কলকাতা, ২১ মে- দরকার ছিল একটি হৃদযন্ত্রের। কিন্তু, সেই হৃদযন্ত্রের খোঁজ মিলেছিল বেঙ্গালুরুতে। সেখানে গাড়ি দুর্ঘটনায় জখম হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিল বছর আঠারোর তরুণ বরুণ ডিকা। চিকিৎসকরা তাকে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করতেই শুরু হয়ে যায় তৎপরতা। কারণ, বরুণের শরীরে থাকা হৃদযন্ত্রটি কলকাতায় দিলচাঁদ সিংহের শরীর প্রতিস্তাপন করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বছর উনচল্লিশের দিলচাঁদ ২০১৬ সালে ই এম বাইপাস সংলগ্ন এই হাসপাতালে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। সিনেমাকেও হার মানাল এই ঘটনা, মাত্র ২০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে গেল হৃদযন্ত্র সোমবার ভোরেই বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে বরুণের হৃদযন্ত্র নিয়ে কলকাতায় রওনা হয় একটি দল। চার ঘণ্টার মধ্যে বরুণের হৃদযন্ত্র দিলচাঁদ-এর শরীরে বসানোটা জরুরি ছিল। কারণ, চার ঘণ্টা সময় পেরিয়ে গেলে এই হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেবে। এই বিষয়গুলি কলকাতা পুলিশকেও জানানো হয়। এরপরই পরিকল্পনা মতো কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত তৈরি করা হয় গ্রিন করিডর। এই কর্মসূচিতে সামিল করা হয় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকেও। সোমবার সকাল ১০.৪০টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছয় বেঙ্গালুরু থেকে আসা বিমানটি। একটি বিশেষ ক্যাসকেডে করে হৃদযন্ত্রটি নিয়ে আসা হয়েছিল। কলকাতার ইএম বাইপাস হাসপাতালে ভর্তি দিলচাঁদ সিংহ-কেও অস্ত্রোপচারের জন্যও তৈরি রাখা হয়েছিল। বেলা ১০.৫৫ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে হৃদযন্ত্র রওনা হতেই ইএম বাইপাসের পাশে থাকা হাসপাতালে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। দিলচাঁদ সিংহ-কে অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় এইচআইভি ও এইডসের রোগী বাড়ছে, ১১৬০ জন আক্রান্ত কলকাতা শহরে এভাবে আন্তঃরাজ্য গ্রিন করিডরে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের ঘটনা প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই তাই পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গ্রিন করিডর নিয়ে যথেষ্টই সতর্ক ছিল। একটা মুহূর্তের জন্য সময় নষ্ট না হয় তার জন্যও সেরে রাখা হয়েছিল যাবতীয় প্রস্তুতি। হৃদযন্ত্র কলকাতায় পৌঁছলেই যে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌঁড়তে হবে তা জানত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগেভাগেই অস্ত্রোপচারে সরাসরি অংশ নেওয়া ছয় চিকিৎসককে তৈরি রেখেছিল। এছাড়াও এই অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল আরও একদল চিকিৎসককে। এঁরা সকলেই হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনে দক্ষ। গত বছর বেশ কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। সে সময়ও শহরের ২টি হাসপাতালের মধ্যে গ্রিন করিডর তৈরি করা হয়েছিল। অঙ্গ প্রতিস্থাপন কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সবচেয়ে বড় যেমন সময় তেমনি যার শরীরে তা প্রতিস্থাপন হবে তার শারীরিক অবস্থা কেমন সেটাও খেয়ালে রাখতে হয়। বেঙ্গালুরুর বরুণ ডিকার হৃদযন্ত্র আদৌ দিলচাঁদ-এর শরীর নিতে পারছে কি না তা কয়েক দিন পরে জানা যাবে। তথ্যসূত্র: bengali.oneindia আরএস/০৯:০০/ ২১ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2IC7zfH
May 21, 2018 at 08:37PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top