭ই এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দেন তিনি। তবে জবানবন্দিতে তিনি কী বলেছেন তদন্তের স্বার্থে সে সম্পর্কে কিছুই জানায়নি পুলিশ।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে বিউটি আক্তার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটক আসামি বিউটির চাচা ময়না মিয়া। তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডে আরো কারা জড়িত ছিল, কী দিয়ে এবং কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, কেন তাকে হত্যা করা হলো- সেই তথ্যই তিনি আদালতে প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বিউটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে একই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার বাবুল মিয়া। তবে হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে আদালতকে জানান তিনি। বাবুলের মা ইউপি সদস্য কলম চান বিবিকে দুইদিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার রাতে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি একই গ্রামের দিনমুজুরের মেয়ে বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়াসহ তার লোকজন। তাকে অপহরণ করে বিভিন্ন স্থানে রেখে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন বাবুল।
এ ঘটনার প্রায় ১ মাস পর পর বাবুল মিয়া কৌশলে বিউটিকে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যান। পরে ১ মার্চ বিউটি আক্তারের পিতা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা ব্রাহ্মণডোরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এরপর ১৬ মার্চ বিউটি নানীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। পরদিন ১৭ মার্চ বিউটি আক্তারের লাশ স্থানীয় হাওর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে প্রচার হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটি হত্যাকান্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ হলে দেশজুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে পরদিন তার পিতা বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা ইউপি সদস্য কলম চান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইল নামে এক যুবককে আটক করে।
এ ঘটনার পর ২৯ মার্চ হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। এরপর ৩১ মার্চ সিলেটের বিয়ানিবাজার থেকে র্যাব-৯ এর একটি টিম বাবুলকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস https://ift.tt/2GH9GO6
April 08, 2018 at 09:24PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন