লন্ডন, ০৩ মে- ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশীরা বসবাস করেন টাওয়ার হ্যামলেটসে। এ বারার মেয়র ও কাউন্সিলার নির্বাচন আজ ৩ মে। ভোটগ্রহনের দিনক্ষণ যত এগিয়ে আসছে, ততটাই যেন বাস্তবতার সাথে মিলে যাচ্ছে পুরনো একটি প্রচলিত প্রবাদ। সেটি হল সিলেটীদের প্রতিপক্ষ সিলেটীরাই। মেয়র পদে আসন্ন নির্বাচনে তিন বাংলাদেশী বংশোব্দুত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তারা হলেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ডা. অানোয়ারা অালী, এস্পায়ার পার্টির ব্যানারে সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ অাহমদ, পিপলস এলায়েন্স অব টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্যানারে ব্যানারে রাবিনা খান। ডা. আনোয়ারা আলীর চিকিৎসক হিসেবে কমিউনিটিতে পরিচিতি রয়েছে। তার বেড়ে উঠাও এ বারায়। অহিদ আহমদকে কমিউনিটির মানুষজন চেনেন একজন সজ্জন, বিনয়ী মানুষ হিসেবে। আর রাবিনা খান গত নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে দ্বিতীয় সর্বচ্চো ভোট পেয়ে আলোচনায় আসেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত এ তিন প্রার্থীই এ বারার সাবেক কাউন্সিলার। আবার তিন প্রার্থীরই গ্রামের বাড়ী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। এ নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন বর্তমান মেয়র জন বিগস। মেয়র পদে তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত প্রার্থী থাকার কারনে জন বিগস এবারও অনেকটা হেসে-খেলে নির্বাচনী বৈতরনী পার হবেন, এমন ধারণা প্রবাসী ভোটারদের। উল্লখ্য, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে সর্বমোট সাত প্রার্থী ও ৪৫ টি কাউন্সিলর পদে ২৫৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। কাউন্সিলর পদে বাংলাদেশী বংশোব্দুত প্রার্থী ১১৩ জন। ২০১০ সালে ব্রিটেনে ইতিহাস সৃষ্টি করে এ বারায় প্রথম নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হন লুতফুর রহমান। ২০১৪ সালে জন বিগসকে হারিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হলেও দুর্নীতির অভিযোগে আদালতের রায়ে মেয়র পদ হারান তিনি। আর মেয়র লুতফুরের বিরুদ্ধে অাদালতে মামলা দায়েরকারীদের অন্যতম ব্যক্তিটিও ছিলেন বাংলাদেশী বংশোব্দুত একজন ব্যবসায়ী। অাদালতের রায়ে সেসময় দুই মেয়াদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য ঘোষিত হন লুতফুর রহমান। তখন লুতফুর রহমান সমর্থিত সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করে ২৬,৩৮৪ ভোট পান রাবিনা খান। কিন্তু এবারের নির্বাচনে লুতফুর রহমান আর রাবিনাকে সমর্থন দেননি। তিনি সমর্থন দেন সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদকে। বারার ষ্টেপনী ওয়ার্ডের ভোটার টিপু অাহমেদ বলেন, বাংলাদেশী বংশোব্দুত তিনজন প্রার্থী না থেকে একক প্রার্থী থাকলে মেয়র পদে তিনি নিশ্চিতভাবে বিজয়ী হতেন। পাল্টাপাল্টি চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে কাউন্সিলার পদে এমন সব প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে যারা ঠিকমতো বাংলা বা ইংরেজী কোনটাই বলতে পারেন না। অনেকের বিরুদ্ধে অাবার কমিউনিটির মানুষের অর্থ অাত্বস্বাতের অভিযোগ অাছে। টিপু অারো বলেন, রাবিনা বা অহিদের মধ্যে যে কোন একজন দাড়ালে এবার ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। কেন লুৎফুর নিজের দু প্রার্থীকে এক করতে পারলেন না বা করলেন না সেটি একটি বড় প্রশ্ন। লন্ডন থেকে প্রকাশিত বাংলাভাষী পত্রিকার সম্পাদক অলিউর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশী তিন প্রার্থীর মধ্যে কারোরই বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে জিতে অাসার সম্ভাবনা নেই। অামরা অাশা করেছিলাম, অহিদ অার রাবিনা যেহেতু একই বলয়ের প্রার্থী অন্তত তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একজন প্রার্থী হবেন। তাতে জয়ের সম্ভাবনা থাকত। অামাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে অাসত। কিন্তু এ নির্বাচনকে ঘিরে কোন্দল, হাতাহাতি অার হামলার ঘটনায় অামরা লজ্জিত। এখানে অামাদের শত্রু অামরাই। টাওয়ার হ্যামলেটসে লেবার পার্টির সাথে গত ৪২ বছর ধরে সম্পৃক্ত মোঃ লোকমান উদ্দীন। তিনি বলেন, অাজকে এখানে যারা বাংলাদেশী বংশোব্দুত মেয়র প্রার্থী তারা সবাই একসময় লেবার পার্টি করতেন। অার এবারের ভোটে তিনজনের জায়গায় বাঙ্গালী একজন প্রার্থী থাকলে জয়ের সমূহ সম্ভাবনা থাকত। সূত্র : সিলেটভিউ২৪ আর/১০:১৪/০৩ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HRQkCy
May 04, 2018 at 04:45AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন