বিচ্ছেদের পরে কেটে গিয়েছে সাত বছর। অতীত ভুলে টালিউডের নায়িকা-সহকর্মী শুভশ্রী গাঙ্গুলির সঙ্গে শুক্রবারই সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। কিন্তু এতবছর পরও রাজকে মনে করেছেন রাজের প্রথম স্ত্রী শতাব্দী মিত্র। টালিউডে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় রাজ-শুভশ্রীর বিয়ে। তার মধ্যেই নতুন আলোচনার জন্ম দিয়ে মুখ খুললেন শতাব্দী। তার এক বন্ধুর কাছে শতাব্দী স্পষ্টই জানিয়েছেন, অতীতের যাবতীয় তিক্ততার পরও শুভশ্রীকে নিয়ে রাজ খুশি থাকুক, এমনটাই চান তিনি। ২০০০ সালে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়েছিল শতাব্দী ও রাজের। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন তারা। শতাব্দীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলছেন, সেই সময়ে রাজ টালিউডে প্রতিষ্ঠা পায়নি। কাজের খোঁজ করছে কেবল। কিন্তু খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছে না। রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে টালিগঞ্জে একটা বাড়িতে ভাড়া থাকতো রাজ। সেই সময় শতাব্দী ওকে অনেক সাহায্য করেছে। টাকা পয়সা দেওয়া, খাবার দাবার দেওয়া, অসুস্থ হলে সেবা করা- সবই করেছে। শতাব্দীর আর এক বান্ধবীর দাবি, নিজের বাড়ির ফ্রিজ থেকে রাজের জন্য খাবার চুরি করতো শতাব্দী। তারপরে বাসে করে সেই খাবার বেহালা থেকে পৌঁছে দিয়ে আসতো রাজের কাছে। আবার কখনও মর্নিং ওয়াকে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে লুকিয়ে বেরিয়ে ব্রেকফাস্টের টাকা দিয়ে আসতো ওকে। কখনও জলের বোতল, কখনও ওষুধ, কখনও জামাকাপড় কিনে দেওয়া, কী করেনি ওর জন্য শতাব্দী! নিজের হাতখরচের টাকা নিঃস্বার্থভাবে খরচ করেছে রাজের জন্য। সেই সম্পর্কও টিকে থাকেনি! শুধু কী তাই, ২০০৬ সালে বিয়ে হয় রাজ ও শতাব্দীর। যেহেতু রাজের ফিল্মি ক্যারিয়ার তখনও সেভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়, তাই বিয়ে নিয়ে প্রাথমিকভাবে মত ছিল না শতাব্দীর অভিভাবকদের। কিন্তু রাজকেই বিয়ে করার জন্য জেদ ধরে বসেছিলেন শতাব্দী। মেয়ের জেদের কাছে হার মানেন অভিভাবকরা। আপন করে নেন রাজকে। শতাব্দীর বান্ধবী বলছেন, শতাব্দী রাজের জন্য খুব পয়া ছিল। ওকে বিয়ে করার পরে চিরদিনই তুমি যে আমার, চ্যালেঞ্জ, প্রেম আমারর মতো হিট ছবি দিয়েছিল রাজ। ততদিনে রাজকেও ঘরের ছেলে বলে স্বীকার করে নেন শতাব্দীর পরিবার পরিজনরা। ওর জন্য শতাব্দীর মা-বাবাও কম করেননি। এমনকী, রাজের শরীর খারাপ হলে সারারাত জেগে সেবাও করেছেন শতাব্দীর মা। সেটা অবশ্য রাজ নিজেও একাধিক জায়গায় স্বীকার করেছেন। অথচ এই মধুর সম্পর্কের মাঝখানে অভিশপ্ত নাম হয়ে প্রবেশ করে ফেললেন শুভশ্রী। তার সঙ্গে রাজের সম্পর্কের জের ধরেই নাকি সুখী দাম্পত্যে ধরেছিল চিড়। ঘনিষ্ঠমহলে শতাব্দী দাবি করেছিলেন, তার সঙ্গে বিবাহিত সম্পর্কে থাকলেও শুভশ্রীর সঙ্গে প্রেম করতে শুরু করেছিলেন রাজ। সেটা নিয়ে বাড়িতে অশান্তিও হয়। এমনকী, শুভশ্রীর বাড়িতে ফোন করে এই সম্পর্ক থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছিলেন শতাব্দী। শুভশ্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে নাকি বলা হয়, বয়স কম তাই ভুল করে ফেলেছেন শুভশ্রী। তিনি এই সম্পর্ক থেকে সরে আসবেন। এরই মধ্যে গুজব রটে শুভশ্রী নাকি প্রেম করছেন আর এক নায়ক দেবের সঙ্গে। কিন্তু তবু আশ্বস্ত হতে পারেননি শতাব্দী। পেশায় সংবাদমাধ্যমের কর্মী শতাব্দীর এক বান্ধবী বলছেন, ততদিনে আর এক নায়িকা পায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রাজের। দিনের পর দিন একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন তারা। শতাব্দীর সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন রাজ। তারপরেও এক বলিউডের এক বাঙালি গায়িকা এবং আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল রাজের। আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়িতে বিয়ের পর প্রথমদিন কী রান্না করলেন শুভশ্রী, জানলে চমকে যাবেন.. তাই বিরক্ত হয়েই নাকি আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শতাব্দী। ২০১১ সালের শেষ দিকে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। তবে এতকিছুর পরেও নাকি শতাব্দী বীতশ্রদ্ধ নন রাজের ওপরে। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি বলেছেন, রাজ খুব বিচিত্র আর রহস্যময় চরিত্রের একটি মানুষ। একমুহূর্তে এমন একটা কাজ করছে, যেটা দেখে ওর প্রতি শ্রদ্ধা জাগছে। পরমুহূর্তেই এমন একটা কাজ করছে, যেটা দেখে মনে হচ্ছে, কোনো মানুষ এমন কাজ করতে পারে? কখনও ওকে ভালবাসতে ইচ্ছা করতো। আবার কখনও ওকে ঘৃণা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকতো না। তাই বিচ্ছেদের পরেও মৌখিক ভদ্রতা নষ্ট করেননি রাজ ও শতাব্দী। আজও যখন কোনও পার্টি বা প্রিমিয়ারে দেখা হয়, রাজ যে সৌজন্য দেখান এবং যথেষ্ট ভালোভাবে কথা বলেন, সেটা কবুল করেছেন শতাব্দী। বলেছেন, রাজকে আমি এখনও ভালোবাসি। কখনই চাইব না ওর কোনো ক্ষতি হোক। শুভশ্রীর সঙ্গে ও নতুন জীবন শুরু করেছে। ওদের জীবন সুখে কাটুক। আমরা এখন অনেক পরিণত। দুজন পরিণত মানুষের মতোই অতীতটাকে সামলে নিতে চাই। আরও পড়ুন: রাজের বিয়ের দিন কী করেছেন মিমি? শতাব্দীর সঙ্গে থাকাকালীন ক্যারিয়ারের প্রথম তিনটে ছবিই সুপারহিট হয়েছিল রাজের। তাদের পারিবারিক বন্ধুরাও স্বীকার করে বলেন, শতাব্দী ছিল রাজের লাকি চার্ম। তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ২৪ আরএস/০৯:০০/ ১৫ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2IlUt5R
May 15, 2018 at 10:23PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন