আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান আমের বাজার কানসাট আম বাজারসহ অন্যান্য আম বাজারে প্রচুর আম নামলেও এবছর ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। ক্রেতার পরিমাণ কম থাকা আর সেই সঙ্গে ঈদকে ঘিরে পরিবহন সমস্যার কারণে বাজারের আমের দামও নেমে এসেছে হাতের নাগালের মধ্যে। আমের ভরা মৌসুমে যেখানে দম ফেলার ফুরসত থাকেনা আম চাষী-ব্যবসায়ীসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সেখানে এবার বাজারে বাজারে ব্যতিক্রমী চিত্র।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রায় এক মাস হতে চললো, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে উঠেছে আম। কিন্তু এখনো বাজার জমে উঠেনি। যদিও এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে গুটি ও গোপালভোগ জাতের আম। এখন বাজারে হিমসাগর ও ল্যাড়া জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের সাধুরঘাট আমবাজারের ব্যবসায়ী বাবলু ও সুকুমার জানালেন, এ বছর আমের ভরা মৌসুম পড়েছে রমজান মাসে। রমজান মাসে এমনিতেই আমের চাহিদা কম থাকে। তাই বাজার জমছেনা। কেতাবুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জানালেন, দেশের অন্যান্য জেলার আমও ঢাকায় যাচ্ছে। সেগুলোকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বলে কম দামে বিক্রি করছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। যে কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাধুরঘাট বাজারে পর্যাপ্ত পাইকারদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছেনা। তিনি আরো জানান, ক্রেতা আর পাইকাররা না আসায় আমের দাম এ বছর খুবই কম। হিমসাগর ও ল্যাংগা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা মণ দরে। খুব বেশি হলে ১২০০ টাকা মণ পাওয়া যাচ্ছে। অথচ গত বছর এই সময়ে হিমসাগর বা ল্যাংড়া আমের বাজারদর ছিল প্রতিমণ দুই হাজার টাকার ওপরে।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে বড় আম বাজার কানসাট আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই সাইকেল ও ভ্যানে করে আম নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারিদের আনাগোনা ছিল কম।
বাজারে আম কেনা-বেচা কম হওয়ার আরেক কারণ হিসেবে ঈদের ছুটিতে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল বন্ধকে চিহ্নিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রোজার মধ্যেও কিছু ক্রেতা আম কিনতে বাজারে আসতো, বিভিন্নস্থানে স্বজনদের কাছে পাঠানোর জন্য। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণগত ১১ জুন থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার দুই/একটি কুরিয়ার সর্ভিস খুললেও এখনো তেমনভাবে আম বুকিং শুরু হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসএমএম কুরিয়ার সার্ভিসের ইনচার্জ সাখাওয়াত জামিল দোলন বলেন, আগের দিন সন্ধ্যায় যে কাভার্ডভ্যান আম নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে যায়, সড়কে যানজটের কারণে সেটি ঢাকা পৌছাতে পরদিন বিকাল হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সময়মতো আম ডেলিভারী করা যাচ্ছেনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুমিষ্ট আমের খ্যাতি আছে দেশজুড়েই। কিন্তু নানান কারণে আম বাণিজ্যটা ধ্বংসের মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আম নামানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ফলে। সময়সীমার বেঁধে দেয়ার কারণে এক থেকে দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে সারাদেশের আম বাজারবাত করতে হচ্ছে। এতে ঢাকার আমোর মোকামগুলোতে বিপুল পরিমান আম সরবরাহ হচ্ছে। এতে দাম কমে যাচ্ছে। তিনি সময়সীমা বেঁধে না দেয়ার অনুরোধ জানান প্রশাসনের প্রতি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা বলেন, দিন দিন এ জেলায় আমের বাগান বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সাথে ফলনও বেড়েছে। এবার বাজারে আমের দাম কিছুটা কম, তবে ব্যবসায়ীরা যাতে আম বিক্রি করতে পারেন, সেই লে আমরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছি।
এছাড়াও আম পরিবহনের সময় যাতে কোনো ধরনের ঝামেলায় পড়তে না হয়, সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের সাথে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে, তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টর জামিতে আম বাগান আছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন লক্ষমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২১-০৬-১৮
