কলকাতা, ১১ মে- পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। এর পরই বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের তোপের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কবি শঙ্খ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে অনুব্রতের মন্তব্য নিয়ে এখন সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন অঙ্গনে। চলছে প্রতিবাদ। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও নেতা ছাড়া যে মফস্বল নেতার নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, তিনি হলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বেফাঁস ও কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য তিনি রাজ্যজুড়ে বিখ্যাত। সেই অনুব্রত মণ্ডল এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন তার জেলা বীরভূমে বিরোধী কোনো দলের ঠাঁই হবে না। এখানে শতকরা ১০০ আসনই থাকবে তৃণমূলের। কাউকে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যেতেও হবে না। আবার এ কথাও বলেছিলেন, বিরোধীরা বের হলে দেখবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন মুক্ত গণতন্ত্র শীর্ষক একটি কবিতা। কবিতার লাইন ছিল, যথার্থ এই বীরভূমি-/উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে/পেয়েছি শেষ তীরভূমি/দেখ খুলে তোর তিন নয়ন/রাজ্যজুড়ে খড়গ হাতে/দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন। এরই পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে কবি শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, বড় বড় কথা বলছেন কবি? এ কোন কবি? আমরা তো কবি বলতে জানতাম রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে। এ কোন নতুন কবি উঠে এসেছেন, যে আমার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন। অনুব্রত মণ্ডল আরও বলেন, কবির নাম শঙ্খ রাখা ঠিক হয়নি। শঙ্খ নামের অপমান করছেন উনি। এখনো বলছি রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, শঙ্খ একটা পবিত্র জিনিস। সব পবিত্র কাজে লাগে শঙ্খ। তাই শঙ্খ ভুল করলে দেবতাদের অসম্মান হয়। সে কারণে বলছি ওর নাম শঙ্খ রাখা ঠিক হয়নি। অথচ এই শঙ্খ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের এক প্রতিবাদী কণ্ঠ। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রধান মুখ ছিলেন তিনি। রাজ্যের পরিবর্তন চাই স্লোগান নিয়ে কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে রাজপথে নেমেছিলেন তিনি। নেমেছিলেন মমতার বামফ্রন্ট বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে। শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে অনুব্রতের মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন অঙ্গনে। চলছে প্রতিবাদ। সিপিএম নেতা ও রাজ্য বিধানসভার সিপিএমের পরিষদীয় দলের নেতা ও বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডল এর আগে নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন ও প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অশোক মিত্র সম্পর্কেও কুরুচিকর ভাষায় কথা বলেছেন। তাঁর কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কি আশা করা যায়? সেই কারণেই তো তিনি তৃণমূলের সম্পদ। প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেছেন, অনুব্রতের এই মন্তব্য ভয়ংকর নয়, বরং ভয়ংকর মুখ্যমন্ত্রী মমতার নীরবতা। কবি জয় গোস্বামী বলেছেন, এ রকম একজন কবি সম্পর্কে মন্তব্যে কারও মাথা ঘামানো উচিত নয়। তাঁর কোনো কথাকে গুরুত্ব না দেওয়াই ভালো। অভিনেতা কৌশিক সেন বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডল তো দলের মুখ। তাঁকে আর আলাদা করে রাখা যাবে না। নাট্যব্যক্তিত্ব সুমন মুখোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলা যেভাবে এগোচ্ছে, সংস্কৃতির নামে যেটা চলছে, তাতে এটাই স্বাভাবিক। সূত্র: প্রথম আলো আর/১০:১৪/১১ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2rD2Bnz
May 12, 2018 at 05:38AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন