তারকাদের বিয়ে নিয়ে দর্শক আর পাঠকদের মনে থাকে বাড়তি আগ্রহ। তাঁদের বিয়ের সাজ, পোশাক, গয়না, আয়োজনসবকিছুর সংবাদ নিয়েই তাই গণমাধ্যমগুলো থাকে সরগরম। আর বিয়ের আগে প্রচার হতে থাকে তারকাদের প্রেমের খবর। তবে নায়ক-নায়িকাদের প্রেম ও বিয়ের মধ্যে থাকে আরও মজার কিছু গল্প। বলিউডের কয়েকজন তারকার বিয়ের প্রস্তাবের গল্পও বেশ মজার। এই প্রতিবেদনের তেমন কয়েকটি গল্পই পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো। শাহরুখ খান ও গৌরী খান শাহরুখ খানকে বলা হয় বলিউডের প্রেমের রাজা। পর্দায় তাঁকে প্রেম করতে দেখেই অভ্যস্ত দর্শক। বাস্তব জীবনে স্ত্রী গৌরীর সঙ্গেও তাঁর এক অসাধারণ প্রেমকাহিনি আছে। শাহরুখ আর গৌরী দুজনই ছিলেন দিল্লির বাসিন্দা। তরুণ বয়স থেকেই শাহরুখ আর গৌরী একে অন্যের প্রেমে মজেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক কিছু জটিলতার কারণে তাঁরা একসময় দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দিল্লি থেকে বন্ধুদের সঙ্গে মুম্বাইয়ে বেড়াতে যান গৌরী। এক দিন, দুই দিন, তিন দিন পার হতে থাকে, আর দিনে দিনে শাহরুখ টের পেতে থাকেন, গৌরীকে ছাড়া থাকা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। গৌরীকে খুঁজতে দিল্লি থেকে মুম্বাই চলে যান শাহরুখ। তখন যোগাযোগব্যবস্থা আজকের মতো সহজ ছিল না। শহরজুড়ে গৌরীকে পাগলের মতো খুঁজছিলেন শাহরুখ। অনেক কষ্টে শেষমেশ তাঁকে মুম্বাইয়ের একটি সৈকতে খুঁজে বের করেন। ততক্ষণে গৌরীর মনও মোমের মতো গলতে শুরু করেছে। দেরি না করে মুম্বাইয়ের সেই সমুদ্রসৈকতেই গৌরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন শাহরুখ খান। অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন অভিষেক বচ্চন ২০০৩ সালে কুচ না কহো ছবিতে কাজ করার সময় সহশিল্পী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের প্রেমে পড়েন। কিন্তু প্রেমের কথা প্রকাশ না করে মনেই পুষে রাখেন জুনিয়র বচ্চন। এরপর ২০০৭ সালে গুরু ছবিতে আবার তাঁরা জুটি হন। নিউইয়র্কে সেই সিনেমার শুটিং করার সময় এক রাতে হোটেলের বারান্দার দাঁড়িয়ে অভিষেক ভাবছিলেন, ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে যদি ঘর বাঁধতে পারতাম, তাহলে কতই না ভালো হতো। এরপর অবশ্য বেশি দিন মনের কথা গোপন রাখতে হয়নি অভিষেককে। নিউইয়র্কে গুরু ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীর সময় সেই হোটেলের বারান্দাতেই ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে যান অভিষেক এবং সেখানেই তিনি ঐশ্বরিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। একই বছর বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তাঁরা। সাইফ আলী খান ও কারিনা কাপুর খান সাইফ আলী খান আর কারিনা কাপুর খানের বিয়ে ছিল বলিউডের অন্যতম আলোচিত এক বিয়ে। বিয়ের সময় তাঁদের দুজনের বয়সের পার্থক্য নিয়েও কথা হয়েছে অনেক। কিন্তু বিয়ের প্রায় অর্ধযুগ ভালোভাবেই পার করে দিলেন তাঁরা। তাঁদের বিয়ের প্রস্তাবের গল্পটিও বেশ মজার। সাইফ আর কারিনার একবার হুট করেই প্যারিসে দেখা হয়ে যায়। আগে থেকেই তাঁরা পরিচিত ছিলেন কিন্তু সেবার দুজনের প্যারিস গমনের উদ্দেশ্য ছিল আলাদা। সেখানে গিয়েই নাকি সাইফ প্রথমবার কারিনার প্রতি প্রেম অনুভব