ঢাকা, ১৬ জুলাই- সবসময় আমি বাবাকে রান্না করে খাওয়াতাম। আমার হাতের রান্না তিনি খুব পছন্দ করতেন। বিশেষ করে আমার হাতের পোলাও, রোববার (১৫ জুলাই) বুলবুল আহমেদের তনয়া ঐন্দ্রিলা আহমেদ বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে এমনটাই বলেন। ২০১০ সালের ১৫ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি এই মহানায়ক। দেবদাসখ্যাত অভিনেতার চলে যাওয়ার ৮ বছর পূর্ণ হলো। বুলবুল আহমেদ রেখে যান স্ত্রী ডেইজি, দুই মেয়ে তিলোত্তমা ও ঐন্দ্রিলা এবং এক ছেলে শুভকে। বুলবুলের বড় ছেলে শুভ অস্ট্রেলিয়ার একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। বড় মেয়ে তিলোত্তমা আইনজীবী ও সবার ছোট ঐন্দ্রিলা অভিনয় করেন। বাবাকে হারালেও তার দেওয়া প্রতিটি উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন ঐন্দ্রিলা। প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, আমি সবসময় বাবার দেওয়া উপদেশ মেনে চলি। একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা তিনি আমাকে দিয়ে গেছেন। বাবা সবসময় বলতেন, সব ধরনের ঝামেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে, কারও সঙ্গে বিবাদে না জড়াতে। তাছাড়া জীবনে চলার জন্য অনেক দিক নির্দেশনা জীবিত অবস্থায় তিনি দিয়ে গেছেন। বাবা চলে যাওয়ার পর নিজেকে খুব একা মনে হয়। তাকে অনেক মিস করি। এমন একজন ভালো মানুষ এখন খুঁজে পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য, যোগ করে বলেন ঐন্দ্রিলা। মৃত্যু বার্ষিকীতে বুলবুল আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে বেশকিছু আয়োজন করা হয়েছে। দুইটি এতিম খানায় এতিমদের খাওয়ানো, মসজিদে দোয়া মাহফিল ও কোরআন খতমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুলবুল আহমেদের আসল নাম তবারুক হোসেন। বাবা-মা তাকে আদর করে ডাকতেন বুলবুল নামে। সে নামেই তিনি সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকার আগামসি লেনে তার জন্ম। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিক, নটর ডেম কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই তিনি জড়িত হন গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের পথিকৃৎ ড্রামা সার্কেলের সঙ্গে। ড্রামা সার্কেলের হয়ে মঞ্চে ইডিপাস ও আর্মস অ্যান্ড দ্য ম্যান নাটকে অভিনয় করেন। ১২ বছর প্রেম করার পর ১৯৬৫ সালে বিয়ে করেন নাট্যাভিনেত্রী ডেইজি আহমেদকে। বুলবুল আহমেদ মামাতো ভাই অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চুর মাধ্যমে ১৯৬৮ সালে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের ইয়ে করে বিয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় বুলবুল আহমেদের। চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে সূর্যস্নান, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা, রূপালী সৈকতে, জীবন নিয়ে জুয়া, সোহাগ, অতিথি, বধূবিদায়, দেবদাস, ওয়াদা, ভালোমানুষ, মহানায়ক, রাজলক্ষী-শ্রীকান্ত, শুভদা, শহর থেকে দূরে, অঙ্গার প্রভৃতি। বহু টিভি নাটকেও শিল্পী অভিনয় করেন। এর মধ্যে এইসব দিনরাত্রি, বরফগলা নদী, ইডিয়ট উল্লেখযোগ্য। সূত্র: বাংলানিউজ আর/০৭:১৪/১৬ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Jngr4d
July 16, 2018 at 04:07PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন