ঢাকা, ১৮ আগস্ট- তাদের ভাগ্যাকাশে জমে ওঠা কালো মেঘ কি তবে সরে যাচ্ছে? সৌম্য সরকার আর সাইফউদ্দিনের ক্যারিয়ারের সূর্য্য কি আবার উদিত হওয়ার পথে? বাঁ-হাতি ওপেনার সৌম্য আর পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন কি এশিয়া কাপ স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন? তাদের ভাগ্য আবার খুলবে কি খুলবে না, তা বদলে দেবে সময। তবে এখনকার খবর, আয়ারল্যান্ডের মাটিতে আইরিশ এ দলের বিপক্ষে সৌম্য সরকারের ব্যাটে রান দেখে খুশি ও সন্তুষ্ট প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। তার বিশ্বাস ও আস্থা, সৌম্য আবার ফিরে আসবে। শুধু সৌম্য নন। আয়ারল্যান্ডে এ দলের হয়ে ভাল খেলা পেসার সাইফউদ্দিন, মিডল অর্ডার মোহাম্মদ মিঠুন ও আল আমিন জুনিয়রের পারফরমেন্সেও বেশ সন্তুষ্ট প্রধান নির্বাচক। তার কথায় মনে হয়, এদের সবার প্রতিই তাদের দৃষ্টি আছে। ভাল খেলতে থাকলে তাদের জাতীয় দলে জায়গা পাবার সম্ভাবনা আছে যথেষ্টই। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ দিয়ে শুরু যাত্রা। তারপর ঘরের মাঠে প্রথমে পাকিস্তান, পরে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ব্যাট হাতে দারুণভাবে জ্বলে ওঠা। সেই ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৭৫ বলে (১৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কা) ৯০ রানের ম্যাচ উইনিং নক এবং ৭৯ বলে (১৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়) ৮৮ রানের আরও একটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে জয়ের নায়ক হয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন সৌম্য। কিন্তু এরপর শেষ ১৬ ম্যাচে (২০১৭ সালের ২৮ মার্চ ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট করার সুযোগ পাননি) ১৫ বার ব্যাট করে আর ম্যাচ সেরা হতে পারেননি। বরং দিনের পর দিন ব্যাটের ধার কমেছে। ওই ১৫ ইনিংসে দুটি মোটে হাফ সেঞ্চুরি। দুটিই গত বছর মে মাসে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে তিন জাতি ক্রিকেটে পরপর দুই ম্যাচে (১৭ মে ডাবলিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৭ বলে ৬১ ও ১৯ মে আয়ারল্যান্ডের সাথে ৬৮ বলে ৮৭) জোড়া হাফ সেঞ্চুরি। রীতিমত রান খরায় ভুগছেন তিনি। শেষ ছয় ওয়ানডে ইনিংস ০+২৮+৩+৩+০+৮ = মোটে ৪২ রান । হাফ সেঞ্চুরিশূন্য। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও একই অবস্থা। এবছর ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শেরে বাংলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে (৩২ বলে ৫১) পঞ্চাশের ঘরে পা রাখার পরের ১১ ম্যাচে (০+১৪+২৪+১+১০+১+৩+১৫+০+১৪+৫) কোন বড় ইনিংস নেই। রান সাকুল্যে ৮৭। সেই প্রায় রান করতে ভুলে যাওয়া সৌম্য এবার আয়াল্যান্ডের মাটিতে আইরিশ এ দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৫৭+১১+৪৭ = ১১৫ রান করে সিরিজ সেরা। এ বাঁহাতি টপ অর্ডারের রান ও ফর্মে ফেরা সম্পর্কে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর মূল্যায়ন, এটা গুড সাইন যে, সৌম্য ফর্মে ফিরে আসছে। আসলে ওর টেকনিক্যাল বিষয়টা দেখার ছিল। আমরাও তাকে ফর্মে ফেরানোর চেষ্টা করেছি। তাই জাতীয় দল থেকে কিছুদিন হাই পারফরমেন্স ইউনিটে কাজও করানো হয়েছে। আমার বিশ্বাস সে আবার ফিরে আসবে। সৌম্যর পাশাপাশি ভাগ্য খুলে যেতে পারে মিডিয়াম পেসার সাইফউদ্দিনেরও। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মাঝে সুযোগ পেয়েছিলেন এ তরুণ; কিন্তু সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে রান (১৬+৬+৮) মোটে ৩০। বল হাতে তিন ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। প্রথম দুই ম্যাচ; ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর কিম্বার্লিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ম্যাচে ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকার শেরে বাংলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ ওভারে ১৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। এ বছর, ২৭ জানুয়ারি শেরে বাংলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে (৪ ওভারে ১/১৫) ওয়ানডেতে প্রথম উইকেট পেয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও একই অবস্থা; ছয় ম্যাচে উইকেট মাত্র ৪টি। সেরা বোলিং ৪ ওভারে ২/৫৩, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পচেফস্ট্রমে ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর। ওই ম্যাচে শেষ ১৯ নম্বর ওভার বল করে প্রোটিয়া অলরাউন্ডার ডেভিড মিলারের হাতে পাঁচ ছক্কা হজমসহ ৩১ রান দিয়েই মূলতঃ টিম ম্যানেজমেন্ট ও ভক্তদের বিরাগভাজন হয়েছেন সাইফউদ্দিন। বাকি পাঁচ ম্যাচে আর একবার (২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৪ ওভারের বোলিং কোটা পূর্ণ করেও শেষ ওভারে ১৭ রান দিয়ে আবার সমালোচনার মুখে পড়েন। সে তুলনায় ব্যাট হাতে অল্প কিছু রান আছে। ছয় ম্যাচে চারবার (৬+৩৯*+২৩+২০) ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে করেছেন ৮৮ রান। সেই সাইফউদ্দিন এবার এ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড এ দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে তিন ম্যাচে (৪/২৮, ৩/৩৩, ২/২১) পেয়েছেন = ৯ উইকেট। ওয়ানডেতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজের একটি বৃষ্টিতে পন্ড। আর শেষ ম্যাচে উইকেট পাননি। তার আগের তিন ম্যাচে (২/৩৪, ২/৫৬, ২/৩৫) ৬ উইকেট। ব্যাট হাতে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ২৭ বলে ২৭ রানের মাঝারি ইনিংস। সাইফউদ্দিন একা নন, মোহাম্মদ মিঠুন ও তরুণ আল আমিন জুনিয়রের পারফরমেন্সও পাখির চোখে পরখ করেছেন নান্নু। জাগো নিউজের সাথে আলাপে তাদের সম্পর্কেও তার কন্ঠে ইতিবাচক মন্তব্য, সাইফউদ্দিন, মোহাম্মদ মিঠুন ও ছোট আল আমিনসহ আমরা কিছু প্লেয়ারকে ভবিষ্যত সম্ভাবনা ভেবে রেখেছি। যারা জাতীয় দলের পাইপ লাইনকে বড় করবে এবং নিজেদের আগামীর জন্য তৈরি করবে। আশার কথা, তারা আয়ারল্যান্ডে ভাল খেলেছে। আল-আমিন জুনিয়রের ওপর চোখ রয়েছে প্রধান নির্বাচনের। সে কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আল আমিন জুনিয়রের ওপর আমাদের চোখ আছে। আর মিঠুনতো আমাদের পুলের প্লেয়ার। কাজেই আমরা তাদের এ পারফরমেন্সকে মূল্যায়ন করবো এবং এ দলের ম্যাচ আরও বাড়ানো এবং দেশের বাইরে বেশি বেশি ম্যাচ খেলানো যায় কি না- সে চেস্টাই করবো। তাতে পাইপ লাইন সমৃদ্ধ হবে। আমাদের ব্যাকআপ পারফরমারের সংখ্যা বাড়বে। সূত্র: জাগোনিউজ২৪ আর/১০:১৪/১৮ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PmHKzY
August 19, 2018 at 04:51AM
18 Aug 2018

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top