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রায় এক মাস হতে চললো, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে উঠেছে আম। কিন্তু এখনো বাজার জমে উঠেনি। যদিও এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে গুটি ও গোপালভোগ জাতের আম। এখন বাজারে হিমসাগর ও ল্যাড়া জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের সাধুরঘাট আমবাজারের ব্যবসায়ী বাবলু ও সুকুমার জানালেন, এ বছর আমের ভরা মৌসুম পড়েছে রমজান মাসে। রমজান মাসে এমনিতেই আমের চাহিদা কম থাকে। তাই বাজার জমছেনা। কেতাবুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জানালেন, দেশের অন্যান্য জেলার আমও ঢাকায় যাচ্ছে। সেগুলোকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বলে কম দামে বিক্রি করছেন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। যে কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাধুরঘাট বাজারে পর্যাপ্ত পাইকারদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছেনা। তিনি আরো জানান, ক্রেতা আর পাইকাররা না আসায় আমের দাম এ বছর খুবই কম। হিমসাগর ও ল্যাংগা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা মণ দরে। খুব বেশি হলে ১২০০ টাকা মণ পাওয়া যাচ্ছে। অথচ গত বছর এই সময়ে হিমসাগর বা ল্যাংড়া আমের বাজারদর ছিল প্রতিমণ দুই হাজার টাকার ওপরে।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে বড় আম বাজার কানসাট আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই সাইকেল ও ভ্যানে করে আম নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারিদের আনাগোনা ছিল কম।
বাজারে আম কেনা-বেচা কম হওয়ার আরেক কারণ হিসেবে ঈদের ছুটিতে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল বন্ধকে চিহ্নিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রোজার মধ্যেও কিছু ক্রেতা আম কিনতে বাজারে আসতো, বিভিন্নস্থানে স্বজনদের কাছে পাঠানোর জন্য। এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণগত ১১ জুন থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার দুই/একটি কুরিয়ার সর্ভিস খুললেও এখনো তেমনভাবে আম বুকিং শুরু হয়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসএমএম কুরিয়ার সার্ভিসের ইনচার্জ সাখাওয়াত জামিল দোলন বলেন, আগের দিন সন্ধ্যায় যে কাভার্ডভ্যান আম নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে যায়, সড়কে যানজটের কারণে সেটি ঢাকা পৌছাতে পরদিন বিকাল হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সময়মতো আম ডেলিভারী করা যাচ্ছেনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুমিষ্ট আমের খ্যাতি আছে দেশজুড়েই। কিন্তু নানান কারণে আম বাণিজ্যটা ধ্বংসের মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আম নামানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ফলে। সময়সীমার বেঁধে দেয়ার কারণে এক থেকে দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে সারাদেশের আম বাজারবাত করতে হচ্ছে। এতে ঢাকার আমোর মোকামগুলোতে বিপুল পরিমান আম সরবরাহ হচ্ছে। এতে দাম কমে যাচ্ছে। তিনি সময়সীমা বেঁধে না দেয়ার অনুরোধ জানান প্রশাসনের প্রতি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা বলেন, দিন দিন এ জেলায় আমের বাগান বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সাথে ফলনও বেড়েছে। এবার বাজারে আমের দাম কিছুটা কম, তবে ব্যবসায়ীরা যাতে আম বিক্রি করতে পারেন, সেই লে আমরা অনলাইনে বিভিন্ন প্রচারণা চালাচ্ছি।
এছাড়াও আম পরিবহনের সময় যাতে কোনো ধরনের ঝামেলায় পড়তে না হয়, সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের সাথে আমাদের কথাবার্তা হয়েছে, তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ বছর ২৯ হাজার ৫১০ হেক্টর জামিতে আম বাগান আছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন লক্ষমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ২১-০৬-১৮
from Chapainawabganjnews https://ift.tt/2K5Y3hq
June 21, 2018 at 09:56PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন