লন্ডন, ২৯ জুন- মাত্র ১১ বছর বয়সে এসেছিলেন লন্ডনে। এরপর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই তরুণ কাজ করেন লন্ডনের সিটি এয়ারপোর্টে ক্লিনার হিসেবে। সেখানে কাজ করতে করতেই স্বপ্ন দেখেন বিশ্বের প্রথম হালাল এয়ারলাইন প্রতিষ্ঠার। ৩২ বছর বয়সে সে স্বপ্নকে বাস্তব করছেন কাজী শফিকুর রহমান। গড়েছেন ফিরনাস এয়ারওয়েজ। ব্রিটিশ মূলধারার মিডিয়ায় এখন মাতামাতি শফিকুরকে নিয়ে। সফল এ ব্রিটিশ বাংলাদেশি উদ্যোক্তাকে নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রচার করেছে বিখ্যাত চ্যানেল ফোর টেলিভিশন। এরপর চ্যানেল ফোর ছাড়াও বিবিসি, সানডে টাইম, ডেইলি মেইল, টেলিগ্রাফ, ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ডসহ অনেক গণমাধ্যম তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বের অন্যান্য গণমাধ্যমেরও সমান মনোযোগ কাড়েন শফিকুর। শফিকুরকে নিয়ে হাও টু স্টার্ট অ্যান এয়ারলাইন শিরোনামের ডকুমেন্টারির পরিচালক ছিলেন আহমেদ পীরবক্স। ডকুমেন্টারিটি নির্মাণের জন্য দুই বছর শফিকুরের এয়ারলাইন্স ব্যবসার নানা উদ্যোগ, পরিকল্পনা এবং সফল বাস্তবায়ন নিয়ে চিত্রধারণ করা হয়। লন্ডনে সুন্না মাস্ক নামের আতর ব্রান্ডের ব্যবসায় সফলতার পর এয়ারলাইন্স ব্যবসার উদ্যোগ নেন শফিকুর। এ জন্য ২০১৪ সালে ফিরনাস এয়ারওয়েজ নামে ব্রিটেনে প্রথম শরিয়াভিত্তিক হালাল এয়ারলাইন চালুর ঘোষণা দেন। তার এই উদ্যোগ মোটামুটি সফল বাস্তবায়নের দিকে। এরই মধ্যে ফিরনাস এয়ারওয়েজের বহরে যুক্ত হয়েছে ১৯ সিটের ব্রিটিশ প্রস্তুতকারক বিএই জেটস্ট্রিম প্লেন। মূলধারার মিডিয়ায় শফিকুরকে অভিহিত করা হয়েছে সেলফ স্টাইলড হালাল রিচার্ড ব্রান্ডসন হিসেবে। তিনিই প্রথম ব্রিটেনে চালু করতে চান শরিয়া কমপ্লায়েন্ট এয়ারলাইন। এই এয়ারলাইনের বিমানে পরিবেশন করা হবে না কোনও অ্যালকোহল, থাকবে সব ধরনের হালাল খাবার এবং কেবিন ক্রুদের পোশাক বা ড্রেসকোডে থাকবে ইসলামি ভাবধারার ছাপ। শফিকুর ব্রিটেনে আসেন ১৯৯৭ সালে। পড়াশোনা করেছেন মাত্র জিসিএসসি লেভেল পর্যন্ত। তরুণ এই উদ্যোক্তা কয়েক বছর আগে মাত্র ৬০০ পাউন্ড দিয়ে পারফিউমের ব্যবসা চালু করেন। সুন্না মাস্ক নামের এই পারফিউম ব্রান্ড এখন ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটি ছাড়িয়ে মূলধারায়ও পরিচিত। ওয়েস্টফিল্ডের মতো বিশ্বমানের শপিং সেন্টারে রয়েছে সুন্না মাস্কের শোরুম। বার্ষিক টার্নওভার ছাড়িয়েছে মিলিয়ন পাউন্ডে। সিটি এয়ারপোর্টে ক্লিনিংয়ের কাজ করার সময় শফিকুর স্বপ্ন বোনেন এয়ারলাইন প্রতিষ্ঠার। চ্যানেল ফোর-এর ডকুমেন্টারিতে তিনি বলেছেন, তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। কিন্তু যখন এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি পার হন, তখন নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। এয়ারপোর্টগুলোতে মুসলমানদের অনেক সুবিধাই নেই। এমন পরিবেশ বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারপোর্টে। এ অবস্থায় শরিয়াভিত্তিক এয়ারলাইন প্রতিষ্ঠা হলে এই পরিবেশের একটি আমূল পরিবর্তন হবে। ২০১৭ সালে শফিকুর ভূষিত হন ব্রিটিশ মুসলিম উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ডে। ২ বোন এবং ৫ ভাই মিলে তারা থাকেন ইস্ট লন্ডনে। এয়ারলাইনটির নাম তিনি রেখেছেন স্পেনের আব্বাস ইবনে ফিরনাসের নামে। তিনি প্রথম মুসলিম, যিনি বিশ্বে সফলতার সঙ্গে হিউম্যান ফ্লাইট পরিচালনা করেছিলেন ৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন এমএ/ ০৮:২২/ ২৯ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Kv4PAM
June 30, 2018 at 02:25AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top