দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বহাল থাকলেও সহজেই তার মুক্তি মিলছে না। তাকে আরও কিছু আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা হয় তার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের।
আপিল বিভাগের রায়ের পর খালেদা জিয়া জামিনে কারামুক্ত হতে পারছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) অবশ্যই জামিনে বের হবেন।’
কারামুক্তির প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনও তার বিরুদ্ধে যেসব মামলায় জামিন হয়নি, সেসব মামলায় তার জামিন করাতে হবে। তারপর সংশ্লিষ্ট আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিননামা দেওয়া হবে।’
খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সরকার যদি একটি অশুভ প্রচেষ্টা না করে, তবে এটা স্বচ্ছ যে, তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন।’
আজ বুধবার (১৬ মে) সকালে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটির হাইকোর্টের আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৮ ও ৯ মে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রসঙ্গত,গত ১২ মার্চ দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। পাশাপাশি এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা কেন বৃদ্ধি করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
পরে ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ আগামী ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে এই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন আদালত। আর আপিল আবেদনের সারসংক্ষেপ পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দেন। এছাড়া ৮ মে ওই আপিল আবেদনের ওপর শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই তাকে ওই দিন বিকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন। ওই রায়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অপর আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানাও করা হয়।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস https://ift.tt/2Imn8Yq
May 16, 2018 at 12:39PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন