বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে গত বছর নভেম্বরে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগ করেছেন। সেই হাথুরুসিংহে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ হয়ে ঘুরে গিয়েছেন বাংলাদেশ। অথচ বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের জায়গাটা এখনো ফাঁকা রয়ে গেছে। কোচ ছাড়া দলের ঠিকঠাক উন্নতি সাধন হবে না, তার প্রমাণ শ্রীলঙ্কা সফরেই বোঝা গেছে প্রবলভাবে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, মাশরাফি-সাকিবদের পরবর্তী কোচ কে হচ্ছেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সূচি চূড়ান্ত। যদিও ক্রিকেট মহাযজ্ঞ মাঠে গড়াতে ১৩ মাস বাকি। এখন টাইগার ক্রিকেটাররা মুখিয়ে আছেন ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের চেয়ে ভালো কিছু করার। কোচ শূন্য টাইগারদের পক্ষে সেটা কি সম্ভব? কোচ শূন্য হওয়ার পর যদিও বিভিন্ন সিরিজ ও টুর্নামেন্টে দায়িত্ব পালন করেছেন এক একজন। ক্রিকেট পাড়ায় এখন জোর আলোচনা, হাথুরুসিংহের উত্তরসূরি কে? শোনা যায়- কোর্টনি ওয়ালশ, মাহেলা জয়াবর্ধনে, চামিন্দা ভাস, গ্রায়েম ফোর্ড, গ্যারি কারস্টেন, স্টিফেন ফ্লেমিংদের মতো রথী, মহারথীদের নাম। নতুন কোচ কবে থেকে দায়িত্ব নিবেন মাশরাফি, তামিম, মুশফিক ও সাকিবদের? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবশ্য জানিয়েছেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই নতুন কোচ পাচ্ছেন মাশরাফিরা। হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে কোচ শূন্য টাইগারদের ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-২০ সিরিজে টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে তিন জাতির টুর্নামেন্টেও কাজ করেছেন মাহমুদ। এরপর শ্রীলঙ্কার ৭০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিন জাতির নিদাহাস টি-২০ টুর্নামেন্টে কোচের দায়িত্বে ছিলেন ক্যারিবীয় লিজেন্ড কোর্টনি ওয়ালশ। যদিও ওয়ালশ হেড কোচের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিসিবি চাইছে আরো পরিণত কাউকে। কেননা, যার মেধা ও মস্তিষ্কের সংযোজনে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে স্বপ্নের ফল যেন করতে পারে বাংলাদেশ। শোনা যাচ্ছে, জুন-জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ পর্যন্ত মাশরাফি, সাকিবদের দায়িত্ব পালন করবেন ওয়ালশ। এর ফাঁকে কোচ খুঁজে নিবে বিসিবি। হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছাড়ার পর এরমধ্যে কোচ নিয়োগ দিতে রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্সের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিসিবি। পরে দুজনকে না করে দেয়ার পর বিসিবি যোগাযোগ করে মাহেলা জয়াবর্ধনের সঙ্গে। অবশ্য মাহেলা রাজি হননি। এখন শোনা যাচ্ছে, বেশ কিছু শর্ত জুড়েছেন লঙ্কান এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। বিপিএলে মাহেলা জয়াবর্ধনে কোচ ছিলেন খুলনা টাইটান্সের। আইপিএলে কোচিং করাচ্ছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে। সম্প্রতি চামিন্দা ভাসের সঙ্গেও কথা বলেছেন বিসিবির একজন প্রভাবশালী পরিচালক। ভাস এর আগে টাইগারদের বোলিং কোচ হিসেবে আগ্রহ দেখিয়ে ছিলেন। সে সময় বিসিবি রাজিও ছিল। শেষ পর্যন্ত ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ে ওয়ালশের। এবার ভাস হতেও পারেন কোচ। আরও পড়ুন: মাশরাফির নাম না থাকাটা ভুল বোঝাবুঝি: বিসিবি দুই লঙ্কানের নামের ফাঁকে শোনা যাচ্ছে হেড কোচের লড়াইয়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম ফোর্ড। ফোর্ডের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু নাটাল প্রদেশের হয়ে। তার কোচিংয়ের খেলেছেন ম্যালকম মার্শাল, ক্লাইভ রাইস, শ্যন পোলক, জন্টি রোডসদের মতো ক্রিকেটার। এরপর তিনি ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সহকারী কোচ ছিলেন। ২০১২ সালে হেড কোচ ছিলেন শ্রীলঙ্কার। ৫৭ বছর বয়সী ফোর্ডের কোচিংয়ে খেলেছেন কুমার সাঙ্গাকারা, জয়বর্ধনে, ভাস, মুত্তিয়া মুরলিধরনের মতো বিশ্ব তারকা ক্রিকেটাররা খেলেছেন। দ্বিতীয় ধারায়ও কোচিং করিয়েছেন দ্বীপরাষ্ট্রকে। ২০১৭ সালে দায়িত্ব ছেড়ে এখন কোচিং করাচ্ছেন কাউন্টি দল সারেকে। ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ পল ফারব্রেজকে চূড়ান্ত করে ফেলেছিল বিসিবি। দায়িত্ব নিতে রাজিও হয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা রাজি না হওয়ায় পিছুটান দেন ফারব্রেজ। এরপরই বিপাকে পড়ে বিসিবি। যদিও নজর রাখছে আইপিএলে কোচদের দিকে। নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের প্রতি বিসিবি অনেক দিন আগে থেকেই আগ্রহী। সাবেক কিউই অধিনায়ক এখন চেন্নাইয়ের কোচ। একই দলের মাইক হাসির বিষয়েও আগ্রহী বিসিবি। ক্যালিস, কারস্টেনদের সঙ্গেও কথা বলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কারস্টেনের দাবি নাকি আকাশসম পারিশ্রমিক। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জ্যাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও কোচ হিসেবে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি না করে দিয়ে এখন অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। এদিকে, বিসিবি চাইছে চলতি মাসেই কোচের নিয়োগ দিতে। আবার বড় তারকাদের সঙ্গেও কথা বলছে। এখন সময় বলবে কে হবেন হাথুরুসিংহের উত্তরসূরি। তথ্যসূত্র: বিডি২৪লাইভ আরএস/০৯:০০/ ৭ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HXKFz3
May 07, 2018 at 06:59PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top