লন্ডন, ১১ জুলাই- প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি ঘর বরাদ্দ নেওয়ার ঘটনায় লন্ডনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলীকে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় কোটি টাকা জরিমানা করেছে আদালত। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেসরিলিজে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র জন বিগস মঙ্গলবার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পুরো ঘটনাটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। জানা যায়, হাউজিং প্রতারণার দায়ে আদালতের আদেশ অনুযায়ী ১১০ হাজার পাউন্ড পরিশোধ না করলে আবারও জেলে যেতে হতে পারে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের হোয়াইটচ্যাপল ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলীকে। জেলে না যেতে চাইলে কোর্টের কনফিসকাশন অর্ডার অনুযায়ী ১১০ হাজার পাউন্ড ফিরিয়ে দিতে হবে তাকে। একই সঙ্গে কোর্টের খরচ বাবদ পরিশোধ করতে হবে আরও ৭০ হাজার পাউন্ড। এর আগে হাউজিং নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দোষ স্বীকার করায় ২০১৬ সালের অক্টোবরে তাকে ৫ মাসের জেল দিয়েছিল স্নেয়ার্সব্রোক ক্রাউন কোর্ট। আদালতের শুনানিতে জানানো হয়েছে, সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলী ২০০৯ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্যোশাল হাউজিংয়ের জন্য আবেদন করেন। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, তার থাকার জায়গা নেই। তিনি আত্মীয়ের বাসায় সোফাতে রাত্রিযাপন করেন। এরপর বারার ক্রিশ্চিয়ান স্ট্রিটে তাকে এক বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট দেয় কাউন্সিল। কাউন্সিল ফ্ল্যাট পাওয়ার পর তিনি সিঙ্গেল পার্সন হিসেবে কাউন্সিল ট্যাক্স ডিসকাউন্টের জন্যে আবেদন করেন। আর এখানেই কাউন্সিলের সন্দেহের চোখে পড়েন তিনি। কারণ একই সময়ের ভেতরে তার নামে থাকা অন্য প্রোপার্টির জন্যে কাউন্সিল ট্যাক্স পরিশোধ করে আসছিলেন সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলী। এরপর কাউন্সিল তার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে। তদন্তে দেখা যায়, টাওয়ার হ্যামলেটসের ম্যানচেস্টার রোডে সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলীর মালিকানাধীন একটি ঘর আছে। এছাড়াও উত্তরাধিকারসূত্রে মায়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি ঘরের মালিকও তিনি। শেডওয়েল এলাকার কেনন স্ট্রিটে রাইট টু বাই-এর অধীনে ঘরটি কিনেছিলেন তার মা। প্রসঙ্গত, শাহেদ আলী ২০১০ সালের নির্বাচনে টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ভেতরে কাউন্সিল ফ্ল্যাটে বসবাস করলেও তার নামে থাকা আরও দুটি রেসিডেন্সিয়াল প্রোপার্টির মালিকানার বিষয়টি গোপন রাখেন তিনি। শুধু তাই নয়, কাউন্সিলের তদন্তে দেখা গেছে- এসেক্সের সমুদ্রতীরেও তার মালিকানাধীন আরও দুটি প্রোপার্টি রয়েছে। এরমধ্যে একটি প্রোপার্টির নিচতলায় একটি কারি-হাউসও রয়েছে। হাউজিং প্রতারণার দায়ে ২০১৬ সালে প্রায় এক মাস শুনানি শেষে আদালতে দোষ স্বীকার করার পর ৫ মাস জেল খাটেন তিনি। এসময় কাউন্সিলর হিসেবেও তাকে অযোগ্য ঘোষণা করে আদালত। এছাড়া পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্যে নির্বাচনে প্রার্থীতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। উল্লেখ্য, সাবেক কাউন্সিলর শাহেদ আলী ২০০৬ সালে প্রথম রেসপেক্ট পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2NI6qC4
July 12, 2018 at 09:03AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন