
সরজমিনে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মদা গ্রামে আফজালের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, বসত ঘরের ছাদে রয়েছে তার কবুতরের খামার। নানা ধরণের খাঁচার মধ্যে থাকা নানা জাতের বিদেশী কবুতরকে পরম যত্নে মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন আফজাল। কথা হয় তার সাথে, তিনি জানালেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি, আমাদের ঘরে দেশী কবুতর পালন করা হয়। আমিও শখের বসে সেগুলো পালন শুরু করি। একসময় বিদেশী কবুতর দেখে সেগুলো পালনের শখ পেয়ে বসে।
সিলেটের এমসি কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্টে মাষ্টার্স করে ব্যবসা করার ইচ্ছে ছিল বিশ্বনাথের উত্তর ধর্মদা গ্রামের শেখ আফজাল হোসেনের। উপজেলা সদরের নতুনবাজারে একটি ‘খেলাঘর’র মাধ্যমে সে ইচ্ছের কিছুটা বাস্তবায়ন হয়েছে তার। তবে, তাদের পারিবারিকভাবে দেশী কবুতর পালনের বিষয়টি সৌখিন যুবক আফজলের মনে দাগ কাটে। লেখাপড়াতে থাকাবস্থায়ই মনোযোগ দেন দেশী কবুতর লালন-পালনের কাজে। এগুলো কিনতে গিয়ে খোঁজ পান বিভিন্ন জাতের বিদেশী কবুতরের। এর মধ্যে তিন জোড়া শিরাজী ও শার্টিন কবুতর দিয়ে যাত্রা শুরু হয় তার বিদেশী জাতের কবুতর পালন। ক্রয় করেন আরও কয়েক জাতের বিদেশী কবুতর। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এদের সংখ্যা। বাচ্চা এবং বিক্রয় উপযোগী কবুতর অনলাইনে বিক্রয় শুরু করেন আফজাল। বিশ্বনাথে প্রথম বিদেশী কবুতরের বাণিজ্যিক ফার্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করে তার ‘এসকে পিজিয়ন লফট’। চার বছর পূর্বে শুরু করা তার এই ফার্ম থেকে প্রতি মাসে আয় হচ্ছে পচিশ হাজার টাকার মত।

শেখ আফজাল আরও জানান, তার বিদেশী জাতের কবুতরকে খাবার হিসেবে গম, ডাবলি, মোটর, চিনা, বাজরা, কুসুমফুল ইত্যাদি মিশ্রন করে খাওয়াতে হয়। এতে করে মাসে ব্যয় হয় ৫হাজার টাকার মত।
অপরদিকে, অনলাইনের মাধ্যমে কবুতর ও কবুতরের বাচ্চা বিক্রয় করে মাসে আয় হয় প্রায় ২৫হাজার টাকা। অনলাইনে তার কবুতর বেশির ভাগই ভারত, ঢাকা, খুলনা ও চট্রগ্রামেই বিক্রয় করা হয়। তিনি মনে করেন, যদি দেশের পাঁচটি ফার্মের মধ্যে ভাল কবুতর পাওয়া যায়, তার মধ্যে তার ফার্মের কবুতরও থাকবে। ধীরে ধীরে ‘এসকে পিজিয়ন লফট’-এর পরিধি বাড়ানোর ইচ্ছে আছেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যারা কোয়ালিফাইড, তারাই এসব ক্ষেত্রে ভাল করছে, সফল হচ্ছে। বিদেশী জাতের কবুতরের ফার্ম নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ও অধিক লাভজনক। আমরা শিগগিরই শেখ আফজালের ফার্ম পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সার্পোট দেবো ।
এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ওই উদ্যোক্তার মতো অন্য যুবকরাও এসব কাজে আগ্রহী হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবেই।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2HE3AdR
April 29, 2018 at 05:21PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.