সোনালী দিন আর নেই। সিনেমার ধুমধাম ব্যবসায়ের দৃশ্য এখন ইতিহাসের পাতায়। আয়নাবাজি, ঢাকা অ্যাটাকর মতো হুটহাট কিছু বজ্রপাত ছাড়া সিনেমার সাফল্য পাওয়া যায় কেবল উৎসবগুলোতেই। তারমধ্যে সবচেয়ে বেশি দর্শক হলে আসে দুই ঈদে। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও রোজা ঈদকে ঘিরে চলছে ঈদের সিনেমার প্রচার-প্রস্তুতি। এখন পর্যন্ত সাতটি সিনেমা আলোচনায় রয়েছে, ঈদে মুক্তি পাবে বলে। সাত ছবির হিসেব নিকেষে শেষ পর্যন্ত কটি ছবি মুক্তি পাবে সেটা আপাতত বলা মুশকিল। তবে এখনই নিশ্চিত করে বলে দেয়া যায় যে ঈদের ছবিগুলোকে এবার নিজেদের বাইরেও ভিন্ন এক প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে হবে। আর সেটি হলো ফুটবল বিশ্বকাপ। আসছে ১৪ জুন থেকে পর্দা উঠছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের। ১৫ তারিখ থেকে মাঠে গড়াবে বিশ্বকাপের ম্যাচ। এদিকে ৩০টি রোজা সম্পূর্ণ হলে ১৬ জুন অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল ফিতর। রোজা একটি কম হলে বিশ্বকাপ শুরুর দিনই ঈদ পালিত হবে বাংলাদেশে। ফুটবলের এই মহা আসরকে নিয়ে টেনশানে আছেন সিনেমার প্রযোজকরা। মেসি, নেইমারদের বিশ্বকাপের মাতামাতি রেখে দর্শক কী হলে আসবে- এই ভাবনায় বেশ ভালোই মাথা ঘামাতে হচ্ছে হল মালিকদের। দুশ্চিন্তায় সিনেমার পরিবেশকরাও। এই প্রসঙ্গে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, দেখুন, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে ফুটবল এই দেশের মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় একটি খেলা। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে আমাদের এখানকার ফুটবলপ্রেমীদের আবেগটা অন্যরকম। এখানে সারা দিন ফুটবল নিয়ে আলোচনা হয় তারপর রাত জেগে থেকে খেলা দেখা হয়। এই একটা মাস বিনোদনের সেরা অনুষঙ্গ হয়ে থাকে ফুটবল। এমন সময়ে ঈদ আসছে এবং ঈদের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে; এটা একটু দুশ্চিন্তারই। ফুটবল বিশ্বকাপ সিনেমার বাজারে একটা প্রভাব ফেলবেই। তিনি আরও বলেন, এখন তথ্য প্রযুক্তিতে চরম উন্নতির যুগ। খুব একটা মন্দ প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। কারণ খেলা প্রচার হয়ে গেলেও পুরো খেলাই ইউটিউবসহ নানা মাধ্যমে পরবর্তিতে দেখা নেয়া যায়। তাই যারা সিনেমার দর্শক তারা ঠিকই হলে আসবেন। আর খেলা তো শুরু হবে রাতে। সেদিক থেকে দিনের শো-গুলোতে দর্শকের চাপ বেশি থাকবে। এটাও হল মালিকদের জন্য উপভোগ্য ব্যাপার হবে। তবে একজন পরিবেশক নেতা পরামর্শও দিলেন ফুটবল বিশ্বকাপের মোকাবেলায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই পরিবেশক বলেন, ব্যাপারটি অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতোই। যে বিশ্বকাপকে হুমকি ভাবা হচ্ছে সেই বিশ্বকাপকে ঈদের সিনেমার প্রচারণায় কাজে লাগাতে হবে। সেটি পারলেই দর্শকরা ফুটবল বিশ্বকাপও দেখবে, সিনেমাও দেখবে। এক্ষেত্রে তিনি বলনে, যেসব সিনেমা মুক্তি পাবে তার নায়ক-নায়িকা ও কলাকুশলীরা ফুটবল নিয়ে নানারকম প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন। সিনেমা ও ফুটবলকে এক করে বিশেষ কুইজ বা পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকলে দর্শকরা বাড়তি আগ্রহ নিয়ে সিনেমা হলে আসবেন। মানুষ বিনোদন চায়। তার কাছে যেটা সেরা মনে হবে সে সেটাই গ্রহণ করবে। কৌশল করে এই মন্দ প্রভাবের আংশকা কাটানোর চেষ্টা করতে হবে। নইলে দেখা যাবে, সিনেমা হলগুলোতে সিনেমার বদলে মেসি-নেইমারদের খেলাই প্রদর্শিত হচ্ছে। এদিকে সাত ছবির মধ্যে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়েছে তিনটি চলচ্চিত্র। সেগুলো হলো আবদুল মান্নান পরিচালিত পাঙ্কু জামাই, উত্তম আকাশ পরিচালিত চিটাগাইঙ্গা পোয়া ও নোয়াখাইল্লা মাইয়া এবং রায়হান রাফী পরিচালিত পোড়ামন ২। প্রথম দুটি ছবিতে নায়ক শাকিব খান হাজির হবেন নায়িকা অপু বিশ্বাস ও বুবলীর সঙ্গে। আর পোড়ামন ২ ছবিটিতে দেখা মিলবে ইন্ডাস্ট্রির নতুন জুটি সিয়াম-পূজার। মুক্তির মিছিলে রয়েছে শামীমুল ইসলাম শামীমের আমার প্রেম আমার প্রিয়া, আশিকুর রহমানের সুপার হিরো, কলকাতার দুই ছবি ভাইজান এলো রে এবং সুলতান-দ্য সেভিয়র। এই চার ছবির মধ্যে ঝামেলাহীন রয়েছে আমার প্রেম আমার প্রিয়া। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসলেও ছবিটি মুক্তি পাবার সম্ভাবনাই বেশি। এতে জুটি বেঁধেছেন আরজু কায়েস ও পরীমনি। নিটোল প্রেমের গল্পের ছবিটি হল মালিকদের আগ্রহে রয়েছে বলে জানা গেছে। আরও পড়ুন: শাকিব ভাই আমাদের দেশের সম্পদ: সিয়াম আহমেদ তবে নানা অভিযোগে মুক্তির হুমকিতে রয়েছে বাকী তিনটি ছবি। যার দুটিতেই নায়ক হিসেবে রয়েছেন শাকিব খান। সুপার হিরো-তে তার নায়িকা বুবলী এবং ভাইজান এলো রে ছবিতে শাকিবের বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার শ্রাবন্তী ও পায়েল সরকারকে। আর জিতের সঙ্গে সুলতান ছবিতে দেখা যাবে লাস্যময়ী সুন্দরী অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমকে। সিনেমার ব্যবসায়ের প্রতিযোগীতায় শেষ হাসি কে হাসবে সেটা জানা যাবে ঈদের পরের সপ্তাহেই। তবে প্রতিপক্ষ ফুটবল বিশ্বকাপ যে বেশ ভালোই ভুগাবে শাকিব-সিয়াম-অপু-বুবলীদের তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ২৪ আরএস/০৯:০০/ ২৯ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2shWhCQ
May 29, 2018 at 04:40PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top