"নবজাতক শিশুর যত্ন কী করবেন, কী করবেন না".......ডা. নাহিদ ইসলাম মুন

ভালো বাবা-মার দায়িত্ব পালন করতে সন্তানের পরিচর্যা সঠিকভাবে জানা জরুরী। যাঁরা প্রথমবারের মতো মা-বাবার স্তরে উন্নীত হয়েছেন, তাঁরা শিশু চিকিৎসকের  কাছে শিশুর যত্নের বিভিন্ন খুঁটিনাটি জেনে নিতে পারেন। সকল পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হতে পারে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস জেনে নিই।
তুলে নেওয়ার সময়ঃ
সর্বদা এক হাত মাথার নিচে রেখে সাপোর্ট দিয়ে ছোট্ট শিশুকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিতে হবে। কখনো মাথা ধরে ঝুলিয়ে নেয়া উচিত নয়।
বুকের দুধ পানেঃ
দুধ পান করানোর সঠিক পদ্ধতি জেনে নিতে হবে। মা পিঠ সোজা করে বসবেন। শিশুর পেট মায়ের পেটের সাথে লেগে যাবে। শিশু বড় হাঁ করে স্তনের বোঁটা মুখে নিবে।
শিশুর বিছানাঃ
অতিরিক্ত তুলতুলে বিছানায় শিশু উলটে গিয়ে নাক-মুখ চেপে শ্বাস-প্রশ্বাসে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। শিশুর বিছানা কিছুটা শক্ত ও দুপাশে বালিশ ব্যবহার করুন।
শিশুকে জাগানোঃ
ঘুমন্ত শিশুকে জাগিয়ে তুলতে তীব্র কোনো শব্দ কিংবা জোরে ঝাঁকুনি দেয়া যাবেনা। তাকে আলতোভাবে চুম্বন-স্পর্শ দিয়ে জাগিয়ে তুলুন।
শিশুর খেলার সময়ঃ
শিশু একা একা খেলতে যেয়ে যেনো বিপদজনক স্থানে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং খেলার সময় এমনভাবে দুই হাতে ধরতে হবে, যেন হাত ছিটকে না পড়ে।
শিশুকে শান্ত করানোঃ
শিশুকে শান্ত করতে যা পাওয়া যায় তা দিয়ে বশ করতে যাওয়া অনুচিত। এগুলোর মাঝে বিপদজনক দ্রব্যও থাকতে পারে। বরং তাকে কাঁধে নিয়ে মায়া-মমতার পরশের হাত পিঠে বুলিয়ে দিলে কান্না থেমে যাবে।
শিশুকে হাসাতেঃ
শিশুর সুস্থ্য শারিরিক ও মানসিক বিকাশে আনন্দপূর্ণ ও মজাদার পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই শিশুকে সময় দিতে হবে এবং রঙবেরঙের খেলনা ও পুতুল দিয়ে আকৃষ্ট করা যেতে পারে। তবে মুখে আঙুল ঢুঁকিয়ে মজা করা যাবেনা।
ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বড়দেরতো বটেই, শিশুরাও বেশকিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমের মঝে হটাৎ মেঘ জমিয়ে বৃষ্টি আসে। এসময়গুলো ঠান্ডা, জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। নবজাতকের ত্বক খুব স্পর্শকাতর হয় বলে ত্বকের যতেœর ব্যাপারে অভিভাবকদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। অনেক অভিভাবকই প্রচুর পরিমাণে পাউডার বা তেল শিশুর ত্বকে ব্যবহার করেন, যা শিশুর ত্বকের জন্য তিকর। অতিরিক্ত পাউডার ব্যবহারে শিশুদের ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায় বলে সাধারণ শারীরিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এতে শিশুর ঘামাচি ও ন্যাপি র‌্যাশও হতে পারে। অতিরিক্ত রোদে ছোট বাচ্চা নিয়ে বের হওয়া উচিত না। নবজাতকের সামনে হাঁচি-কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। না হলে জীবাণু শিশুকে সহজে আক্রমণ করতে পারে। শিশুকে ঠান্ডা ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশে রাখা উচিত। ঘেমে গেলে খেয়াল করে বারবার শুকনো নরম কাপড় দিয়ে গা মুছে দিতে হবে। তিনি বলেন, অবশ্যই এই গরমে শিশুকে সুতির নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরানো উচিত।
নবজাতকের মাকে প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার এবং পানি পান করতে হবে। এতে মায়ের বুকের দুধ থেকে শিশু উপকৃত হবে।
স্বাভাবিক যত্নের মাধ্যমেই নবজাতক স্বস্তিতে থাকবে আর অভিভাবকের সচেতনতাই দেবে নবজাতকের সুস্থ ও সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা।
লেখকঃ ডা. নাহিদ ইসলাম মুন
মেডিকেল অফিসার
শিশু বিভাগ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।


from Chapainawabganjnews https://ift.tt/2Jp8tvm

June 02, 2018 at 10:03PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top