গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি টিআর, কাবিখা ও কাবিটার অর্থ আত্মসাৎ বন্ধে ১০টি সুপারিশ করেছে
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২১শে মে এসব সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন দুদকের সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন। এছাড়া দুই পাতার চিঠির অনুলিপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কাবিখা/টিআর/কাবিটা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের নানা অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। এর ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়মের বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। এছাড়া পত্র পত্রিকায় এ বিষয়ে নানা ধরনের অনিয়মের প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়।
দুদক কর্তৃক পরিচালিক গণশুনানিকালেও এ সংক্রান্ত নানা অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এসব অভিযোগ ও কমিশনের অনুসন্ধানের বর্ণনা থেকে কাবিখা/টিআর/কাবিটা প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় যেসব অনিয়ম হয়ে থাকে তা রোধ করতে ১০টি সুপারিশ দেয়া হয়। দুদকের সুপারিশে বলা হয়, নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর অর্থ ছাড় করবে। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে অর্থ ছাড় করা হলে আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এজন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ ছাড় করা প্রয়োজন। বিশেষ প্রকল্পে অর্থ বা সম্পদ বরাদ্দ দিতে হলে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরকে প্রকল্প প্রস্তাব সরজমিনে যাচাই করে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। সুপারিশে বলা হয়েছে, দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর কেন্দ্রিক সক্রিয় দালাল চক্র ও সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা তাদের এজেন্টদের নিষ্ক্রিয় করা যেতে পারে। বিশেষ প্রকল্পে বরাদ্দের প্রস্তাব প্রয়োজনীয়তার নিরিখে সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) এসব বিশেষ প্রকল্পের প্রস্তাব শতভাগ সরজমিন যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। এসব কর্মকাণ্ড ভুয়া প্রকল্পের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিশেষ ও সাধারণ বরাদ্দের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নীতিমালা অনুসরণ হয়েছে কিনা তা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে শতভাগ নিশ্চিত করবেন। এ বিষয়ে ইউএনওদের নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। এসব কর্মকাণ্ড ভুয়া কমিটি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্প এলাকায় একাধিক সাইনবোর্ড সহজে দেখা যাওয়ার বিষয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক অডিট কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। নতুন করে একটি পরিপত্র জারি করে বলতে হবে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করতে ব্যর্থ হলে এবং এর ফলে কোনো প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটলে সবাই সমানভাবে দায়ী হবেন। এছাড়া অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পিআইসির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা কাবিখা প্রকল্পের অর্থ সরাসরি পিআইসির ব্যাংক একাউন্টে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সুপারিশে বলা হয়েছে, দুর্যোগ ছাড়া অন্য কোন প্রকল্পে বিশেষ বরাদ্দ না দেয়া যেতে পারে। এছাড়া উপজেলার অধীন সব রাস্তা, খাল, নালা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ডাটাবেজ প্রণয়ন ও সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এতে সংশ্লিষ্ট রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নকারী সংস্থার নাম ও উন্নয়নের সন অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। কোনো বছরে কোনো সংস্কার হলে তা আগের বছরের সংষ্কার কাজের সঙ্গে তুলনা করে একটি তুলনামূলক বিবরণী পেশ করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তারা দুদকের ১০টি সুপারিশ পেয়েছেন। এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2IREPPS
May 29, 2018 at 05:45PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন