ঢাকা, ০৫ এপ্রিল- ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীত চলচ্চিত্র, নির্মাতা, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক স্বাক্ষরিত একটি গেজেটে জানানো হয়, এবার সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পাচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় নির্মিত তৌকির আহমেদের চলচ্চিত্র অজ্ঞাতনামা। আগে ২০০৮ সালে জয়যাত্রা চলচ্চিত্রের জন্য তিনটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তৌকির। চতুর্থ চলচ্চিত্রের জন্য দ্বিতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বাসের চেয়ে খেদ বেশি ঝরলো এ নির্মাতা-অভিনেতার মুখে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দুই বছর বিলম্বে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, আমি বুঝি না, এই পুরস্কারটা দিতে দুই বছর লাগে কেন? কী এমন কঠিন কাজ এটি? কী এমন হিসাব-নিকাশ করতে হয় তাদের? এটা (পুরস্কার) অনেকটা বাসি আরকি! ...অনেক অপ্রাসঙ্গিকও হয়ে যায়। কারণ এর পরে আরও দুটি ছবির শ্যুট করে ফেলেছি। আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ দর্শকের পুরস্কার। সেরা চলচ্চিত্র অজ্ঞাতনামা হলেও সেরা পরিচালকের পুরস্কার উঠছে আয়নাবাজির নির্মাতা অমিতাভ রেজার হাতে। এটি তার প্রথম চলচ্চিত্র। একই চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এর আগে ২০১০ সালে গিয়াউদ্দিন সেলিমের মনপুরা চলচ্চিত্রের জন্য প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান পাবনায় জন্ম নেওয়া এ অভিনেতা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চঞ্চল বলেন, এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। প্রত্যেক শিল্পীরই চাওয়া থাকে পুরস্কারটি। আয়নাবাজি অমিতাভ রেজার প্রথম কাজ, অনেক পরিশ্রমের ফসল। টিমের সবার প্রতি ভালোবাসা থাকলো। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারটি যৌথভাবে পাচ্ছেন অনন্য মামুনের অস্তিত্ব চলচ্চিত্রের জন্য নুসরত ইমরোজ তিশা এবং গৌতম ঘোষের শঙ্খচিল চলচ্চিত্রের জন্যকুসুম শিকদার। দুজনই প্রথমবার পাচ্ছেন এ পুরস্কার। আরও পড়ুন: কারাগারে কী কী সুবিধা পাবেন সালমান খান? তিনি কুসুম শিকদার বলেন, একজন শিল্পীর কাছে দর্শকের ভালোবাসা-ই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়াটা তো নিঃসন্দেহে অনেক বড় প্রাপ্তির। বিশেষ করে ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও আশীর্বাদ চলচ্চিত্রকে কৃতজ্ঞতা জানাই। সেরা অভিনেত্রীর মতো আজীবন সম্মননাও এবার দেওয়া হচ্ছে যুগ্মভাবে। আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন ফরিদা আক্তার ববিতা ও আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তবে যুগ্মভাবে পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন মিয়াভাই খ্যাত অভিনেতা ফারুক। তিনি আদৌ পুরস্কারটি গ্রহণ করবেন কিনা তা নিয়েও পুনরায় ভাববেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমি ভেবে দেখবো এটা (পুরস্কার) নেওয়া যায় কিনা। পৃথিবীর ইতিহাসে এই ধরনের অ্যাওয়ার্ড কেউ নেয় না। কাউকে অপমান করার অধিকার জুরিবোর্ডের নেই। দুজনকে ভাগ করে আজীবন সম্মাননা দেওয়াটা ঠিক নয়। এটা যাচ্ছেতাই মনে হয়। আমার দুঃখ লাগে। লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনেসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাড়াজাগানো চলচ্চিত্রের এ অভিনেতা দাবি করেছেন, এর আগে ১৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেও রাজনৈতিক কারণে চূড়ান্ত তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারটি পেয়েছেন ১৯৭৫ সালে । লাঠিয়াল চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেতার জন্য। চলচ্চিত্র বিষয়ক ১৮টি সংগঠনের জোট চলচ্চিত্র পরিবার-এর আহ্বায়ক ফারুক বলেন, আমার একটা অভিমান আছে। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, আমি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে হাত দেব না।.. আমি হয়তো বুঝি কম। আমি অত বোদ্ধা নই। যারা দিয়েছেন তারা কতটুকু বোদ্ধা আমি জানি না। যে জুরি বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি। ববিতা বলেছেন, এ প্রাপ্তি আমার জন্য অনেক আনন্দের। সবমিলিয়ে ২৬টি বিভাগে এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এবার শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হবে ঘ্রাণ, শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র জন্মসাথী । শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেতা যৌথভাবে আলীরাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে) । শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ), শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আনুম রহমান খান (শঙ্খচিল), । শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে), শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হাবিব (নিয়তি), শ্রেষ্ঠ গায়ক ওয়াকিল আহমেদ (দর্পণ বিসর্জন), শ্রেষ্ঠ গায়িকা মেহের আফরোজ শাওন (কৃষ্ণপক্ষ), শ্রেষ্ঠ সুরকার ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে) । শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার তৌকীর আহমেদ (অজ্ঞাতনামা), শ্রেষ্ঠ গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন) শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি), । শ্রেষ্ঠ সম্পাদক ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহ (শঙ্খচিল), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক রাশেদ জামান (আয়নাবাজি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক রিপন নাথ (আয়নাবাজি) । শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি), শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)। সূত্র: বিডিনিউজ২৪ আর/১০:১৪/০৫ এপ্রিল



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HdCx9T
April 06, 2018 at 05:40AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top