করেন। সেখানকার একটি বারে প্রথম কারিনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সাইফ। কারিনা তাঁকে সরাসরি না করে দেন। এর কয়েক দিন পর দুজন একসঙ্গে ফ্রান্সের একটি গির্জায় ঘুরতে গেলে সাইফ আবারও কারিনাকে প্রস্তাব দেন। কারিনা এবারও সাইফের মন ভাঙেন। এই নায়িকা সাইফকে সাফ জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে আর কথা না বলাই ভালো। কারণ, আমি এখন শুধু ক্যারিয়ার নিয়েই ভাবতে চাই। কিন্তু তারপর কি হয় জানেন? এর ঠিক দুই দিন পর কারিনা নিজেই সাইফকে ডেকে তাঁর আজীবনের সঙ্গী হতে রাজি হন। কাকতালীয়ভাবে সাইফের বাবা মনসুর আলী খানও তাঁর স্ত্রী শর্মিলা ঠাকুরকে প্যারিসেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শর্মিলা তখন সেখানে অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস ছবির শুটিং করছিলেন। সোহা আলী খান ও কুনাল খেমু পতৌদি পরিবারের প্রেমকাহিনিগুলোর সঙ্গে প্যারিসের এক অদ্ভুত যোগসূত্র। পৃথিবীর সবচেয়ে রোমান্টিক শহর বলা হয় ফ্রান্সের প্যারিসকে। আর এই রোমান্টিক শহরেই পতৌদির নবাব পরিবারের একেকজনের প্রেম পূর্ণতা পায়। সোহার বাবা মনসুর আলী খান পতৌদি ও ভাই সাইফ আলী খান। তাঁদের দুজনেরই এই শহরে প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ইতিহাস আছে। সোহাদের বংশের সেই ধারা বজায় রাখতেই নাকি কে জানে কুনাল খেমুও প্যারিসেই সোহাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। বিয়ের আগে কুনালের সঙ্গে এক মাসের ইউরোপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন সোহা। ঘুরতে ঘুরতে প্যারিসে পৌঁছে সোহাকে রোমান্টিক কায়দায় বিয়ের প্রস্তাব দেন কুনাল। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তাঁরা। বিপাশা বসু ও করণ সিং গ্রোভার অ্যালোন ছবির শুটিং করতে গিয়ে কাছে আসেন বলিউড তারকা বিপাশা বসু ও করণ সিং গ্রোভার। মন দেওয়া-নেওয়া হয়ে গেলেও বিয়ের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না বিপাশা। করণ আর বিপাশা একবার নববর্ষের ছুটি কাটাতে থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে থাইল্যান্ডের কো সামুই দ্বীপের আকাশে তখন আতশবাজি ফুটছে। আর সেই দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছিলেন বিপাশা। করণ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি আসলে বিপাশাকে নিজের মনের কথা বলার সুযোগ খুঁজছিলাম। ও যখন উচ্ছ্বসিত হয়ে আতশবাজির ভিডিও করছিল, আমি তখনই বিপাশার সামনে হাঁটু গেড়ে বসি। ওকে বলি, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে? তখন বিপাশার কী অবস্থা হয়েছিল জানেন? করণের ভাষায়, মনে হচ্ছিল বিপাশার সামনে বুঝি কাউকে খুন করা হচ্ছে। আমার প্রস্তাব শুনে এমন ভয়ংকর অভিব্যক্তিই প্রকাশ করেছিল সে। বিপাশা নাকি তখন করণের কাছে বারবার জানতে চাইছিলেন, তোমার সমস্যা কী? তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও কেন? আমি কোনো দিন বিয়ে করব না। তাঁকে রাজি করাতে টানা ১০ মিনিট একইভাবে বসেছিলেন করণ। শেষে বিপাশা শুধু বলেছিলেন, ওকে। এই ওকে-এর মানেই ছিল আমি রাজি। এমএ/ ০৯:৩৩/ ২৩ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2knEvtE
May 24, 2018 at 03:53AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন