কলকাতা, ০৯ মে- হাত থেকে হাতি, জামা থেকে টুথব্রাশ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে রয়েছে বহু অদ্ভুত নির্বাচনী প্রতীক। যার যৌক্তিকতা খুঁজতে যাওয়া বৃথা। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে প্যান। হ্যাঁ, বিশ্বাস হচ্ছে না! নজিরবিহীন ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গেরই। পঞ্চায়েত ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক পায়খানা থুড়ি পায়খানার প্যান। খবর সংবাদ প্রতিদিনের। পঞ্চায়েত ভোট বারাবনির স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব দাস। এলাকার উন্নয়নে একাই বাম, ডান, ঘাসফুলের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। ঘটা করে প্রচারে নামার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে বাদ সেধেছে প্যান। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক হিসেবে তাকে দেয়া হয়েছে এই চিহ্নটিই। আর তা নিয়েই বেজায় বিপাকে পড়েছেন বিপ্লব। সকাল সকাল লোকের সামনে পায়খানার ছবি তুলে ধরলে কী যে হবে তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন তিনি। শেষমেশ পায়খানা- এমন কটাক্ষ উড়ে আসছে বিভিন্ন দিক থেকে। হাসির খোরাক হয়েও গিয়েছেন ইতোমধ্যে। আরও পড়ুন : পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ঠেকাতে কমিউনিস্ট পার্টি-বিজেপি জোট তবে প্রার্থীর সমস্যা নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাতে রাজি নয় কমিশন বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিডিও অফিসের পাল্টা যুক্তি, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে স্যানিটারি চিহ্ন দেয়া হয়েছে। এতে সমস্যার কিছু নেই। বিপ্লব জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট। তাই গাঁয়ের লোকদের টয়লেট চিহ্নে ভোট দিন বললে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলে সবাই কমোডের ছবি ভাবছেন। আবার গ্রামীণ ভাষায় বোঝাতে গেলে পায়খানার প্যান শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। প্রার্থীর মতে দেয়ালে লিফলেটে পায়খানার প্যান কথাটি লিখলে বড্ড বেমানান ও অসম্মানের মনে হচ্ছে। ওই শব্দটি উচ্চারণ করলেই হাসির খোরাক হচ্ছেন তিনি। বিপ্লব দাস বলেন, ছবি এঁকে দেয়ালে শুধু লিখে দেব এই চিহ্নে ভোট দিন। কিন্তু পাড়ার মা মাসিমাদের কাছে কী বলব? রাস্তায় চায়ের দোকান থেকে সব জায়গায় চর্চা আর বিনোদনের খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই প্রতীক চিহ্নটি। তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে একমাত্র বিরোধী বিপ্লব দাস। ভোটের আবেদন করলেই নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে হেসে ফেলছেন শাসকদলের কর্মীরা। আচ্ছা বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। ভোট প্রচারে বেরিয়ে মাঝে মাঝে নিজেই হেসে লুটিয়ে পড়ছেন বিপ্লব। তবে পরিস্থিতির মোকাবেলায় তৈরি তিনি। স্বচ্ছ ভারত অভিযানকেই হাতিয়ার করে নিয়েছেন তিনি। ভোটারদের বোঝাচ্ছেন দেশজুড়ে টয়লেট নিয়ে বিপ্লব শুরু হয়েছে। সেখানে তার প্রতীক উন্নয়নের, সমাজ সচেতনতার। বারাবনি তিন নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শাসক দলের প্রার্থীকে যোগ্য মনে করেন না বিপ্লব। তাই প্রতিবাদী অরাজনৈতিক যুবক নিজেই লড়াইয়ে নেমেছেন। জীবনে প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে, লুকিয়ে-চুরিয়ে শাসকের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে মনোনয়ন জমা করেছেন। ওই আসনে কোনো বিরোধী দল মনোনয়ন জমা করতে পারেনি সেখানে বিপ্লব একাই রুখে দাঁড়িয়েছেন। আনকোরা হয়েও প্রথম ধাপে তিনি টেক্কা দিয়ে দিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোকে। তবে সামান্য একটি ভুলের জন্য তার কপালে জোটে পায়খানার প্রতীক। আবেদনপত্রে পছন্দের প্রতীক চিহ্ন লিখতে ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে পারলেও শাসকদলের কর্মীদের বাধায় প্রতীক চিহ্নের কাগজ তিনি নির্দিষ্ট দিনে জমা দিতে পারেননি। এই ঘটনায় বারাবনির বিডিও অনিমেষকান্তি মান্না বলেন, তাকে যে চিহ্ন দেয়া হয়েছে তা লজ্জার নয় গর্বের। সারাদেশ জুড়ে, রাজ্য জুড়ে টয়লেট নিয়ে সচেতনতার আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেই প্রতীক তিনি পেয়েছেন যা দেশের সচেতনতার এখন অন্যতম বার্তাবাহক। ওই প্রার্থীর খুশী হওয়া উচিত। এদিকে বিপ্লব জানান, এবার প্রচারে নামার পালা। এখনও দেয়াল লিখন শুরু হয়নি। পোস্টার ব্যানারও তৈরি করেননি। এখন তার চিন্তা প্রতীক চিহ্ন এঁকে ঠিক কী ভাষাতে ভোট আবেদন করবেন। কিন্তু মাঠে নামার আগেই যেভাবে প্রতীকটি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে তাতে তিনি চিন্তিত। সূত্র: আরটিভি অনলাইন আর/১৭:১৪/০৯ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2K7mdI0
May 10, 2018 at 12:18AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top